Md Salim

থাকুক আইনের শাসন, ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক হোক বাংলাদেশ বললেন সেলিম

রাজ্য জেলা

অভীক ঘোষ- শ্রীরামপুর

সিপিআই(এম) হুগলি জেলা কমিটির উদ্যোগে প্রয়াত কমরেড সীতারাম ইয়েচুরি ও কমরেড বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে শুক্রবার। এদিন শ্রীরামপুর আরএমএস মাঠে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শুরুর আগে কমরেড সীতারাম ইয়েচুরি ও কমরেড বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর প্রকৃতিতে মাল্যদান করেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শ্রীদীপ ভট্টাচার্য, জেলা সম্পাদক দেবব্রত ঘোষ, মনোদীপ ঘোষ সহ জেলার অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। 
সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে মহম্মদ সেলিম বলেন, সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো বাংলাদেশ প্রসঙ্গে ইতিমধ্যেই বিবৃতি দিয়েছে। সেদেশের সংখ্যালঘু মানুষের নিরাপত্তা ও তাঁদের ধর্মস্থান রক্ষার আহ্বান জানিয়ে লাল ঝান্ডা মিছিল করছে। লাল ঝান্ডা ঐক্যের জন্য মিছিল করে। অন্য কোনও কোনও শক্তি মিছিল করে বিভাজনের উস্কানি দেয়। 
সেলিম বলেন, ধর্মের সাথে যেন রাজনীতিকে মিশিয়ে দেওয়া না হয়। উত্তর প্রদেশের সম্ভলে যা হয়েছে তা যেন বাংলায় না হয়। আর বাংলাদেশে যা হয়েছে তা যেন আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ভারতে না হয় তা আমরা চাই। ধর্মের সঙ্গে রাজনীতি মেশালে কী ক্ষতি হয় সেটা বাংলাদেশে দেখা যাচ্ছে। সেখানকার সংখ্যালঘু মানুষের উপর অত্যাচার হচ্ছে, তার প্রতিবাদ আমরা করছি, বামপন্থীরাও করছেন। সেলিম বলেন, বাংলাদেশে আইনের শাসন থাকুক, ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক হোক বাংলাদেশ।
ওয়াকফ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, কেন্দ্রের এই বিল আনার দরকার ছিল না। যখন দুর্নীতি চলছে, খাওয়ার জিনিসের দাম, বিদ্যুতের বিল বাড়ছে, সেই সময়েই, যারা ওয়াকফ প্রসঙ্গে কিছু জানেন না, তাঁরাও হৈচৈ করছেন। যখন ওয়াকফ বোর্ড তৈরি হয়নি, ওয়াকফ আইন আসেনি তখন এই হুগলী জেলায় হাজি মহম্মদ মহসিন নিজের সমস্ত টাকা-পয়সা সম্পত্তি ওয়াকফ করে দিয়ে গিয়েছিলেন। পরে সেগুলি বেদখল হয়ে যায়। বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে আমি সংখ্যালঘু উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী ছিলাম। তখন নতুন করে মতোয়ালী কাউন্সিল তৈরি করি। সেই কাউন্সিল এখন ওয়াকফ সম্পত্তি রক্ষা করছে।
সেলিম বলেন, সর্বত্র ওয়াকফ সম্পত্তি লুট হচ্ছে বিক্রি হচ্ছে। এখানে তৃণমূল অন্যত্র বিজেপি, যে যেখানে শাসনে আছে, তা করছে। গত বারো বছর ধরে যে সম্পত্তি লুট হচ্ছে সেটা আটকাচ্ছেন না মমতা ব্যানার্জি।  প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও কিছু করেননি। এখন মোদী বলছেন নতুন আইন নিয়ে আসব। দেশে চালু ১৯৯৫’র ওয়াকফ আইন যথেষ্ট। আইন প্রয়োগ করা হচ্ছে না। 
রাজ্যের অপরাজিতা বিল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যখন আরজি কর কাণ্ড হলো তখন মমতা ব্যানার্জি বলেছিলেন নতুন আইন নিয়ে আসব। একেবারে মোদীর লাইন! আমরা বলছি ঠিক মতো চালু আইন প্রয়োগ করুন। 
মেদিনীপুরের তৃণমূল প্রধানের টাকা নেওয়ার ভাইরাল ভিডিও প্রসঙ্গে সেলিম বলেন, তাকে যদি জিজ্ঞাসা করেন তৃণমূল করছেন কেন? তিনি বলবেন, টাকা রোজগার করার জন্য করছি। তিনি বলবেন যে আমি আগে টাকা খরচ করে প্রধান হয়েছি। তাই এখন টাকা রোজগার করছি। মমতা ব্যানার্জি তৃণমূল আর বিজেপি মিলে এই নতুন মডেল তৈরি করেছে। রাজনীতি করো আর করে খাও। শুধু ৭৫ শতাংশ পাঠিয়ে দাও কালীঘাটে, তা হলেই হবে। 
প্রাথমিক স্কুলে পড়ুয়ারা ভর্তি হচ্ছে না। এ প্রসঙ্গে মহম্মদ সেলিম বলেছেন, সরকার কালকেই বলবে আমি একটা নির্দেশিকা জারি করছি। রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকার আসলে জনশিক্ষা সেটা তুলে দিতে চাইছে। সরকারি সব কিছুই তুলে দিতে চাইছে। বলছে যে ফেল কড়ি মাখো তেল। দেশি-বিদেশি কোম্পানি দোকান খুলবে, সব বেসরকারি হাতে চলে যাবে, মুনাফা হবে। বিজেপি সরাসরি স্কুল বন্ধ করে দিচ্ছে। আর মমতা ব্যানার্জি দুর্নীতি করে নিয়োগ বন্ধ করে দিচ্ছে। স্কুলে যদি শিক্ষকরা না আসেন তাহলে ছাত্ররাই বা স্কুলে কেন যাবে। শিক্ষাকে তুলে দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আমরা শিক্ষা আন্দোলন করছি, বিকল্প শিক্ষার নীতি নিয়ে আন্দোলন করছি।

(দেখুন ভিডিও)

Comments :0

Login to leave a comment