জানা অজানা
কালাহারির সবচেয়ে অদ্ভূত প্রাণী
তপন কুমার বৈরাগ্য
নতুনপাতা
আফ্রিকা মহাদেশে অবস্থিত কালাহারি মরুভূমি ।দিনেরবেলায়
যেমন গরম রাতেরবেলায় তেমনি ঠান্ডা।এই মরুভূমিতে
বাস করে পৃথিবীর এক অদ্ভূত প্রাণী।যাদের সারা দেহ পুরু পশমের
মতন মোলায়েম লোমে ঢাকা থাকে।এই প্রাণীটার নাম মিরক্যাট।
এরা গর্তে বাস করে।আমাদের দেশের বেজির মতন অনেকটা
দেখতে। মুখটা অনেকটা বিড়ালের মতন।সামনের পা দুটো সরু এবং
ছোট। পিছনের পা দুটো মোটা এবং শেষের দিক সরু।এরা স্তন্যপায়ী
প্রাণী।একসাথে দু'তিনটে বাচ্চা হয়। বাচ্চারা তিনসপ্তাহ মতন
গর্তে থাকে।তারপর মা বাবার সাথে বাইরে আসে।মা বাবারাই
তাঁদের শিকার ধরতে শেখায়।এদের চারটে পায়েই ধারালো নখ
থাকে।এরা দু'ফুট মতন লম্বা হয়।এরা পিছনের পায়ে ভর দিয়ে
একেবারে সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারে।কোনো চতুষ্পদ প্রাণী এদের
মতন সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারে না।এদের চোখদুটো কালো কালো।
কানের দু'পাশে কালো দাগ থাকে।
এদের সবচেয়ে অদ্ভূত প্রাণী বলার কারণ। এরা চারপায়ে ভর দিয়ে
লাফিয়ে চলাচল করতে পারে, আবার দু'পায়ে ভর দিয়ে মানুষের
মতন হাঁটতে পারে।
এরা কৃত্রিম পরিবেশ অর্থাৎ চিড়িয়াখানায় পনেরো কুড়ি বছর
বাঁচলে ,বন্য পরিবেশে এরা দশ বারো বছর বাঁচে।
এরা সমাজবদ্ধ প্রাণী।একটা দলে চল্লিশ-পঞ্চাশটা করে মিরক্যাট
থাকে।
এদের কোনো বিষধর প্রাণী বা সাপে কামড়ালে এদের মৃত্যু হয় না।
এরা কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে নিজেদের উচ্চতার সমান গর্ত তৈরী
করতে পারে যা অন্য কোনো প্রাণী এতো দ্রুততার সঙ্গে এরকম
গর্ত নির্মাণ করতে পারে না।
এরা যখন দিনেরবেলায় শিকারে বের হয় তখন দলবদ্ধভাবে শিকারে
বের হয়।কিছু শিকার করে আবার কিছু তাদের পাহারায় থাকে।
এরা এমন প্রাণী কেউ আক্রান্ত হলে দলবদ্ধভাবে শত্রুকে আক্রমণ
করে তাদের সঙ্গিকে রক্ষা করে।
এরা পতঙ্গ খায়।তাছাড়া বিভিন্ন প্রাণীর ডিম ভেঙে খেতে ভালোবাসে।
ছোটছোট গাছপালার পাতা খেতেও ভালোবাসে।
এদের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব নিজেদের সন্তানদের স্বাবলম্বী করে গড়ে
তোলা।
এরা নিজেদের মধ্যে কখনো মারামারি করে না।বিপদে পরস্পর
পরস্পরের পাশে থাকে।
তাই তো জগতের এরা সবচেয়ে অদ্ভূত প্রাণী।
এদের কাছে মানুষের শিক্ষণীয় বিষয় বিপদের দিনে বন্ধু হয়ে
বন্ধুর পাশে থাকো।
Comments :0