High Court Nandigram

নন্দীগ্রামে হত্যার মামলা প্রত্যাহারে রাজ্যের কড়া সমালোচনা হাইকোর্টের

রাজ্য কলকাতা

বিচারপ্রক্রিয়া বাতিল তো নয়ই, বরং নন্দীগ্রামে বিক্ষোভের নামে হত্যায় নতুন করে তদন্তের নির্দেশ দিলো কলকাতা হাইকোর্ট।
২০০৭-২০০৯ পর্বে নন্দীগ্রামে অন্তত ১০ জনকে হত্যার পাশাপাশি বেআইনি অস্ত্র ব্যবহারের মামলা দায়ের হয়েছিল। তৃণমূল রাজ্যে সরকার গড়ার পর এই মামলা তুলে নিতে চায়। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা আদালত মামলা প্রত্যাহারের অনুমতিও দেয় রাজ্যকে। নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন জমা পড়ে কলকাতা হাইকোর্টে। 
বৃহস্পতিবার শুনানিতে রাজ্যের তৃণমূল সরকারের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে দুই বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ।
নন্দীগ্রামে মাওবাদী-তৃণমূল যৌথ বাহিনীর ব্যাপক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক স্তরে বিভিন্ন সময়েই সরব হয়েছে বামফ্রন্ট। জমিরক্ষার নাম করে সন্ত্রাস চালানো হয়েছিল বামপন্থী কর্মী সমর্থকদের ওপরই। সেই সময়ে নির্দিষ্ট অভিযোগে দায়ের মামলা তুলে নিতে তৎপর তৃণমূল সরকার।
এদিন শুনানিতে হাইকোর্ট বলেছে, এই এলাকায় সে সময়ে দশজনের বেশি মানুষকে খুন করা হয়েছে বিভিন্ন ঘটনায়। এমন ঘটনায় দায়ের ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহার উচিত তো নয়ই, কিছুতেই করা যায়ও না। 
উল্লেখ্য, এলাকায় শান্তি ফিরে আসার যুক্তি দেখিয়ে ফৌজদারি বিচার প্রক্রিয়ার ৩২১ ধারায় মামলা প্রত্যহারের আবেদন জানায় রাজ্য। 
হাইকোর্ট কড়া সুরে বলেছে, খুনীরা অবাধে ঘুরে বেড়ালে সমাজে শান্তি ও স্বাভাবিক অবস্থা থাকতে পারে না। এমন পরিস্থিতিতে তথাকথিত শান্তি ও সুস্থ অবস্থা আইনের দ্বারা পরিচালিত সমাজের মৌলিক কাঠামোর ক্ষতি করে। 
বিচারপতিরা বলেছেন, হিংসাকে সমূলে উৎপাটন করা যে কোনও রাষ্ট্রের লক্ষ্য হওয়া উচিত। গণতান্ত্রকি ব্যবস্থায়, ভোটের আগে বা পরে, কোনও ধরনের হিংসাকে এড়িয়ে যাওয়া যায় না। কোনও অপরাধকে বৈধতা দেওয়া বা তাকে রাজনৈতিক বিষয় দিয়ে আড়াল করা সহনীয় নয়। 
২০১১’র নির্বাচনে সরকারে আসীন হওয়ার পর তৃণমূল কংগ্রেস সরকার নন্দীগ্রাম বিক্ষোভের নামে হত্যার ঘটনায় দায়ের অভিযোগ তুলে নেয়। নিম্ন আদালতে অনুমোদনও দেওয়া হয়। এই প্রসঙ্গে হাইকোর্ট বলেছে, রাজ্যের ভূমিকা সমাজে ভুল বার্তা দেবে। মনে করা হতে পারে যে রাজনৈতিক হিংসাকে ক্ষমা করা হচ্ছে যেখানে সংবিধান অনুযায়ী সব ধরনের হিংসাকেই দমন করার কথা বলা হয়েছে সরকারকে। এরপরই অভিযুক্তদের ফের বিচারের নির্দেশ দেয় আদালত।

Comments :0

Login to leave a comment