নতুনপাতা : জানা অজানা
হাড় হজম করা প্রাণী
তপন কুমার বৈরাগ্য
নিজেদের আহার্য বস্তু খেয়ে সব প্রাণীরাই প্রায় হজম
করতে পারে।কিন্তু শক্ত শক্ত হাড় খেয়ে হজম করতে
পারে পৃথিবীর একটাই প্রাণী।তারা হচ্ছে ইউরেশিয় গৃধিনী
বা গ্রিফন শকুন।ইউরোপীয় গৃধিনী নামের কারণ এশিয়া
ও ইউরোপকে একসাথে ইউরেশিয়া বলে। এই দুটি মহাদেশের
কয়েকটি দেশে এদের দেখা যায় বলে এদের ইউরেশিয়
গৃধিনী বলে। পৃথিবীর অতি বিরাটাকার এই পাখি। এদের
ওজন ১০কেজি পর্যন্ত হতে পারে।খুব বড় ডানার অধিকারী।
এই পাখির দৈর্ঘ্য ১২৫ সেমি।পা বারো তেরো সেমি দৈর্ঘ্যের।
ঠোঁট ৮সেমি পর্যন্ত লম্বা হয়।লেজ ৮ সেমি পর্যন্ত লম্বা হয়।প্রাপ্ত
বয়স্ক শকুনের রঙ লালচে বাদামী।পুরুষদের চেয়ে মেয়েদের
আকৃতি একটু ছোট।পৃথিবীর মধ্যে এরাই আজ মহাবিপন্ন
প্রাণী।সারা পৃথিবীতে এই ধরনের শকুনের সংখ্যা একশোরও
কম।তাই এরা আজ লাল তালিকাভুক্ত প্রাণী। এরা বহু
উঁচুতে উড়তে পারে। এরা দুই কিলোমিটার উঁচু থেকেও
মাটিতে মৃত জীবজন্তু দেখতে পায়।তাই এদের পৃথিবীর
সবচেয়ে তীক্ষ্ণ দৃষ্টির অধিকারী পাখি বলে। এতো ভর
বিশিষ্ট পাখি এতো উঁচুতে উড়তে পারে ভাবলে আশ্চর্য
হতে হয়।সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় এরা কেজি কেজি
মৃত প্রাণীর হাড় খেয়ে সহজেই হজম করতে পারে।
এদের দেহে কোনো এনজাইম নেই।
১৯৭০---১৯৮০খ্রিস্টাব্দে পৃথিবীতে এদের সংখ্যা ছিলো
প্রায় দশলক্ষ।আজ দুহাজার চব্বিশ সালে এদের সংখ্যা
একশোরও কম।কেন এমনটি হলো। আজ গবাদি পশুর
উপর ডাইক্লোফেনাক ও কেটোপ্রোফেন জাতীয় ওষুধ
প্রয়োগ করা হয়।এই গবাদি পশু যখন মারা যায় তখন
এই মৃত প্রাণীর মাংস ও হাড় খায় এই গৃধিনীরা।
এদের মাংস ও হাড় খাওয়ার ফলে তিনমিনিটের মধ্যে এদের
কিডনি বিকল হয়ে যায়। তাই এদের বংশ দ্রুত ধ্বংসের
দিকে।এই ধরনের শকুন তুরস্ক, হাঙ্গেরী,বাংলাদেশে দেখা
যায়। যেভাবে এরা বিলুপ্তির পথে -তাতে অচিরেই এরা
পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাবে।আবার পৃথিবী থেকে
হারাতে বসেছি পৃথিবীর খুব বড় ডানার অতিকায়
পাখি শকুন।যার ঠোঁট সব পাখির চেয়ে তীক্ষ্ণ ।যে পৃথিবীর
একমাত্র হাড় ভক্ষণকারী পাখি।
Comments :0