Plantation worker

মানুষের পঞ্চায়েত তৈরি করতে দৃঢ় চা শ্রমিকরা

রাজ্য জেলা

দীপশুভ্র সান্যাল, জলপাইগুড়ি

এলাকায় রয়েছে জমা জলের সমস্যা। জমির পাট্টা, রাস্তাঘাটের সমস্যা। চা শ্রমিকের মজুরির সমস্যা। স্বাস্থ্য কেন্দ্র থাকলেও সেখানে ন্যূনতম পরিষেবা দিয়ে বাকিটা হাসপাতালে রেফার করার ঘটনাটা নিত্যদিনের। টিন লাইন, বইদার লাইনে রাস্তাঘাটের সমস্যা জলপাইগুড়ির শহরের প্রবেশদ্বার আসাম মোর থেকে মাত্র ১ কিলোমিটার দূরে
করলা নদীর পাড়ে সদর ব্লকের অরবিন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন করলা ভ্যালি চা বাগানে ঢোকার মুখেই চরকডাঙ্গি শ্রমিক লাইনের থেকে এবারে বামফ্রন্টের সিপিআই (এম) প্রার্থী কলেজ পড়ুয়া রুবিনা মুন্ডা। পঞ্চায়েত সমিতিতে এই আসনের প্রার্থী অনিতা মন্ডলকে সাথে নিয়ে বাড়ি বাড়ি প্রচার শুরু করলেন প্রার্থী রুবিনা মুন্ডা। 
কলেজ ছাত্রী। এই বুথের প্রার্থীর সমর্থনে প্রচারে অংশগ্রহণ করেন এসএফআই, ডিওয়াইএফআই এর নেতৃবৃন্দ ও কর্মীবাহিনী। জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের এই আসনের প্রার্থী হয়েছেন প্রাক্তন যুব নেতা বর্তমান কৃষক আন্দোলনের নেতৃত্ব পেশায় প্রাথমিক শিক্ষক বিশ্বজিৎ মহন্ত। ১০০ দিনের কাজের টাকা না পাওয়া, আবাস যোজনার ঘর গরীব মানুষকে না দিয়ে তৃণমূল নেতাদের পকেটস্থ করা এলাকায় গত পাঁচ বছরে রাস্তাঘাটের উন্নয়ন না হওয়া, নতুন তৈরি হওয়া কংক্রিটের রাস্তা দুবার বর্ষা যেতে না যেতেই ভেঙে পড়া, দুর্মূল্যের বাজারে সিআইটিইউর নেতৃত্বে দীর্ঘ আন্দোলন করার পরও চা শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধি না পাওয়া সহ বিভিন্ন বিষয় উঠে আসে প্রচারে। 
বাড়ি বাড়ি প্রচারে গিয়ে ঘরের মেয়ে হিসাবে ভালই সাড়া পাচ্ছেন রুবিনা।
বাগানের আরেকটি বুথে সিপিআই(এম)র হয়ে অরবিন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতের ওই আসনে প্রার্থী হয়েছেন অনিমা টোপ্পো। ২০১৮ পঞ্চায়েত নির্বাচনে করলাভ্যালি চা বাগানের এই দুটি বুথের মধ্যে একটিতেও প্রার্থী দিতে পারেনি সিপিআই(এম)। ভোটের দিন দুপুর থেকে ভোট লুট করে জিতেছিল শাসক দলের বাহিনী। কিন্তু চা বাগানের শ্রমিকদের কোন উন্নতি হয়নি। বিনিময়ে বামফ্রন্ট সরকারের সময় চালু থাকা চা শ্রমিকের রেশন, কোয়াটার, ছাতা, গামবুট, সহ চা বাগানে কাজ করা ও বসবাস করার জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা ম্যানেজমেন্ট না দিয়ে বঞ্চিত করছে চা শ্রমিকদের। 
তাই এবার বাগান থেকে দালাল তাড়াতে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে চা শ্রমিকরা বলে জানালেন প্রচারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করা এলাকার চা শ্রমিক গোবিন ওরাও। পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী উৎপলা মন্ডল জানান, "২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসকদলের মদতে এলাকায় ভয়-ভীতির বাতাবরণ তৈরি হয়েছিল। শ্রমিক পরিবারের সদস্যরা মন খুলে কথা বলতে পারতেন না। ভোট লুট করে জিতে আসা গ্রাম পঞ্চায়েত পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যরা এলাকায় দু একটি রাস্তাঘাট করলেও কাজ খুব নিম্নমানের। দুই বছর যেতে না যেতেই রাস্তাঘাটের চরম ভগ্ন দশা। বাম জমানায় তৈরি হওয়া সমস্ত রাস্তা সংস্কারের অভাবে খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। তাই পঞ্চায়েত থেকে চোর তাড়িয়ে মানুষের পঞ্চায়েত গড়ার লক্ষ্যে মানুষ আমাদের পাশে থাকবেন বলে আমরা আশাবাদী।" প্রচার চলাকালীন ফুটবল ময়দানে ফুটবল খেলায় অংশগ্রহণকারী কম বয়সী যুবক ও খেলা দেখতে আসা মানুষদের মধ্যে প্রচার করেন বামফ্রন্টের প্রার্থীরা প্রচারে যুব নেতা দেবব্রত ভৌমিক। তিনি বলেন, "আগে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে স্পোর্টস কোটায় খেলাধুলায় অংশগ্রহণকারীদের সরকারি চাকরি হত এখন চাকরি হয় অর্থের বিনিময়ে। এলাকার উন্নয়নমূলক কাজে কাট মানির ভাগ বসায় শাসক তৃণমূলের নেতারা।"
চা বাগানের এই বুথের সিপিআই (এম) প্রার্থী রুবিনা মুন্ডা। কলেজ পড়ুয়া কম বয়সী শিক্ষিত মেয়ে। ভোট প্রচারে ভালোই সাড়া পাচ্ছেন।

Comments :0

Login to leave a comment