Poland Argentina match

পোল্যান্ডকে সমীহ মেসিদের

খেলা

নক আউট নিশ্চিত করতে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বীর মুখে পড়ছে আর্জেন্টিনা। অন্তত তেমনই মনে করছেন আর্জেন্টিনার কোচ। শেষ অনুশীলনের আগে সাংবাদিক সম্মেলনে স্কালোনি বললেন, পোল্যান্ড খুব দ্রুত খেলে। সতর্ক থাকতে হবে। এদের অনেক ভালো খেলায়াড় আছে। ওরাও ম্যাচের মাঝখানে প্লেয়ার পালটাবে। পোল্যান্ড নিশ্চিতভাবেই আর্জেন্টিনার খেলার ধরন অনুযায়ী নিজেদের পালটে নেবে। আমি বলছি না ওরা আক্রমণে যাবে না, কিন্তু আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে খেলার সময়ে সকলেই খেলা পালটে নেয়। স্কালোনির স্পষ্ট ইঙ্গিত পোল্যান্ড রক্ষণে বেশি জোর দেবে। 
এই ম্যাচ জিততে মরিয়া হবে দু’দলই। পরের পর্বে পৌঁছানোর জন্য। এদিকে মেসি তো ওদিকে লেওয়ানডস্কি। কী হয়েছিল আগের ম্যাচে, ভুলে যেতে চান স্কালোনি। তাঁর বক্তব্য  কী ঘটেছিল তা ভুলতে না পারলে মুক্ত মনে খেলা যায় না। আমার দর্শনই হলো যা হয়েছে তা হয়েছে। স্লেট ফাঁকা। পরের ম্যাচই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা কেমন খেলব, সেটিই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদ্বন্দ্বী যে-ই হোক। আমরা আগেই বলেছিলাম এই গ্রুপ কঠিন। মেক্সিকোর বিরুদ্ধে জয় আমাদের মানসিকভাবে উদ্দীপ্ত করেছে। এখনও পর্যন্ত ক’টা দল শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছে? সব শেষ খেলায় নির্ধারিত হচ্ছে। আমাদেরও হবে। যদি শেষ ষেলোয় পৌঁছোই তবে সেই পর্বের ম্যাচই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হবে। 
স্কালোনি খুলে বলেননি দলে পরিবর্তন হবে কিনা। বরং বলেছেন, যেভাবে খেলা শুরু করেছিলাম সেভাবে খেলব। ম্যাচ গড়ালে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। মেক্সিকো ম্যাচের দ্বিতীয় এবং দুরন্ত গোল যার পা থেকে এসেছে সেই এঞ্জো ফার্নান্ডেজ প্রথম একাদশেই থাকবে কিনা, এই প্রশ্ন এসেছিল। স্কালোনি বলেন, সকলের মতো ওরও খেলার সম্ভাবনা আছে। আবার পরিবর্ত হিসাবে নামার সম্ভাবনাও রয়েছে। ফুটবলারকে দুই পরিস্থিতির জন্যই তৈরি থাকতে হয়। অনেক সময়ে ম্যাচের মাঝখানে নামাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তবে এখনও সিদ্ধান্ত নিইনি। 
তবে এদিন স্কালোনির একটি মন্তব্যেই সবচেয়ে বেশি চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ব্রাজিল নিয়ে প্রশ্ন আসায় স্কালোনির জবাব, ‘আমি দক্ষিণ আমেরিকার মানুষ। ব্রাজিল পরের পর্বে ওঠায় আমি খুশি। যদি আর্জেন্টিনা জিততে না পারে তাহলে আমি চাই ব্রাজিল কাপ জিতুক। কেউ কেউ অন্যরকম ভাবে, আমি তাদের সঙ্গে একমত নই’। ফুটবলে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী, সাধারণত এই ধরনের মন্তব্য আর্জেন্টিনার ফুটবল মহল থেকে আসে না। মেক্সিকো ম্যাচকে ঘিরে আর্জেন্টিনার মানুষ, বিশ্বকাপ দলের শ্বাসরোধী স্নায়ুচাপ নিয়েও স্কালোনির মন্তব্য নজর টেনেছে। তিনি বলেছিলেন, ‘ফুটবল ফুটবলই। এর মধ্যে যাবতীয় আবেগকে একত্রিত করার অর্থ নেই।’ যদিও আর্জেন্টিনার মানুষ ফুটবলকে জীবন-মরণের মর্যাদা দিয়ে থাকে। 
বুধবারই গ্রুপ পর্ব শেষ। কী হতে পারে এর পরে? স্কালোনির স্পষ্ট উত্তর, কোনও দলই অন্য দলের চেয়ে অনেক ভালো, এমন নয়। প্রথম ম্যাচ দেখে স্পেনকে তাই মনে হয়েছিল কিন্তু জার্মানির সঙ্গে ড্র করেছে। আসলে এইসব নির্ধারিত হবে ময়দানের বিশদে। আমরা নিজেরা এখনও নক আউটে পৌঁছোইনি। পরের পর্বে কোন দলকে চাইব, একথা বলার সময়ই আসেনি। 
কোচের মতো পোল্যান্ডকে সমীহ করছেন ডিফেন্ডার লিসান্দ্রো মার্টিনেজ। বিশেষ করে লেওয়ানডস্কিকে সামলানোর অনেকটা দায়িত্ব থাকবে তাঁরই। মার্টিনেজ খোলাখুলি বলেছেন, লেওয়ানডস্কিকে মার্ক করার জন্য সব সময়ে প্রস্তুত থাকতে হবে। ও খুব দ্রুত ওঠানামা করে, সব সময়ে ওর কাছে গোলের পরিস্থিতি থাকে। শেষ বাঁশি পর্যন্ত ওর জন্য সতর্ক থাকতে হবে। 
লেওয়ানডস্কি ২০১৮-তে কোনো গোল পাননি। এবারে মেক্সিকোর বিরুদ্ধে পেনাল্টিতে গোল পাননি। সৌদি আরবের বিরুদ্ধে গোল করেছেন। গোলের জন্য ক্ষুধার্ত স্ট্রাইকার ভয়ঙ্কর, মানছে আর্জোন্টিনা শিবির। 
মার্টিনেজ বলেছেন, এই ধরনের ম্যাচে একেকটা মূহূর্তে অনেক কিছু বদলে যায়। যেমন মেক্সিকোর ম্যাচে লিও’র গোলের মূহূর্ত। ম্যাচ বদলে গেল তখন। 
অগ্নিপরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে লিওনেল মেসিকে। একটি নয়, পরপর। এশীয় দলের কাছে আর্জেন্টিনা হেরেছে, মধ্য আমেরিকার দলকে হারিয়েছে, কিন্তু বুধবার পূর্ব ইউরোপের একটি দলের মুখোমুখি। 
পোল্যান্ডের কোচেরও মাথায় সেই মেসির চিন্তাই। মিচনিউইৎজ বলেছেন, ‘মেসি স্কির মতো একজনের পর আরেকজনকে ডজ করে বেরিয়ে যায়। কীভাবে ওকে আটকানো যায়, তা নিয়ে সকলেই ভাবে। মেসিকে আটকানোর কোনও ম্যাজিক ফরমুলা নেই। আমি বরং খুশি যে কাল কাছ থেকে মেসির সঙ্গে দেখা হবে। আমি ওর খেলা দেখতে বার্সেলোনায় যেতাম।’ তবে এই ম্যাচ যে মেসি বনাম লেওয়ানডস্কির লড়াইয়ের যে বেশি কিছু, তা জানিয়ে দিয়েছেন পোলিশ কোচ।
 

Comments :0

Login to leave a comment