BLO Sujan Chakrabarty

সময়সীমা এগতে অলিখিত নির্দেশ, বিএলও-দের চাপের জন্য কমিশন-রাজ্যকে দায়ী করছে সিপিআই(এম)

রাজ্য

ছবি সংগ্রহ থেকে।

বিএলও-দের নতুন নতুন ফরমান জারি করছে নির্বাচন কমিশন। প্রস্তুতি নেই সিইও দপ্তরের। আরেকদিকে রাজ্য সরকারও ডেটা এন্ট্রি-তে স্থায়ী কর্মী দিতে নারাজ। বিএলও-দের ওপর অস্বাভাবিক চাপের জন্য কমিশন এবং রাজ্য সরকার, দুই-ই দায়ী।


শনিবার কৃষ্ণনগরের চাপড়া বিএলও রিঙ্কু তরফদারের মৃত্যুতে এই মর্মে প্রতিক্রিয়া জানালেন সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটি সদস্য সুজন চক্রবর্তী।
রাজ্যে একাধিক বিএলও-র মৃত্যু এবং অসুস্থতার ঘটনা সামনে আসছে এসআইআর প্রক্রিয়ায়। রিঙ্কু তরফদার আত্মঘাতী হয়েছেন। তাঁর সুইসাইড নোটে নির্দিষ্ট করে নির্বাচন কমিশনকে দায়ী করা হয়েছে। 
বিভিন্ন এলাকায় বিএলও-রা কমিশনে প্রশিক্ষণ পর্বেই বিক্ষোভ জানিয়েছেন। গোড়ায় ফর্ম বিলি এবং জমা নেওয়ার কথা থাকলেও সিইও দপ্তর পরে ফর্ম আপলোড করার দায়িত্বও চাপিয়েছে। বহুক্ষেত্রে নেটওয়ার্কের সমস্যা হচ্ছে। বিএলও-দের ক্ষোভ, এআরও দপ্তরে সমস্যা জানালে কোনও প্রতিকার হচ্ছে না। কোনও কথা শুনতেই রাজি নয়। 
পশ্চিমবঙ্গ সহ ১২ রাজ্যে এসআইআর-র ফর্ম জমা নেওয়ার ঘোষিত সময়সীমা ৪ ডিসেম্বর। বিএলও-দের তার আগে, ২৮ তারিখের মধ্যে, আপলোড করার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। জানা যাচ্ছে, কোনও লিখিত নির্দেশ ছাড়াই এই চাপ দেওয়া হচ্ছে। কোথাও কোথাও ২৫ তারিখই ফর্ম জমা নিয়ে নিতে বলা হচ্ছে।
নদীয়ার চাপড়ায় বিএলও’র আত্মহত্যা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সুইসাইড নোটে তিনি লিখেছেন যে আর কাজের চাপ নেওয়া যাচ্ছে না। নির্বাচন কমিশনকে দায়ী করছেন এই বিএলও। 
চক্রবর্তী বলেন, নির্বাচন কমিশন যথাযথভাবে প্রস্তুত নয়। যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে না। প্রত্যেকদিন নতুন নতুন ফরমান জারি করছে। কাজের জন্য স্কুলের ছুটি নেই, বাড়তি কাজ চাপানো হচ্ছে। ডিজিটালি আপলোড করতে হবে বলা হয়েছে। কেন? কারণ রাজ্য সরকার ফর্ম আপলোড করার জন্য অতিরিক্ত স্থায়ী কর্মী নিয়োগের ব্যবস্থা করেনি। বড়ো অংশের বিএলও দাবি করছেন ফর্ম বিলি থেকে গোটা বিষয়টা একরকম হলেও বাড়তি চাপ ডিজিটাইজড করা। 
চক্রবর্তী বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন ও রাজ্য সরকার কেউই এর দায় অস্বীকার করতে পারবে না। মানুষ বিপদে পড়ছেন, বিএলও-রা সমস্যায় পড়ছেন, চিঁড়েচ্যাপ্টা হচ্ছেন নির্বাচন কমিশনের অপদার্থতার জন্য। রাজ্য সরকার যথাযথ ভূমিকা না নেওয়ায় সমস্যা জটিল হয়েছে।
সংবাদমাধ্যমের একাংশে বারবার প্রচার করা হচ্ছে একটি ফুটেজ, সীমান্তের ওপারে বাংলাদেশে কিছু মানুষের চলে যাওয়ার ছবি। বিজেপি-ও তা নিয়ে প্রচার চালাচ্ছে।
এই প্রসঙ্গে সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সীমান্তের কাছে একটি এলাকায় একাংশের চলে যাওয়ার ঘটনা দেখানো হচ্ছে। কিন্তু মনে রাখা দরকার পশ্চিমবঙ্গের ভোটদাতার সংখ্যার তুলনায় এই অংশ একেবারেই কম।’’
অনুপ্রবেশকে ধর্মীয় বিভাজনের আয়নায় দেখাচ্ছে বিজেপি। সে সম্পর্কে চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বাংলাদেশি মুসলমান তাড়ানো, রোহিঙ্গা তাড়ানো বলে বিজেপি যে প্রচার করছে তাতে বাংলাভাষি হিন্দু গরিব পিছিয়ে থাকা তফসিলি, মতুয়া মানুষও বিপন্ন হচ্ছেন। যে কোনো জায়গাতেই এরকম বহু মানুষ আছেন। ‘নাম কাটিয়ে দেব’, ‘বাদ দিয়ে দেব’ হুমকি দিয়ে সিএএ ফর্ম ভরতে চাপ দেওয়া হচ্ছে। আবার এই ফর্ম ভরলে বিপদ আরও বাড়বে। ২০১৯ থেকে ২০২৫ পর্যন্ত সিএএ ফর্ম পূরণ করে নাগরিকত্ব ক’জন পেয়েছেন? উত্তর দিক। এরা মানুষকে প্রতারিত করে, বিভ্রান্ত করছে মতুয়া সমাজকে। কিন্তু বিজেপি ধরা পড়ে গেছে।

Comments :0

Login to leave a comment