পড়ুয়াদের জানা উচিত সুপ্রিম কোর্ট বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনাকে জঘন্য অপরাধমূলক কাজ বলে অভিহিত করেছে। বাবরি মসজিদ নিয়ে এনসিইআরটির সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করে মঙ্গলবার একথা বলেছেন মিম প্রধান আসাউদ্দিন ওয়েসি।
এক্সহ্যান্ডেলে তিনি লিখেছেন, ‘‘এনসিইআরটি পাঠক্রমে বাবরি মসজিদকে তিন গম্বুজ কাঠামো বলে চিহ্নিত করেছে। সুপ্রিম কোর্টের রায়কে তারা ঐক্যমত্ত্বের উদাহরন বলেছে। আমাদের দেশের পড়ুয়াদের জানা উচিত দেশের শীর্ষ আদালত বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনাকে জঘন্য অপরাধমূলক কাজ বলে অভিহিত করেছেন।’’
ছিল বাবরি মসজিদের নাম। এখন নেই। বদলে লেখা হয়েছে ‘তিন গম্বুজের কাঠামো’। ছিল রাম জন্মভূমি আন্দোলনে জনসমর্থন সংগঠিত করতে এল কে আদবানির নেতৃত্বাধীন বিজেপি’র রথযাত্রা, বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলায় করসেবকদের প্রধান ভূমিকা, ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পরে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, সেই পর্বে বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিতে রাষ্ট্রপতির শাসন জারি এবং অযোধ্যার ঘটনা নিয়ে বিজেপি’র দুঃখ প্রকাশের কথাও। এখন সেই সব কিছুই নেই, সবই বাদ দেওয়া হয়েছে এনসিইঅআরটি’র দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পাঠ্যপুস্তকের সংশোধিত সংস্করণে। গত সপ্তাহেই এই সংশোধিত সংস্করণটি প্রকাশ করা হয়েছে।
১৯৮৬ সালের পরবর্তী সময়ের অযোধ্যা-কেন্দ্রিক রাজনৈতিক ইতিহাসের ভাষ্যকে তাৎপর্যপূর্ণভাবে বদলে ফেলা হয়েছে আগের সংস্করণ থেকে এই নতুন সংস্করণে। ফলাও করে লেখা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের ৫ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চের সেই রায়ের কথা, যে রায়ে রাম মন্দির নির্মাণের দরজা খুলে দেওয়া হয়েছিল মূলত হিন্দুদের বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে। স্পষ্টতই রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সংশোধিত সংস্করণের ভাষ্যের অভিমুখ ঠিক করা হয়েছে হিন্দুত্ববাদী রাজনীতিকে গৌরবান্বিত করার উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই। এনসিইআরটি’র ডিরেক্টর দীনেশ প্রসাদ সাকলানি অবশ্য বিদ্যালয় স্তরের পাঠ্যসূচিকে হিন্দুত্ববাদী অভিমুখ দেওয়ার বা তাকে গৈরিক বসন পরানোর কথা মানতে চাননি। তাঁর বক্তব্য, এই পরিবর্তন নিয়ে হইচই করা অপ্রাসঙ্গিক। ইতিবাচক মনোভাবের নাগরিক তৈরি করার লক্ষ্যেই এই পরিবর্তন আনা হয়েছে। সাম্প্রদায়িক হিংসার কথা জেনে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বড় হওয়ার দরকার নেই। উল্লেখ্য, এনসিইআরটি বা ন্যাশনাল কাউন্সিল অব এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং হলো কেন্দ্রীয় সরকারের শিক্ষা মন্ত্রক পরিচালিত একটি স্বশাসিত সংস্থা, যেটি দেশের বিদ্যালয় স্তরের বিষয়ভিত্তিক পাঠ্যসূচি বা সিলেবাস ঠিক করে বিভিন্ন শ্রেণির জন্য। সিবিএসই এই পাঠ্যসূচিই অনুসরণ করে, কোনও কোনও বিষয়ে তা অনুসরণ করে সিআইএসসিই-ও।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানের দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকের এই সংশোধিত সংস্করণে অযোধ্যার ঘটনাবলির অংশটিকে আগের সংস্করণের চার পৃষ্ঠা থেকে কমিয়ে আনা হয়েছে দুই পৃষ্ঠায়। এই বইয়ে অযোধ্যার বাবরি মসজিদ ধ্বংসের প্রসঙ্গটিকে পুরোপুরি মুছেই ফেলা হয়েছে। তার জায়গায় নিয়ে আসা হয়েছে অযোধ্যার নবনির্মিত রাম মন্দিরের কথাকে।
Owaisi
এনসিইআরটির পদক্ষেপের সমালোচনায় ওয়েসি
×
Comments :0