Tea workers

শুক্রবার শিলিগুড়ি মহকুমা শাসকের দপ্তর অভিযান চা শ্রমিকদের

জেলা

মঙ্গলবার শিলিগুড়ির হিলকার্ট রোডে সিআইটিইউ'র জেলা দপ্তরে সাংবাদিক বৈঠক। ছবি রাজু ভট্টাচার্য

বাগিচা শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি প্রদান, তাদের জমির অধিকার ও পাট্টা সুনিশ্চিত করা, ২০১৫ সাল থেকে চালু এক্সট্রা লিফ প্রাইস বাড়ানো, অবসরের বয়স সীমা বৃদ্ধি সহ নানা দাবিতে আগামী ২৫ এপ্রিল এসডিও অফিস অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে। চিয়াকামান মজদুর ইউনিয়ন দার্জিলিঙ জেলা কমিটির পক্ষ থেকে ওই দিন দুপুর ২টায় শিলিগুড়িতে মহকুমা শাসকের দপ্তর অভিযান করা হবে। মঙ্গলবার দুপুরে হিলকার্ট রোডে সিআইটিইউ দপ্তরে সংগঠনের দার্জিলিঙ জেলা কমিটির পক্ষ থেকে সাংবাদিক বৈঠকে একথা জানান নেতৃবৃন্দ। নেতৃবৃন্দ বলেন, মহকুমা শাসকের দপ্তর অভিযান করে এসডিও’র হাতে স্মারকলিপি তুলে দেওয়া হবে। অভিযানকে কেন্দ্র করে ২৩ এপ্রিল সমস্ত চা বাগানের গেটে এক ঘন্টা করে সভা ও ধর্না হবে ২৫ তারিখের কর্মসূচিকে সর্বস্তরের মানুষের সামনে প্রচারের আলোয় নিয়ে আসার লক্ষ্যে। বাগিচা শ্রমিকদের সুনির্দিষ্ট দাবি ২০২৫ সালের মধ্যে ন্যূনতম মজুরি কার্যকর করতেই হবে। দাবিদাওয়া প্রসঙ্গে সরকার কোন সদুত্তর দিতে না পারলে আগামী দিনে আরও বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। কর্মসূচিতে যোগদানের জন্য অন্যান্য গণ সংগঠনকেও আহ্বান জানানো হবে। 
চিয়াকামান মজদুর ইউনিয়ন দার্জিলিঙ জেলা সভাপতি সমন পাঠক ও সম্পাদক গৌতম ঘোষ এদিন বলেন, অর্থনীতির দিক থেকে পিছিয়ে থাকা আদিবাসী, নেপালি ও বিভিন্ন জনজাতির মানুষ চা শিল্পের সাথে যুক্ত। কিন্তু এদের উন্নয়নে রাজ্য ও কেন্দ্র কোন সরকারই কাজ করছে না। চা শিল্পের সাথে যুক্ত বড় অংশের মানুষের দাবি দাওয়া দীর্ঘ দিন ধরে অবহেলিত। ২০১৪ সালের পর থেকে ন্যূনতম মজুরির দাবিতে লাগাতার আন্দোলনের জেরে সরকার বাধ্য হয়ে অ্যাডভাইসরি কমিটি গঠন করে। কিন্তু ১৯/২০ বার অ্যাডভাইসরি কমিটির মিটিং হবার পরেও রাজ্য সরকার অনমনীয় মনোভাবের পরিচয় দিয়েছে। বারংবার অজুহাত দেখিয়ে ন্যূনতম মজুরি কার্যকর করা হচ্ছে না। সংগঠিত ক্ষেত্রে চা শ্রমিকদের জন্য একেবারে সর্বনিম্ন ন্যূনতম মজুরিও এই সরকার দিতে রাজি নন। সর্বশেষ শ্রমমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সার্কিট হাউজে অনুষ্ঠিত বৈঠকেও এবিষয়ে কোন সুরাহা করা হয়নি। দ্রুত চা শ্রমিকদের স্বার্থে ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করতে হবে সরকারকে। অন্যদিকে কেন্দ্রের সরকার পরিচালিত টি বোর্ডও উদাসীন। একই সঙ্গে চা শিল্পের উন্নয়নের জন্য টি বোর্ডকে অগ্রনী ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে। চা প্যাকেজের নামে কেন্দ্রের সরকারের ভাঁওতাবাজি শ্রমিকদের কাছে আজ স্পষ্ট হয়ে গেছে। বর্তমান মূল্যবৃদ্ধির জমানায় ন্যূনতম মজুরি ছাড়া চা শিল্পের শ্রমিকদের বাঁচানো যাবে না। রাজ্য ও চা বাগান ছেড়ে দিয়ে ভিন রাজ্যে পরিযায়ী হয়ে যাওয়া চা শ্রমিকদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। কর্পোরেট পুঁজিপতিদের হাতে চা বাগানের জমি তুলে দেবার চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে সরকার। সরকারের সেই কৌশল কোনভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। সার্ভে করতে হলে সার্ভে হোক। অবিলম্বে চা শ্রমিকদের যারা যেখানে বসবাস করছেন সেই জমির অধিকার দিতে হবে। চা শিল্পের শ্রমিকদের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। দেওয়াল ভেঙে দেবার সময় এসেছে। এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চা বাগানের মহিলা নেত্রী সুষমা লাকড়া ও ভবেন্দু আচার্য্য। 

Comments :0

Login to leave a comment