চিন্ময় কর
১৯৮৯ সালে সাঁতরে ইংলিশ চ্যানেল পার করেছিলেন হুগলীর কন্যা বুলা চৌধুরী। তিনি পথ দেখিয়েছিলেন, পরবর্তী প্রজন্মকে সাহস ও দিশা দেখিয়েছিলেন। ২৯ জুলাই মঙ্গলবার রাত ৯টা ৩১ মিনিটে (ভারতীয় সময়) ইতিহাস তৈরি করলেন মেদিনীপুরের কন্যা আফরিন জাবি। তিনি সাঁতরে ইংলিশ চ্যানেল পার করেন। তাঁর সাফল্যে উচ্ছ্বসিত মেদিনীপুর বাসী।
আফরিনকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সুইমিং অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শান্তনু ঘোষ। তিনি বলেন, ‘অত্যন্ত গর্বের মুহূর্ত। ওঁর ইংলিশ চ্যানেল পার করতে সময় লেগেছে ১৩ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট।’
একুশ বছরের আফরিন মেদিনীপুর শহরের বাসিন্দা। বর্তমানে মেদিনীপুর কলেজের সমাজবিজ্ঞানের ছাত্রী। ছোটবেলা থেকেই তিনি মেদিনীপুর সুইমিং ক্লাবে সাঁতারের প্রশিক্ষণ নেন। সাঁতারু হিসেবে তাঁর ঝুলিতে রয়েছে একাধিক সাফল্য। ‘ইংলিশ চ্যানেল’-কে পাখির চোখ করে দীর্ঘদিন ধরেই অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন এই তরুণী। অবশেষে তিনি পেলেন সাফল্য।
শান্তনু ঘোষ জানান, মঙ্গলবার ভারতীয় সময়ে সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে আফরিন ইংল্যান্ডের ডোভার থেকে যাত্রা শুরু করেন। ডোভার থেকে উত্তর ফ্রান্সের ক্যাপ-গ্রিস-নেজ় পর্যন্ত প্রায় ৩৪ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করতে আফরিনের সময় লেগেছে প্রায় ১৩ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট। তাঁর এই সাফল্যে খুশি শান্তনু।
উল্লেখ্য, গত ৯ জুলাই ইউরোপ পাড়ি দেন আফরিন। মেদিনীপুর শহর থেকে দিল্লি হয়ে এই যাত্রার আগে মেদিনীপুর সুইমিং ক্লাব কর্তৃপক্ষ ক্লাব প্রাঙ্গণে একটি ঘরোয়া অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাকে সংবর্ধনা জ্ঞাপন করা হয়, জেলা সুইমিং এসোসিয়েশন, জেলা স্পোর্টস ডেভেলপমেন্ট অ্যাকাডেমি, মেদিনীপুর লায়ন্স ক্লাবের পক্ষ থেকে। স্পোর্টস ডেভেলপমেন্টের অ্যাকাডেমির সম্মাননা সভায় উপস্থিত ছিলেন অ্যাকাডেমির চেয়ারম্যান বর্ষীয়ান ক্রীড়াপ্রেমী দীপক সরকার সহ অন্যান্যরা।
২৮ জুলাই সোমবার আফরিনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। এর পরে মঙ্গলবারই তিনি আটলান্টিক মহাসাগরের কনকনে ঠান্ডা জলে ঝাঁপ দেন। মেয়ের সাফল্যের পরে চোখে জল বাবা শেখ পিয়ার আলির। তিনি বলেন, ‘‘জলের তাপমাত্রা ছিল ১১ ডিগ্রি। লক্ষ্যে পৌঁছনোর পরে সামান্য অসুস্থ হয়ে পড়েন আফরিন। তবে সঙ্গে সঙ্গেই বোটে থাকা চিকিৎসকরা তাঁর দেখভাল করেন। এখন ও সম্পূর্ণ সুস্থ।’’
Comments :0