‘কেন পহেলগামের ঘটনা ঘটলো, কি ভাবে সন্ত্রাসবাদীরা সেখানে প্রবেশ করলো সেই নিয়ে তো একটা কথাও সরকারের কাছ থেকে এই বিতর্কে জানতে পারলাম না।’ কেন্দ্রকে নিশানা করে অপারেশন সিঁদুরে নিয়ে আলোচনায় বললেন কংগ্রেস সাংসদ প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। কংগ্রেস সাংসদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নিজে বার বার বলেছেন কাশ্মীরে যান সেখানে জমি কিনে থাকুন। দেশের মানুষ সেখানে গিয়েছিলেন। ২২ এপ্রিল পর্যটকরা গিয়েছিলেন। সেখানে তারা সব কিছু উপভোগ করছিলেন। শুভম বলে একজন যুবক ছিলেন সেখানে পরিবার নিয়ে গিয়েছিলেন। স্ত্রীর চোখের সামনে তাকে খুন করা হয়। দীর্ঘ সময় ধরে ২৬ জন মানুষকে হত্যা করা হয়। পরিবারের লোকেদের সামনে সেই ঘটনা ঘটে। অসহায় ভাবে মানুষজন তখন তাদের বাঁচানোর চেষ্টা করছিল।’
কংগ্রেস সাংসদ নিরাপত্তার গাফিলতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, তিনি বলেন, সেই সময় যখন এই ঘটনা ঘটছে তখন একজনও নিরাপত্তা বাহিনী ছিল না। নিহতদের পরিবার এই কথা বলছে। প্রিয়াঙ্কা বলেন, সরকার কি জানতেন না যে কোন যে কোন বিপদ ঘটতে পারে? সরকারের ওপর ভরসা করে মানুষ সেখানে গিয়েছিলেন। দেশের মানুষের নিরাপত্তার দায়িত্ব সরকারের।
কংগ্রেস সাংসদ নিহতদের নাম পাঠ করেন সংসদে সেই সময় বিজেপি সাংসদরা বলতে থাকেন এরা সবাই হিন্দু। পাল্টা প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘এই সব মানুষ গুলোর একটাই পরিচয় তারা ভারতীয়।’
অমিত শাহকে নিশানা করে বলেন, ‘পহেলগাম ঘটনার কয়েকদিন আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সেখানে গিয়েছিলেন বললেন কোন সন্ত্রাসবাদ নেই।’ প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘টিআরএফ এই ঘটনার দায় নিয়েছে। তারা ২০২০ সাল থেকে কাশ্মীরে প্রায় ২৫টি সন্ত্রাসবাদী হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। অমিত শাহ ইউপিএ সরকারকে নিশানা করছেন কিন্তু এই নিয়ে কোন কথা বলছে না। ২০২৩ সালে টিআরএফকে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন বলে চিহ্নিত করে ভারত সরকার, কেন তিন বছর সময় লাগলো সরকারের?’
কংগ্রেস সাংসদ অভিযোগ করেন এই হামলা ভারতের গুপ্তচর সংস্থার ব্যার্থতা। এই ব্যার্থতার দায় কে নেবে, তা নিয়েও তিনি প্রশ্ন তোলেন। মু্ম্বাই হামলার প্রসঙ্গ টেনে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বলেন, ‘সেই সময় মহারাষ্ট্র মুখ্যমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদত্যাগ করেছিলেন। যারা হামলা করেছিল তাদের সেখানেই হত্যা করা হয়েছিল একজনকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল। এই সরকারের সময় পুলওয়ালা, মণিপুর, উড়ি, দিল্লিতে সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা ঘটেছে কিন্তু কেউ কোন দায় নেয়নি।’ তিনি বলেন, ‘অপারেশন সিঁদুরকে সবাই সমর্থন করেছে। দেশের ওপর ফের কোন হামলা হলে সবাই সরকারের পাশে থাকবে। দেশের ইতিহাসের এই প্রথম মার্কিন হস্তক্ষেপে দুই দেশের সামরিক সংঘাত বন্ধ হচ্ছে এটা ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ব্যার্থতা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন পাকিস্তানের কাছে কোন সুযোগ ছিল না আত্মসম্পর্ন করা ছাড়া, কেন তাদের সুযোগ দেওয়া হলো, কেন যুদ্ধ থামলো সেই নিয়ে একটা কথাও বললেন না কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।’
ইন্দিরা গান্ধীর সময়ের ভারতের কুটনীতির প্রসঙ্গ টেনে প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘‘ইন্দিরা গান্ধী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গিয়ে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছেন। অপারেশন সিঁদুরের মাধ্যমে যদি পাকিস্তানকে বার্তা দিতে চেয়েছিল সরকার সেটা হয়নি। আমাদের কুটনৈতিক ব্যার্থতা যে পাকিস্তানের সেনা প্রধান মার্কিন রাষ্ট্রপতির সাথে বৈঠক করছে, নৈশ ভোজ করছেন।’’
Operation Sindoor debate
পহেলগামে সেদিন পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে পারেনি সরকার, ঘটনার দায় কেন্দ্রকে নিতে হবে : প্রিয়াঙ্কা গান্ধী

×
Comments :0