Weather Report

পারদ নামল পাহাড় ও সমতলে

রাজ্য


ডিসেম্বর মাসের প্রথম দিনে তাপমাত্রার পারদ অনেকটাই নামলো পাহাড় ও সমতলে। পাশাপাশি উত্তরের বিভিন্ন জেলাতেও ঠান্ডার আমেজ। চলতি বছরের শীতের আমেজ অনুভূত হলো শুক্রবার। মেঘ আর কুয়াশায় মোড়া ছিলো এদিন দার্জিলিঙ পাহাড় ও পাহাড় লাগোয়া সমতলের শিলিগুড়ির আবহাওয়া। গত রাত থেকেই শহর শিলিগুড়িতে ঠান্ডার ছোঁয়া। তাপমাত্রার পারদ একলাফে অনেকটাই নেমেছে। এদিন শিলিগুড়ি শহর ও পার্শ্ববর্তী এলাকা সকাল থেকেই মেঘে ঢাকা ছিলো। সকাল থেকেই ছিলো আকাশের মুখ ভার। রোদের মুখ দেখা যায়নি। অন্যদিকে দার্জিলিঙ পাহাড়ের কোথাও কুয়াশার চাদরে ঢেকেছিলো আবার কোথাও ঝলমলে মনোরম আবহাওয়া। 
উৎসবের মরশুমে বেশ কিছুদিন সমতলের শহর শিলিগুড়ির বাসিন্দাদের ঘুম ভেঙেছিলো কাঞ্চনজঙ্ঘা দর্শনে। সমতলের বিভিন্ন প্রান্ত সহ দার্জিলিঙ, কার্শিয়াঙ, কালিম্পঙ, মিরিকের ভিউ পয়েন্টগুলি থেকে শ্বেতশুভ্র কাঞ্চনজঙ্ঘা দৃশ্যমান হয়েছে। এমনকি ডুয়ার্সের বিভিন্ন এলাকা থেকেও কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা গেছে। যা নজর কেড়েছিলো শহরবাসী তথা দেশ বিদেশের পর্যটকদের। ঘুমন্ত বুদ্ধের দর্শন পেয়ে বেড়াতে আসা পর্যটকরাও যথেষ্ট খুশি হয়েছিলেন। তবে এদিন আবহাওয়া পরিবর্তনের জেরে ঘন কুয়াশার আড়ালে কাঞ্চনজঙ্ঘা অদৃশ্য ছিলো। কালিম্পঙ, পাহাড় লাগোয়া সমতলের শিলিগুড়ি ও ডুয়ার্সের ভিউ পয়েন্টগুলি থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘাকে দেখা যায়নি। বেলা বাড়লেও আবহাওয়ার সেইরকম কোন পরিবর্তন হয়নি। 
তবে এদিন শৈলশহর দার্জিলিঙে আকাশের মেঘের চাদর সরিয়ে দিয়ে কিছু সময়ের জন্য উঁকি দিয়েছিলো কাঞ্চনজঙ্ঘা। দার্জিলিঙে বেড়াতে আসা পর্যটকরা কাঞ্চনজঙ্ঘার সেই অপূর্ব রূপ দর্শন করতে পেরে বেজায় খুশি। দার্জিলিঙ ম্যালেও পর্যটকদের ভিড় ছিলো। এই সময়ে মনমুগ্ধ করা কাঞ্চনজঙ্ঘা দর্শন আর মনোরম পাহাড়ী আবহাওয়ায় বেড়াতে যেতে পাহাড়মুখো হচ্ছেন পর্যটকরা। সামনেই বড়দিনের উৎসব। এবছর ২৫ডিসেম্বর পর্যটকদের জমজমাট ভিড়ে ভাসবে দার্জিলিঙ পাহাড় আশাবাদী পর্যটন ব্যবসায়ীরা। পাহাড়ের সমস্ত হোটেল, হোমস্টেগুলির বুকিং প্রায় সাড়া হয়ে গেছে। দার্জিলিঙের তাপমাত্রা এদিন ছিলো প্রায় ৯ থেকে ১০ডিগ্রির কাছাকাছি। কালিম্পঙ সহ পাহাড়ী এলাকাগুলিতে তাপমাত্রা গত কয়েকদিনের চাইতে অনেক কমেছে।  
দক্ষিণ আন্দামান এবং দক্ষিণ পূর্ব বঙ্গোপসাগরে বুধবার সকালে যে ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছিল। শুক্রবার দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে ঘনীভূত হয়েছে গভীর নিম্নচাপ। সুস্পষ্ট নিম্নচাপ অবস্থান করছে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে ও সংলগ্ন অঞ্চলে। নিম্নচাপ ক্রমশই পশ্চিম এবং উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
রবিবার বঙ্গোপসাগরেই ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে এই নিম্নচাপ। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিতে চলেছে। তবে ঘূর্ণিঝড় কোথায় আছড়ে পড়বে তা নিয়ে এখনই  পষ্ট জানাতে না পারলেও আগামী শনিবার এই বিষয়ে জানাবে বলে জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। আবহাওয়াবিদের মতে ১ ডিসেম্বর এই ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের উৎপত্তি হবে বলে মনে করছেন। যার অভিমুখ হবে উত্তর এবং উত্তর পশ্চিম বঙ্গোপসাগর। এই শক্তিশালী ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাব বঙ্গোপসাগরের উপকূলবর্তী রাজ্যগুলিতে বজায় থাকার সম্ভাবনা। ৫ ডিসেম্বর আছড়ে পড়তে পারে উত্তর অন্ধ্র প্রদেশ এবং দক্ষিণ ওডিশার মধ্যবর্তী উপকূলে। অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হিসেবে আছড়ে পড়তে পারে মিগজাউম আশঙ্কা করছেন আবহাওয়াবিদরা। ইতিমধ্যেই মৎস্যজীবীদেরও সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।  

Comments :0

Login to leave a comment