জলপাইগুড়ি ৩১নম্বর জাতীয় সড়কে পথ দুর্ঘটনায় এক পথচারির মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে শিলিগুড়ি সংলগ্ন ফুলবাড়ি এলাকায়। জানা গেছে, মৃত মহিলার নাম করুনা শর্মা(৩৫)। শিলিগুড়ি প্রধাননগর এলাকার বাসিন্দা। এদিন শিলিগুড়ি সংলগ্ন ফুলবাড়ি জটিয়াকালি এলাকায় এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। গ্যাসের ১৪ চাকার একটি ট্যাঙ্কারের ধাক্কায় মহিলার মৃত্যুর ঘটনার পর স্থানীয়দের বিক্ষোভে রণক্ষেত্র পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় ফুলবাড়ি এলাকায়।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এদিন সকালে শিলিগুড়ি চম্পাসারি এলাকার দুই মহিলা একটি স্কুটিতে চেপে ক্যান্সার আক্রান্ত এক রোগীকে দেখতে জটিয়াকালির দিকে যাচ্ছিলেন। ফুলবাড়ি হাইস্কুলের সামনে দুই মহিলা স্কুটি নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। সেই সময় পেছন দিক থেকে আসা গ্যাসের ট্যাঙ্কার স্কুটিটিকে সজোরে ধাক্কা মারে। ট্যাঙ্কারের ধাক্কায় স্কুটি থেকে ছিটকে রাস্তায় পড়ে যান দুই মহিলা। সেই সময় ট্যাঙ্কারের চাকায় পিষ্ট হন স্কুটির পেছনে বসে থাকা মহিলা। ট্যাঙ্কারের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান করুনা শর্মা। এরপরেই ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পথ অবরোধ করে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ প্রায় এই এলাকায় দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে। কিন্তু এলাকায় ট্রাফিক পুলিশের পক্ষে কোন কড়া নজরদারির ব্যবস্থা নেই। এই অভিযোগ তুলে ট্রাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিক্ষোভকারীরা। জনতার ক্ষোভ থেকে বাঁচতে এক ট্রাফিক পুলিশ স্থানীয় স্কুলে আশ্রয় নেয়।
পরবর্তীতে বিক্ষোভের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় নিউ জলপাইগুড়ি থানার বিরাট পুলিশ বাহিনী। পুলিশ লাঠি চালায় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে। মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়। আহত মহিলাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়।
পথ দুর্ঘটনা ও দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ ও পুলিশের লাঠিচার্জের জেরে বেশ কিছু সময় ৩১নম্বর জাতীয় বন্ধ ছিলো। ফলে বেশ কিছু সময় যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। ঘাতক গ্যাসের ট্যাঙ্কারটিকে আটক করে গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে নিউ জলপাইগুড়ি থানার পুলিশ।
সিকিমে পর্যটকদের গাড়িতে গাছ পড়ে জখম কলকাতার চার কলেজ পড়ুয়া
১০ নম্বর জাতীয় সড়কে পর্যটক বোঝাই গাড়ির ওপর আচমকাই একটি বড় গাছ ভেঙে পড়ার ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনায় আহত হয়েছেন কলকাতার চার কলেজ পড়ুয়া পর্যটক ও গাড়ির চালক। আহত কলকাতার কলেজ পড়ুয়াদের মধ্যে তিনজন মেয়ে ও একজন ছেলে। মঙ্গলবার বাংলা—সিকিম সীমানার চিত্রে এলাকায় এই দুর্ঘটনাটি ঘটে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সকালের দিকে সিকিমের পেলিং থেকে রওনা দিয়ে শিলিগুড়ির দিকে ফিরছিলো পর্যটক বোঝাই চারচাকা গাড়িটি। গাড়িতে মোট আটজন পর্যটক ছিলেন। গাড়িতে ছিলেন কলেজ পড়ুয়া পর্যটক শান্তি দে, সাথী মন্ডল, টুনাই বারিক, অরিজিতা রায়, শ্রেষ্ঠা পাল, মন্টু ঘোড়ুই, অর্ঘ্য ভট্টাচার্য, শুভদীপ মন্ডল। কলকাতার নেতাজী মহাবিদ্যালয় থেকে পড়ুয়াদের দলটি এক্সকারশানে বেরিয়েছিলো। এক্সকারশান শেষে শিলিগুড়ি ফেরার পথে চিত্রের কাছে পর্যটক বোঝাই গাড়িটি নামার সময় জাতীয় সড়কে ঘটে এই বিপত্তি। পর্যটকদের গাড়ির ওপর বিশালাকার একটি গাছ ভেঙে পড়ে। হঠাৎ করে গাছটি গাড়ির ওপর ভেঙে পড়ায় গাছের নীচে চাপা পড়ে যায় গোটা গাড়িটি। অল্পের জন্য প্রানে বাঁচেন গাড়ির চালক ও গাড়ির একেবারে সামনের সিটে বসা পর্যটকরা। ঘটনায় গুরুতর জখম হয়েছেন গাড়ির চালক সরোজ তামাঙ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কোন ঝড়ো হাওয়া বা আবহাওয়ার কোন বিরূপতা ছিলো না। তবুও আচমকাই গাছটি ভেঙে পড়ে। দুর্ঘটনার পরেই স্থানীয়রা এগিয়ে এসে উদ্ধার কাজ শুরু করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় কালিম্পঙ থানার পুলিশ। চলে আসেন বনদপ্তরের কর্মীরাও। স্থানীয়দের সহযোগিতায় জখম পর্যটকদের উদ্ধার করে স্থানীয় কালিম্পঙ হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। চালক ও চার কলেজ পড়ুয়া পর্যটক ছাড়া বাকিরা নিরাপদে রয়েছেন বলেই পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। রাস্তার ওপর আচমকাই বিশালাকার গাছটি ভেঙে পড়লে ১০নম্বর জাতীয় সড়কে সমায়িকভাবে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে রাস্তার ওপর থেকে গাছটি সরিয়ে দেবার ব্যবস্থা করলে পরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। যানজটের সৃষ্টি হয়। ঘটনায় ব্যাপক আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।
দুর্ঘটনায় আহত পর্যটকদের চিকিৎসা সহ বাকিদের নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে কালিম্পঙ জেলা প্রশাসনের তরফে। কালিম্পঙের জেলা শাসক বালাসুব্রক্ষ্মন্যম টি বলেন, কি করে বড় গাছটি ভেঙে পড়লো তা জানতে গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আহতদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আপাতত চিন্তার কোন কারণ নেই। যান চলাচল এখন স্বাভাবিক হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
Comments :0