Shyamnagar Rail Accident

শ্যামনগরে ট্রেনের ধাক্কায় মৃত ৪, নেই ফুটব্রিজ, বিক্ষোভ স্থানীয়দের

জেলা

মৃত সুব্রত রায়।

বারেবারেই হয় দুর্ঘটনা। তবু স্টেশনে নেই ফুট ওভারব্রিজ। শ্যামনগর স্টেশনে লাইন পার হতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় চারজনের মৃত্যুর পর এই ক্ষোভই তীব্র।
শনিবার রাত এগারোটা নাগাদ শিয়ালদহ থেকে মালদা গামী গৌর এক্সপ্রেসের ধাক্কায় মারা গিয়েছেন এই চারজন। মৃত
তমাল কর (৩৬) এবং মৌমিতা সরকার কর (৩১) বেসরকারি ব্যাঙ্কের কর্মী। মৃতদের মধ্যে রয়েছে এক কিশোরও। তার কোনও পরিচয় রবিবার পর্যন্ত জানতে পারা যায়নি। মৃত সুব্রত রায় ফলের দোকানের কর্মচারী। তিনি দিনমজুর। 
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, রাতে তমাল এবং মৌমিতা সম্ভবত ঠাকুর দেখে বাড়ি ফিরছিলেন। শিয়ালদহ থেকে মালদা মুখী গৌর তিন নম্বর লাইনে দুরন্ত গতিতে ছুটে আসছিল। লাইন পার হতে পারবেন মনে করলেও তা হয়নি। 
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সেই সময়েই পার হচ্ছিল ওই কিশোরও। ট্রেন এসে পড়ায় দিনমজুর সুব্রত রায় কিশোরকে সরাতে যান। কিন্তু পারেননি। কিশোরের দেহ ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যায়। তমাল এবং মৌমিতা ঘটনাস্থলেই মারা যান।
সুব্রত রায়কে গুরুতর আহত অবস্থায় গোলঘর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁকে পাঠানো হয় কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালে। হাসপাতালে নেওয়ার আগে রাস্তাতেই মারা যান তিনি।
সুব্রত রায়ের পরিবারে একমাত্র রোজগেরে তিনিই। বাড়িতে দুই শিশু সন্তান রয়েছে। একেবারে দরিদ্র পরিবার। বৃদ্ধ বাবা-মা। বাবা চোখে দেখেন না। মা সবজি বিক্রি করেন। শ্যামনগরে তাঁর বাড়ির এলাকায় শোকের ছায়া।
ঘটনায় স্থানীয়রা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। শ্যামনগরে এই রেলগেট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একদিকে বারাকপুর-কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে। আরেকদিকে চৌরঙ্গি হয়ে কলকাতায় যাওয়ার ঘোষপাড়া রোড। অথচ গেটম্যান ঠিক মতো থাকেন না। রেল পুলিশ আছে, কিন্তু দেখা মেলে না। ট্রেনের ধাক্কার ঘটনার পর মানুষ বিক্ষোভ দেখান। রেললাইনে অবরোধও হয়। 
রবিবার দেখা গিয়েছে যে রেল পুলিশ এবং রাজ্য পুলিশ বড় বাহিনী মোতায়েন করেছে। লাইন পারাপার সামলাতে দেখা যায় বাহিনীকে। কিন্তু মানুষের এখানে কোনও ওভারহেড ফুটব্রিজ নেই। রেললাইনের ওপর দিয়ে পার হতে হয়।  মাঝেমাঝেই রেল লাইনে দুর্ঘটনা হয়। তবু এই অবস্থায় ফেলে রেখেছে রেল কর্তৃপক্ষ এবং রাজ্য।

Comments :0

Login to leave a comment