‘উগ্র প্রচার বিরোধী সেল’ করা হবে গুজরাটে। নির্বাচনী ইশ্তেহারে এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিজেপি। দলের নেতা এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহের ‘উচিত শিক্ষা’ ভাষণের পরই এই ঘোষণা করা হয়েছে শনিবার।
এদিন গান্ধীনগরে নির্বাচনী ইশ্তেহার প্রকাশ করেন দলের জাতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। ভাষণও দিয়েছেন তিনি। কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি থাকলেও ইশ্তেহারে উগ্র হিন্দুত্ববাদী সাম্প্রদায়িক প্রচারেই জোর দিয়েছেন নাড্ডা।
ইশ্তেহারে প্রতিশ্রুতি, সরকারে এলেই অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু হবে। বিজেপি এবং আরএসএস’র মূল প্রচারগুলির অন্যতম এই বিধি চালু করা। ভোটের আগে গুজরাটে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু সংক্রান্ত কমিটি গড়েছিল বিজেপি সরকার। নাড্ডা বলেছেন, ‘‘কমিটির সুপারিশ সরকারে এলেই প্রয়োগ করবে বিজেপি।’’
অভিন্ন দেওয়ানি বিধি মুখ্যত সাম্প্রদায়িক বিভাজনের কাজে ব্যবহার করে বিজেপি। বামপন্থীরা বিভিন্ন সময়েই এই কৌশল ফাঁস করেছেন। সঙ্ঘ এবং সহযোগীদের মূল প্রচার, অভিন্ন বিধি হলে মুসলিমদের বহুবিবাহ বন্ধ হবে। এর আগেই তাৎক্ষণিক তালাকে মুসলিম পুরুষের জেলের ব্যবস্থা হয়েছে। কিন্তু বিয়ের পর স্ত্রী-কে ছেড়ে চলে গেলে হিন্দু পুরুষকে জেলে পাঠানোর আইন নেই।
নাড্ডা বলেছেন, ‘‘অ্যান্টি র্যাডিক্যালাইজেশন সেল খুঁজে বের করবে অস্থিরতা তৈরির জন্য কারা দায়ী। তাদের মতলব আটকে দেওয়ার ব্যবস্থা করবে। সেই সঙ্গে সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী এবং ভারত বিরোধী শক্তিগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’’
নাড্ডার ঘোষণায় প্রশ্ন উঠেছে। রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় স্তরে গোয়েন্দা সংস্থা এবং পুলিশ প্রশাসনের বিভিন্ন বিভাগ ভারত বিরোধী কার্যকলাপ বা সন্ত্রাসবাদ রোধের দায়িত্বে বরাবরই থাকে। একাংশের মত, বিরোধী স্বর দমনের বার্তা দিতে চেয়েছেন নাড্ডা। উগ্র প্রচার বিরোধী সেল প্রতিবাদী গণতান্ত্রিক বিভিন্ন অংশগুলিকে জেলে পাঠানোর ব্যবস্থা করবে আরও দ্রুত।
১ এবং ৫ ডিসেম্বর দুই ধাপে ভোট গুজরাটে। ২০০২’র সংখ্যালঘু গণহত্যার বার্তা স্পষ্ট করে দিতে উঠেপড়ে নেমেছে বিজেপি। শুক্রবারই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন যে ২০০২-এ শিক্ষা দেওয়ায় গুজরাটে চিরশান্তি বিরাজ করছে। ২২ বছরে ‘ওরা’ চুপচাপ হয়ে গিয়েছে।
রাজ্যে ক্ষোভ রয়েছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে। কৃষিতে মজুরি দেশের মধ্যে তলানিতে। সম্প্রতি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তথ্যই তা দেখিয়ে দিয়েছে। কোভিডের সময়ে আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা চেপে গিয়েছে রাজ্যের বিজেপি সরকার। সেই কারচুপি ফাঁস হওয়ায় স্পষ্ট হয়েছে বেহাল রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। মাচ্ছু নদীর ওপরে মরবি সেতু দুর্ঘটনাও প্রশাসনিক গাফিলতি দেখিয়ে দিয়েছে।
Comments :0