Metro Disaster Homeless

চালু হলো মেট্রো, ঘরে ফিরলেন না ঘর হারানো বাসিন্দারা

কলকাতা

বউবাজারের এই এলাকাতেই বাড়ি ভেঙেছিল। মেট্রোর কাজে ঘর হারিয়েছিলেন বাসিন্দারা।

৩০ মিনিটে ঘর ছাড়া হয়েছিল প্রায় ২৭ পরিবার। এখনও ফিরতে পারেননি নিজেদের বসত বাড়িতে। ২০১৯ সালে শিয়ালদহ থেকে এসপ্ল্যানেড মেট্রোর টানেলের কাজ করতে গিয়ে বউবাজারে দুর্গা পিতুরি লেন ও স্যাকরাপাড়া লেনের প্রায় ২৭ টি পরিবার ঘরছাড়া হন। 
সেই ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর বাকি থাকা এই অংশের উদ্বোধন শুক্রবার করলেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু ঘর ছাড়া সেই বাসিন্দারা এদিনও সরব হয়েছেন নিজেদের যন্তরণার কথা নিয়ে।
২০১৯ সালের পর ২০২১ সালের প্রথম দিকে ও আগস্ট মাসেও ফের বিপর্যয় দেখা গিয়েছিল এই অঞ্চলে।  ২০১৯ সালের ৩১ আগস্ট ভয়ঙ্কর বিপর্যয় ঘটে মধ্য কলকাতার বউবাজার চত্বরের দু’টি রাস্তায়। ৩টি বাড়ি আংশিক ভেঙে পড়ে। ফাটল দেখা যায় একাধিক বাড়িতে। ঘরছাড়া হন মোট প্রায় ৩০০ বাসিন্দা। ভেঙে ফেলা হয়েছে প্রায় সব বাড়িই। 
দুর্গা পিতুরি লেনের বাসিন্দা অর্চনা দাস জানাচ্ছেন, ২০১৯’র ৩১ আগস্টের আগের ৫ দিন মেট্রো রেলের তরফে বিভিন্ন বাড়িতে পর্যবেক্ষণের জন্য যাওয়া হয়। বলা হয় কোনও ভয়ের ব্যাপার নেই। পাঁচ দিন আপনারা অন্যত্র থাকুন। কিন্তু সেদিন রাতে হঠাৎ করেই ১৩ ও ১৪ নম্বর দু’টি বাড়ি প্রায় ভেঙে পড়ে। অন্যান্য অনেক বাড়িতেই দেখা যায় ফাটল। 
ঘর হারানো বাসিন্দাদের প্রাথমিকভাবে রাখা হয়েছিল আশেপাশের বিভিন্ন হোটেলে। তারপর একের পর এক বাড়িতে যখন ফাটল দেখা যায় তখন মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ  অন্যত্র বাড়ি দেখে তাঁদেরকে সরিয়ে দেয়। সল্টলেক, ফুলবাগান এই চত্বরে বাড়ি ভাড়ার ব্যবস্থা করে দেয়। 
এদিন বাসিন্দারা জানিয়েছেন, শুধুমাত্র ভাড়া দেওয়া ছাড়া কোনো দায়-দায়িত্বই নিচ্ছে না মেট্রো কর্তৃপক্ষ। মানুষ কিভাবে রয়েছে তাদের সমস্যা কী তাঁর কোনও সমাধান করেনি। এখন তাঁদের দাবি, অবিলম্বে নিজেদের বাড়ি দিয়ে ফিরিয়ে আনতে হবে। মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল ২০২৩ সালে বাড়ি তৈরির কাজ শুরু হবে। ২০২৫-র মধ্যে কাজ শেষ হবে। ২০২৬-র শুরুতেই বাড়িতে ফিরতে পারবেন তাঁরা। কিন্তু তা শুধুই প্রতিশ্রুতি রয়ে গেছে। 
মেট্রোর এই সংযোগের ফলে অনেক মানুষের সুবিধা হয়েছে। কিন্তু প্রদীপের তলার অন্ধকারেই রয়ে গেছেন দুর্গা পিতুরি লেন ও স্যাকরাপাড়া লেনের প্রায় ৩০টি পরিবার। 
স্থানীয় সিপিআইএম নেতা উৎপল ভট্টাচার্য জানাচ্ছেন, মেট্রো রেল পরিকল্পনা বদলের জন্যই এই বিপর্যয়ের ঘটেছে। শিয়ালদহ থেকে মেট্রো লাইনটি সোজা সেন্ট্রাল মেট্রো স্টেশনে গিয়ে মিলিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা ব্যানার্জি ও তাপস রায়ের উসকানিতে সেন্ট্রাল চত্বরে ব্যবসায়ীরা বিক্ষোভ করেন। সেখানে মেট্রো স্টেশন তৈরি করতে বাধা দেন। যার দরুন রাস্তা বদলাতে হয়। মমতা ব্যানার্জি মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর টাকা দিতেও অস্বীকার করে রাজ্য।

Comments :0

Login to leave a comment