Medicine GST

ওষুধের মূল্যবৃদ্ধির অনুমতি দিয়ে জিএসটি হ্রাস!

ফিচার পাতা

ডাঃ ফুয়াদ হালিম 
জিএসটি কাউন্সিল সাম্প্রতিক এক ঘোষণার মাধ্যমে ৩৩টি ওষুধকে শূন্য শ্রেণিতে এবং বাকি সমস্ত ওষুধ এবং চিকিৎসা সরঞ্জামকে ৫% শ্রেণিতে তালিকাভুক্ত করার একটি পদক্ষেপ নিয়েছে। অর্থাৎ নির্দিষ্ট ৩৩টি ওষুধের ক্ষেত্রে কোনো জিএসটি রইলো না, বাকিগুলির ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ জিএসটি থাকবে। বারবার দাবি তোলা সত্ত্বেও অনেক দেরিতে এই ঘোষণা হলো। যদিও ওষুধপত্রের মতো অতি আবশ্যকীয় ক্ষেত্রে এটা যে নিতান্তই অতি সামান্য উদ্যোগ তাতে কোনও সন্দেহ নেই। আপাতদৃষ্টিতে এটি হিতকর মনে হলেও এর সদর্থক ফলাফল আগামীদিনে সাধারণ গরিব মানুষ তেমন পাবেন না, এই আশঙ্কাও রয়েছে। 
যেমন ঘোষণা হয়েছে যে ৩৩টি ওষুধের জন্য জিএসটি ধার্য হবে না অর্থাৎ শূন্য শতাংশ শ্রেণির আওতায় তা পড়বে। জিএসটি তালিকাভুক্ত ৩৩টি ওষুধ কখনও কোনও এমবিবিএস বা বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা নির্ধারিত হয়নি। এই ওষুধগুলি খুব কম সংখ্যক রোগীকে দেওয়া হয়ে থাকে। কতিপয় সুপার স্পেশালিস্ট চিকিৎসক নির্দিষ্ট কিছু রোগীর ক্ষেত্রে এই ওষুধগুলি লেখেন কারণ এই ওষুধগুলি খুব বিরল রোগের জন্য সুপারিশ করা হয়। এই ৩৩টি ওষুধের বেশিরভাগই ভারতে তৈরি হয় না, আমদানি করা হয়। সুতরাং এই ওষুধগুলি জিএসটি হ্রাসের সাথে সাথেই অনেক দাম কমে যাবে এটা ভাবা ভুল, কারণ আমদানিকৃত হওয়ার কারণে এগুলির মূল্য যথেষ্টই থাকবে এবং ব্যয়বহুল হিসাবেই গণ্য হবে। 
দেশের মানুষকে স্বস্তি দেওয়ার জন্য ভারত সরকার বাধ্যতামূলক লাইসেন্সিং এবং আমাদের পেটেন্ট আইন পুনর্বিবেচনার মাধ্যমে ভারতেই এই আমদানি করা ওষুধগুলির উৎপাদনের অনুমতি দিতে পারতো। কিন্তু তা হলো না। এই ওষুধগুলি স্থানীয়ভাবে তৈরি হলে রোগীর খরচ কমে যেতে পারে এবং কেবল এই ৩৩টি ওষুধের ক্ষেত্রেই নয়, বরং আরও অনেক ক্ষেত্রেই উল্লেখযোগ্যভাবে ওষুধের মূল্য হ্রাস করা যেতে পারে যদি সরকার ইচ্ছা করে।
জিএসটি চালুর আগে অনেক রাজ্য সরকার অসংখ্য ওষুধকে শূন্য শ্রেণির তালিকাতেই রেখেছিল। সুতরাং শূন্য শ্রেণির তালিকায় রাখা ৩৩টি ওষুধ পূর্বের করমুক্ত হওয়া ওষুধের সংখ্যার তুলনায় অনেকই কম। অন্যান্য সমস্ত ওষুধ এবং চিকিৎসা সরঞ্জামের উপর কর ১২ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশে কমানোর ঘোষণার ফলে আগামী ৬ মাসের মধ্যে অর্থাৎ ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ থেকে ৩১ মার্চ ২০২৬ পর্যন্ত অস্থায়ীভাবে কিছু সুবিধার সম্ভাবনা থাকবে। ভারত সরকার, ডিপিসিও (ড্রাগ প্রাইস কন্ট্রোল অর্ডার)- এর মাধ্যমে, সমস্ত ওষুধ কোম্পানিগুলিকে পূর্ব অনুমোদন বা সরকারি ছাড়পত্র ছাড়াই এপ্রিল মাসে উৎপাদিত ওষুধের দাম বার্ষিক ১০% পর্যন্ত বৃদ্ধি করার অধিকার দিয়েছে। এটি আগামী বছরের এপ্রিলে গ্রাহকদের জন্য ৭% সুবিধা দিলেও (জিএসটি হ্রাসের ফলে) ওষুধের দাম কিন্তু ১০% বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে।
প্রকৃতপক্ষে সাতের দশকের আগে ওষুধ নীতি তেমন বলিষ্ঠ ছিল না। ফলে আমদানিকৃত ওষুধের ওপর নির্ভর করতে হতো আমাদের। ১৯৭০ সালে পেটেন্ট আইন, ১৯৭৫ সালে হাতি কমিটির সুপারিশ মানুষকে স্বস্তি দিয়েছিল। তৈরি হয়েছিল এনএলইএম বা ন্যাশনাল লিস্ট অব এসেনশিয়াল মেডিসিন। তাতে বহু ওষুধ তালিকাভুক্ত ছিল যার দাম নির্ধারণে সরকারি নিয়ন্ত্রণ ছিল। কিন্তু তা আস্তে আস্তে বিলোপ হতে শুরু করলো। ডিপিসিও যে কারণে গঠিত হয়েছিল তার ওপর সরকারি নিয়ন্ত্রণ আলগা হয়ে গেল। ওষুধের দামের ওপর সরকারি নিয়ন্ত্রণ থাকলো না।  ফলে এখন বাজারে যে ওষুধ মেলে তার মাত্র ২০% এনএলইএম’র অন্তর্ভুক্ত। আর এখন ওষুধের দামও নির্ধারিত হচ্ছে বাজারে যাদের এক শতাংশের বেশি মার্কেট শেয়ার আছে সেই সব বড় ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির নির্ধারণ করে দেওয়া এমআরপি’র ওপর। অর্থাৎ সরকার নিয়ন্ত্রণের বদলে ওষুধের দাম ছেড়ে দিয়েছে বাজারের ওপরেই।     
উলটে এই সময়ে একটি শক্তিশালী ডিপিসিও দরকার, যাতে জনস্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ আরও বেশি সংখ্যক ওষুধ এনএলইএম’র  তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা যায়। ডিপিসিও’র ওষুধের মূল্য নির্ধারণে হাতি কমিটির সুপারিশে ফিরে যেতে হবে, যেখানে সংশ্লিষ্ট ওষুধের উৎপাদন খরচের উপর ভিত্তি করে এমআরপি (সর্বোচ্চ খুচরো মূল্য) ধার্য বা গণনা করা হয়। 
বস্তুত মানুষ ওষুধ এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম ক্রয় করে তাদের পছন্দের কারণে নয় বরং বাধ্যবাধকতা হিসাবে। অসুস্থ ব্যক্তিরা কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারের জন্য রাজস্বের উৎস হতে পারে না। অথচ  ২০১৭ সালে জিএসটি ব্যবস্থা শুরু হওয়ার পর থেকে ওষুধ এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারের জন্য বিশাল আয়ের উৎস হয়ে উঠেছে। এটি বন্ধ করা প্রয়োজন। সরকার যাদের প্রথমেই স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করতে ব্যর্থ হয়েছে, পরে তাদের ওপর কর আরোপ করে সরকারের আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া উচিত নয়। এতে সরকার কেবল পরিষেবা প্রদানকারী হিসাবেই নিজেকে গুটিয়ে নেয় না, বরং যখন নাগরিকরা তাদের নিজস্ব পরিষেবার বোঝা নিজেরাই বহন করে, তখন সরকার ব্যস্ত হয়ে পড়ে তাদের থেকে রাজস্ব আদায়ে।
এর ওপরে, ভারত সরকার ওষুধ প্রস্তুতকারকদের জন্য বছরে ১০ শতাংশ মূল্য বৃদ্ধির অনুমতি দিয়েছে। অর্থাৎ প্রতি বছর এপ্রিল মাসে ডিপিসিও ১০% পর্যন্ত মূল্য বৃদ্ধির অনুমতি দিয়ে রেখে ওষুধ বাবদ খরচ বৃদ্ধির বন্দোবস্ত করেই রেখেছে। সরকার প্রতি বছর যেহেতু ওষুধের দাম বার্ষিক ১০% পর্যন্ত বৃদ্ধি করার অধিকার দিয়েছে, সেহেতু জিএসটি ৫ শতাংশ করায় সাধারণ মানুষ খুব একটা উপকৃত হবে না। ২০১৯ সালটিকে যদি আমরা বেস ইয়ার বা ভিত্তি বর্ষ বলে ধরি (ডিপিসিও সংশোধনীর সর্বশেষ বর্ষ) তাহলে তারপর থেকে ৭ বছরে যে দাম বাড়তে চলেছে, তাতে জিএসটি ১২ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ ঘোষণা করলেও মানুষের সুরাহা তেমন হবে না। যদিও এখন পর্যন্ত শুধু ঘোষণাই কেবল হয়েছে।  
সরকারি সিদ্ধান্ত চারদিকে এই প্রশ্নই তুলে দিয়েছে, গ্রাহক কি জিএসটি নিয়ে সরকারি সিদ্ধান্তের ফলে উপকৃত হবেন? নতুন জিএসটি ব্যবস্থার রূপরেখা এখনও ঘোষণা করা হয়নি। ওষুধ, মুদ্রিত এমআরপি সহ ১২% জিএসটি নিয়েই বাজারে চলছে। জিএসটি’র ৭% হ্রাস কীভাবে গ্রাহকের কাছে হস্তান্তর করা হবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। ২০২৮ সালে মেয়াদ উত্তীর্ণ হবে এমন ওষুধের ব্যাচ ওষুধ কোম্পানিগুলি প্রকাশ করেছে এবং তা পুরানো এমআরপি দিয়েই করে সারা ভারতে বিতরণ করেছে। আমরা এই বিষয়ে সরকারের স্পষ্ট ব্যাখ্যা চাই, সেই অপেক্ষায় রয়েছি। জিএসটি হ্রাসের এই অর্থ সরাসরি রোগী বা ক্রেতার কাছে হস্তান্তর করা উচিত, অপর্যাপ্ত পদ্ধতিগত নির্দেশিকাগুলির কারণে ওষুধ কোম্পানিগুলি তা হাতিয়ে নেবে না- এটা সরকারকে স্পষ্টভাবে নিশ্চিত করতে হবে প্রকাশ্যে।
অন্যদিকে স্বাস্থ্যবিমা ও জীবনবিমার প্রিমিয়ামের উপর জিএসটি হ্রাসের ঘোষণা করা হয়েছে। এই প্রচেষ্টাকে স্বাগত। কিন্তু আমাদের আরও গভীরভাবে এটা দেখা উচিত যে এই জিএসটি হ্রাস লাভের দিক থেকে সাধারণ বিমাকারীর কাছে প্রকৃতই কত শতাংশ পৌঁছাবে, এগুলির অবশ্যই মূল্যায়ন করা উচিত।
আমরা সকলেই এই অভিযোগ শুনতে পাই যে স্বাস্থ্যবিমা কোম্পানিগুলি প্রায়শই ‘ক্লেইম’এর দাবি প্রত্যাখ্যান করে বা দাবির একটি অংশ প্রদান করে। ইনসিওরেন্স ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া ২০২৩ সালে একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে, স্বাস্থ্যবিমা ক্ষেত্রে কাজ করা ২৯টি কোম্পানির মধ্যে ২০টি কোম্পানি ক্লায়েন্টদের দাবি করা অর্থের ৮০%- এরও কম অর্থ প্রদান করেছে। এবং ১০ টি কোম্পানি তাদের ক্লায়েন্টদের মোট দাবিগুলির ৮০% -এরও কমক্ষেত্রে টাকা মিটিয়েছে। 
ভারতের বিমা নিয়ন্ত্রক ও উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ( ইনসিওরেন্স রেগুলেটরি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়া) তাদের  বার্ষিক প্রতিবেদন ২০২২-২৩ অনুসারে, ইনকার্ড ক্লেইম রেশিও বা ব্যয়িত দাবির অনুপাত নিম্নগামী। এই অনুপাত বলতে একটি বিমা কোম্পানি একটি নির্দিষ্ট আর্থিক বছরে সংগৃহীত মোট প্রিমিয়ামের তুলনায় কত শতাংশ দাবি পরিশোধ করেছে, তা বোঝানো হয়। এটি বিমা প্রদানকারীর আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং দাবি পরিশোধের সক্ষমতা নির্দেশ করে। এই অনুপাত নিম্মগামী বলে জানাচ্ছে ভারতের বিমা নিয়ন্ত্রক ও উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।
বিমা কোম্পানি কর্তৃক প্রদত্ত দাবির মোট মূল্যকে সেই বিমা কোম্পানি কর্তৃক সংগৃহীত মোট প্রিমিয়ামের পরিমাণ দিয়ে ভাগ করলে যে অনুপাত পাওয়া যায় তা হ্রাস পাওয়ার মানে হলো, স্বাস্থ্য বিমা কোম্পানিগুলি উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি মুনাফা করছে। কেন্দ্রীয় সরকার স্বাস্থ্য বিমায় ১০০% প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ অনুমোদন করেছে। ভারতের স্বাস্থ্য বিমা বাজার থেকে বেসরকারি দেশি-বিদেশি বিমা কোম্পানিগুলির জন্য বিশাল মুনাফা করার দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে। আমাদের দেশের জনসংখ্যার মাত্র ১৪% ভলান্টারি বেসরকারি স্বাস্থ্যবিমা ব্যবহার করে। সরকার প্রিমিয়ামের উপর জিএসটি কমিয়ে বিমার চাহিদা বাড়ানোর  প্রচার চালাচ্ছে। সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্য বিমা কিনতে উৎসাহিত করা হচ্ছে যাতে বিমা ব্যবসা এবং ফলস্বরূপ বেসরকারি স্বাস্থ্যক্ষেত্রের কলেবর আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। বিমা কোম্পানিগুলি জিএসটি’র ১৮% হ্রাস সরাসরি গ্রাহকদের কাছে হস্তান্তর করবে না কারণ তারা ইতিমধ্যেই আইটিসি (ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট)- এর বিষয়টি সামনে আনছে যা জিএসটি হ্রাসের ক্ষতিপূরণ দিতে পারে।
স্বাস্থ্যক্ষেত্রে সরকার এমন ব্যবস্থা চালু করছে, যার মাধ্যমে জনগণ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বেসরকারি খাত থেকে স্বাস্থ্য পরিষেবা কিনতে বাধ্য হয়। আমাদের বক্তব্য, রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারগুলিকে জনগণকে স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানের দায়িত্ব পালন করতে হবে। নয়া উদারীকরণ কর্পোরেট-পন্থী অর্থনীতি অনুসরণ করেছে দেশের সরকার, এভাবে ধীরে ধীরে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানের দায়িত্ব এড়িয়ে যাচ্ছে। স্বাস্থ্যবিমার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের করের টাকার একটা বড় অংশ কর্পোরেট স্বাস্থ্য পরিষেবার হাতে তুলে দি‍‌য়ে তাদের মুনাফার গ্যারান্টি দিচ্ছে সরকার। 
এর ফলে স্বাভাবিকভাবেই সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবার পরিকাঠামো বৃদ্ধির জন্য বরাদ্দ কমছে। এই স্বাস্থ্য বিমাগুলোর জন্য এবং প্রচারের জন্য সরকার যা খরচ করে তা আসে সাধারণ মানুষ অর্থাৎ করদাতাদের টাকা থেকে। এই সরকারি খরচের একটা বড় অংশ যায় বেসরকারি বা প্রাইভেট হাসপাতালকে টাকা দেওয়ার জন্য। এই অর্থ অবশ্যই সরকারি হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নয়নে ব্যবহার করা যেত। বিভিন্ন হেলথ সেন্টারের মাধ্যমে গরিব মানুষকে নিখরচায় আরও বেশি চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হতো। আরও সরকারি হাসপাতাল বানানো যেত, আরও বেশি চিকিৎসক নিয়োগ করা যেত, আরও চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনা যেত।  
জিএসটি-তে এই এই হ্রাস ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান শুল্ক যুদ্ধের প্রেক্ষাপটকে সামনে আনছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক ভারতীয় পণ্যের উপর আরোপিত ৫০% কর অবশ্যই আমেরিকায় ভারতীয় পণ্যের বাজারকে কোনঠাসা করবে। ভারত আন্তর্জাতিকভাবে ওষুধ ও টিকার অন্যতম বৃহৎ সরবরাহকারী। জিএসটি হ্রাসের লক্ষ্য ভারত ও মার্কিন উভয়ের প্রধান ওষুধ সরবরাহকারীদের কিছুটা স্বস্তি দেওয়া। তবে, আমাদের মনে রাখতে হবে যে এই ধরণের  শুল্ক যুদ্ধ আন্তর্জাতিক লগ্নী পুঁজি এবং জাতীয় বাজারের সংকট ও তার ত্রুটিগুলি প্রকাশ করে। সুতরাং জিএসটি’র পরিমাণ কমানো- যা ত্রাণ হিসাবে দাবি করা হচ্ছে, তা দীর্ঘমেয়াদে জনগণকে সুবিধা দেবে না। তাই স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সরকারি নীতিগুলি সাধারণ মানুষের দৃষ্টিকোন থেকে পুনর্বিবেচনা করা দরকার।
সুতরাং ওষুধের দাম কমানোর জন্য সঠিক ডিপিসিও প্রণয়ন করা প্রয়োজন বলে দাবি উঠছে দেশ জুড়ে। আপামর জনসাধারণের দাবি, সমস্ত ওষুধ এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম থেকে জিএসটি সম্পূর্ণ তুলে দিতে হবে, ওষুধের সঠিক গুণমান বজায় রাখার জন্য সরকারকে বিশেষ পদক্ষেপ নিতে হবে। সরকার যদি সাধারণ গরিব মানুষের জন্য বিনামূল্যে সমস্ত স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদান না করে তাহলে আগামী দিনে চরম সংকটে পড়বেন মানুষ। সকলকে চিকিৎসা পরিষেবা ভালোভাবে দিতে হলে কেন্দ্রীয় বাজেটের প্রায় ৫% স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় করা আবশ্যক। রাজ্য সরকারকেও স্বাস্থ্য খাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ব্যয় বৃদ্ধি করতে হবে যাতে সাধারণ মানুষ প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা পেতে পারেন। সরকারকে বেসরকারি স্বাস্থ্য ক্ষেত্রগুলিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে, শুধু তাই নয় সরকারি হাসপাতালগুলির পরিকাঠামো আরও অনেক উন্নত করতে হবে।

Comments :0

Login to leave a comment