দীপশুভ্র সান্যাল: জলপাইগুড়ি
বিপর্যয়ের ৪৮ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও ধূপগুড়ি জলঢাকা এলাকার কুল্লাপাড়া রেল লাইনের পাশে প্লাস্টিক টাঙিয়ে তাবু খাটিয়ে রয়েছেন গ্রামবাসীরা। পৌঁছায়নি সরকারি সাহায্য। কেটে গেল দুই দুইটা দিন অথচ স্থানীয় ব্লক কিংবা প্রশাসনিক আধিকারিকরা এলেন না বন্যা বিদ্ধস্ত এলাকায়। বন্যার কবলে সর্বস্ব হারিয়ে টিয়ার ও ইরিগেশন বাঁধের উপর কোনভাবে প্রায় ১৯২ টি পরিবার রাত্রি যাপন করছে। নেই বস্ত্র, নেই খাবার। ছোট ছোট বাচ্চা বয়স্ক মানুষ এমনকি গৃহপালিত পশুদের সঙ্গে বাঁধের উপরেই বসবাস। ধুপগুড়ি ব্লকের জলঢাকা নদী সংলগ্ন দক্ষিণ আলতা গ্রাম ভাটিয়া পাড়ার বন্যা কবলিত মানুষদের দূর্ভোগ কাটছে না। বিগত কয়েক বছর থেকেই এই গ্রামবাসীদের আন্দোলন ছিল বাঁধ নির্মানের দাবি। সেই খবর একাধিকবার বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সম্প্রচারিত হয়েছে। তার জেরে খোদ সেচ মন্ত্রী সরজমিনে তদন্ত করে বাঁধ নির্মাণের কাজের বিষয় ক্ষতিয়ে দেখেন। তবে এখনও কাজ অর্ধ সমাপ্ত থাকায় বাঁধের বিশাল একটা অংশ ভেঙে গোটা গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। জলের স্রোতে ঘরবাড়ি , গাছপালা ভেঙে সমস্ত রকমের গুরুত্বপূর্ণ নথি খাদ্য সামগ্রী বস্ত্র সমস্ত কিছুই খুইয়ে আজ এক কাপড়ে বাঁধের উপরে বসবাস এই মানুষগুলোর। এখনও কোনো প্রশাসনিক আধিকারিকরা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়নি বলে অভিযেগ। ভাঙা বাঁধ দিয়ে ফের জল ঢুকে প্লাবিত হতে পারে গ্রাম। সেই আতঙ্ক রয়েছে। জরুরী নথিপত্র হারিয়ে অনাহারে থেকেও প্রত্যেকের চোখে মুখে আতঙ্কের ছবি। তাদের দাবি ভেঙে যাওয়া বাঁধ দ্রুত সংস্কার করে দিক প্রশাসন। তবে এই পরিস্থিতি শুধুমাত্র এই গ্রামেরই নয় ধুপগুড়ি ব্লকের বেশ কিছু গ্রাম যা নদীর তীরবর্তী একই ছবি ধরা পড়ছে।
অন্যদিকে ত্রাণ বন্টনে অনিয়মের অভিযোগে বিক্ষোভ চলছে ধূপগুড়ি গদেয়ারকুঠি এলাকায়। ত্রাণের দাবিতে গধেয়ারকুঠি গ্রাম পঞ্চায়েত বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বিপর্যস্তরা। বিক্ষোভকারীদের দাবি, সরকারের তরফে পাঠানো ট্রিপল ও অন্যান্য ত্রাণসামগ্রী বন্যাকবলিত পরিবারগুলির হাতে পৌঁছচ্ছে না। অভিযোগ, পঞ্চায়েত প্রধান বিজয় রায় নাকি তা অন্যত্র বিতরণ করছেন, যার ফলে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা ত্রাণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ‘ত্রাণ বন্টনে স্বচ্ছতা চাই’ স্লোগানে সরব হন অনেকেই।
ত্রাণ বন্টনের অসন্তোষের মাঝেই গোটা রাজ্যের সঙ্গে জলপাইগুড়িতে ত্রাণ সংগ্রহ করে বিপর্যস্ত মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে উদ্যোগ নিয়েছে সিপিআই(এম)। জলপাইগুড়ি শহরের দিনবাজার কামারপাড়া এলাকায় ত্রাণ সংগ্রহ অভিযানে শামিল হন নেতৃবৃন্দ। অর্থ সংগ্রহ অভিযানের নেতৃত্ব দেন সিপিআই(এম) নেতা বিপুল সান্যাল, দেবরাজ বর্মন, শক্তি গোস্বামী, যুব নেতা দেবব্রত ভৌমিক, শিক্ষক নেত্রী রিতা রায় সেনগুপ্ত সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
Comments :0