SFI

যাদবপুর ছাত্রী মৃত্যু ঘটনায় উচ্চপর্যায়ের তদন্তের দাবি করলো এসএফআই

রাজ্য

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী মৃত্যু ঘটনায় উচ্চপর্যায়ের তদন্তের দাবি করলো এসএফআই। মঙ্গলবার এসএফআইয়ের রাজ্য সদর দপ্তর দীনেশ মজুমদার ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করে এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দে বলেন, ‘‘যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী মৃত্যর যেই ঘটনা ঘটেছে তাতে সবাই মর্মাহত। আমরা উচ্চপর্যায়ের তদন্তের দাবি করেছি। আমরা মনে করি কর্তৃপক্ষ যদি দায়িত্বশীল হতো তাহলে এই ধরনের ঘটনা এড়িয়ে যাওয়া যেত।’’
এসএফআইয়ের রাজ্য নেতৃত্ব এদিন জানিয়েছে এসএফআই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় আঞ্চলিক কমিটির পক্ষ থেকে বার বার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কর্তৃপক্ষের আবেদন জানিয়ে এসেছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কোন পদক্ষেপ নেয়নি। এসএফআই নেতৃত্বের কথায় যেই পুকুরে ছাত্রী মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে সেই পুকুর দীর্ঘদিন কোন সংস্কার করা হয়নি। এসএফআইয়ের পক্ষ থেকে বার বার দাবি করে আসা হয়েছে ওই পুকুর সংস্কার করার। 
উল্লেখ্য রাজ্য এবং রাজ্যপাল সংঘাতের কারণে যাদবপুর সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন স্থায়ী উপাচার্য নেই। এই বিষয় নিয়ে এদিন সরব হয়েছে এসএফআই। দেবাঞ্জন বলেন, ‘‘যাদবপুরের এখন কোন কর্তৃপক্ষ নেই। রাজ্য সরকার বনাম রাজ্যপালের জন্য এই অবস্থা, বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন উপাচার্য নেই, রেজিষ্টার, ডিন সবাই অস্থায়ী। আমার যতবার নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছি প্রয়োজনীয় সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো কথা বলেছি কিন্তু কর্তৃপক্ষ কোন পদক্ষেপ নেয়নি। বলে রাখা ভালো যেখানে এই ঘটনা ঘটেছে সেখানে যেই তিনটি সিসিটিভি লাগানো রয়েছে সেই গুলো এসএফআইয়ের দাবি দাওয়ার পর লাগানো হয়।’’ 
নেতৃত্বের কথায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএফআই কর্মী সমর্থকদের পক্ষ থেকে বার বার দাবি করে আসা হয়েছে সন্ধ্যার পর বহিরাগতদের বিশ্ববিদ্যালয়ে অভ্যন্তরে যাতাযাতের ওপর নিয়ন্ত্রণ আনার জন্য। এসএফআই রাজ্য সম্পাদক বলেন, ‘৬৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো জন্য। কিন্তু সরকার সেই টাকা দিচ্ছে না।’
যাদবপুরের ছাত্রী মৃত্যুর ঘটনার পর তৃণমূল এবং বিজেপি একযোগে যাদবপুরের মতো ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে প্রকাশ্যে হেনস্তা করছে। বিজেপি তৃণমূলের এই অপপ্রচারের তীব্র সমালোচনা করেছে এসএফআই।
এসএফআই নেতৃত্ব বলেন, ‘এবারও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে ঘৃণা ছড়াচ্ছে তৃণমূল এবং বিজেপি। যা খুশি বলে যাচ্ছে। গোটা বিশ্ববিদ্যালয়কে ছোট করার চেষ্টা হচ্ছে। শুভেন্দু অধিলকারি এই বিশ্ববিদ্যালয়কে আবর্জনা বলছে। দেশের স্বদেশী আন্দোলনের ধারার মধ্যে দিয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আত্মপ্রকাশ।’ 
দেবাঞ্জন দে বলেন, ‘শুভেন্দু অধিকারি, কল্যাণ ব্যানার্জিরা হচ্ছে বাংলার শিক্ষা, সংস্কৃতির ক্ষেত্রের আবর্জনা। তাদের সরানোর কাজ সামনে থেকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীরা করছে বলে এই সব কথা।’
এসএফআইয়ের অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফান্ড কমানো হচ্ছে। রাজ্য এবং কেন্দ্র উভয় এই কাজ করছে। কেন্দ্র এবং রাজ্যের কথা ছিল ১০০ কোটি টাকা দেওয়ার যাদবপুরের পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য। কিন্তু তৃণমূল সরকার এবং বিজেপি সরকার সেই টাকা দেয়নি। ছাত্র নেতৃত্বের কথায় যাদবপুর নিয়ে দুই দলের বিরোধী মনোভাব আছে বলে এই ঘৃণা ছড়ানো হচ্ছে। 
দেবাঞ্জন দে বলেন, ‘তৃণমূলকে উত্তর দিতে হবে কেন দক্ষিণ কলকাতা ল’কলেজের সময় তারা মিছিল করেনি, কেন তারা ইউনিয়ন রুম দখল করে মাদকের ব্যবসা করছে। ওরা জানে যাদবপুরের পড়ুয়ারা বিজেপি তৃণমূলকে গ্রহণ করে না তাই এই ঘৃণার পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে।’
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএফআইয়ের নেতা শুভদীপ ব্যানার্জি বলেন, ‘যেই জায়গায় এই ঘটনা ঘটেছে সেখানে বেড়া দেওয়ার কাজ, সংস্কারের দাবি দীর্ঘদিন ধরে করে আসছি আমরা।  বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন স্থায়ী নিরাপত্তা কর্মী নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকায় ১৪ লক্ষ্য টাকা দিয়ে তৃণমূলের দপ্তর তৈরি করা হয়েছে। তাহলে কেন পড়ুয়াদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা হলো না?’ তিনি বলেন, ‘২০২২ এবং ২০২৫ সালে এসএফআইয়ের পক্ষ থেকে ডেপুটেশন দেওয়া হয়েছে নেশা মুক্ত ক্যাম্পাস করতে। বলা হয়েছে টিম করে এই নেশা চক্র ভাঙ্গাতে হবে। কিন্তু কিছু হয়নি।’

Comments :0

Login to leave a comment