গল্প — নতুনপাতা, বর্ষ ৩
এবং রবীন্দ্রনাথ
সৌরভ দত্ত
হারিয়ে যাওয়া ছেলেবেলা।‘বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর নদেয় এলো বান’–রবি ঠাকুরের গান। কচুপাতা মাথায় দিয়ে ভিজছে শৈশব।জীবনস্মৃতির দিন।আমরা যেন আজও ভৃত্য শ্যামেদের অধীনে বন্দি।সাবেকি বাড়ির চৌহদ্দি। উঠোন জুড়ে চু-কিত-কিত খেলা।মাটির রবীন্দ্রনাথ রবিকাকার তাকে রাখা থাকত বারোমাস।রবি কাকা বই লিখেছিল ‘উপনিষদ ভাবনায় রবীন্দ্রনাথ’।মীরা পিসিমা গাইত–“যে রাতে মোর দুয়ার গুলি ভাঙল ঝড়ে…”। রবীন্দ্রনাথকে আমরা প্রতিদিন দেখতাম পাড়ার মোড়ে।ধুলো জমেছে মূর্তিতে। ধুলো সরিয়ে এক্কা দোক্কা খেলতাম ।রানাদাদার ক্যানভাসে ফুটে উঠত একটা সান্টাক্লজ মার্কা মুখ। ক্লাসের ফার্স্ট বয় সন্তু সেদিন টিভিতে দেখল পুলিশ কাকুকে গোলাপ দিচ্ছে কালো জোব্বা পরা রবীন্দ্রনাথ। চারিদিকে অসংখ্য ক্যামেরা। সবাই সমস্বরে গাইছে জাতীয় সংগীত।চাকরি নেই মাস্টার মশাইয়ের।হাতে কবির ছেলেবেলা বইটা পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে পড়েছি অদ্ভুত চিলেকোঠায়। মায়ের ডাকে ঘুম ভেঙেছে।রবি কাকার পাণ্ডুলিপিটা আলমারিতে রয়ে গেছে। ছাপা হয়নি। বছর হল রবিকাকা নেই হয়ে গেছে। পাণ্ডুলিপিটা উইপোকায় কেটে দিয়েছে কিছুটা। একদিন উদ্ধার করি বাংলা স্যারকে দেখাই লেখাগুলো।লেখাটা দেখে স্যার চমকিত হয়।পিওডিতে ছাপা চলছে বইটা ।অপেক্ষায় আছি কবে বেরোবে রবীন্দ্রনাথের রবীন্দ্রনাথ!
Comments :0