বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ফের শিশু চুরি। এবার রোগীর বন্ধু সেজে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে শিশু চুরির অভিযোগ উঠল বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। এই ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে হাসপাতাল চত্বরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। ১৮দিনের এক শিশুপুত্রকে হাসপাতাল থেকে চুরি করে পালানোর অভিযোগ উঠেছে এক অজ্ঞাতপরিচয় মহিলার বিরুদ্ধে। খবর পেয়ে হাসপাতালে যান ডিএসপি(হেড কোয়ার্টার) দেবাশিস চক্রবর্তী ও বর্ধমান থানার আইসি দিবেন্দু দাস। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার বিশদে জানতে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অতীতেও এই হাসপাতালে একাধিক শিশু চুরির ঘটনা ঘটলেও পুলিশী নজরদারির অভাব বলেই অভিযোগ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৮ দিনের পুত্রসন্তানকে নিয়ে এদিন হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের বহির্বিভাগে দেখাতে আসেন মা সেলেফা খাতুন। সঙ্গে ছিলেন সেলেফার মা হামিদা বিবি ও স্বামী সুজল শেখ। ঘটনার সময় সুজল ওষুধ কিনতে গিয়েছিলেন। সেলেফার মায়ের এদিন প্রসূতি চিকিৎসকের কাছে চেকআপ করার কথা থাকলেও, চিকিৎসক অনুপস্থিত থাকায় তা হয়নি। সে সময় প্রসূতি বিভাগের বহির্বিভাগের বারান্দায় সেলেফা তাঁর পুত্রসন্তানকে নিয়ে একাই বসেছিলেন। তখনই অজ্ঞাতপরিচয় এক মহিলা সেলেফার কাছে এসে শিশুপুত্রটিকে আদর করতে থাকে এবং কিছুক্ষণ পর কোলেও নেয় সে। সেলেফার অভিযোগ, অল্প সময়ের মধ্যেই ওই মহিলা ছেলেকে কোলে নিয়েই সেখান থেকে উধাও হয়ে যায়। বিষয়টি টের পেয়ে সেলেফা তড়িঘড়ি স্বামীকে ফোন করে জানান। তড়িঘড়ি সুজল বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পে গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনার খবর চাউর হতেই হাসপাতাল চত্বরজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা শুরু করে। কিন্তু রাত পর্যন্ত শিশুটি উদ্ধার হয়নি বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
এদিন সেলেফা বলেন, আমাদের বাড়ি বীরভূম জেলার কীর্ণহারের বলরামপুরে। আমার ছেলের সর্দি–জ্বর হয়েছিল। এদিন হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে আসি। পাশাপাশি আমার মায়ের গাইনি সমস্যা ছিল। তাই মাকেও প্রসূতি বিভাগে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে আসি। প্রসূতি বিভাগের বারান্দায় বসে থাকার সময় হলুদ রঙের চুড়িদার পরা অল্পবয়সি এক মহিলা হঠাৎ আমাদের কাছে এসে ভাব জমায়। টিকিট কাউন্টার এবং টিকিট নথিভুক্ত করার জায়গা আমাদের দেখিয়ে দেয়। এরপর ছেলেকে ডাক্তার দেখানো হয়ে গেলে আমি বারান্দায় বসে থাকি। মা সেই সময় প্রসূতি বিভাগে ডাক্তার দেখাতে যান এবং স্বামী বাইরে ওষুধ কিনতে যান। সেই সুযোগে ওই মহিলা ছেলেকে আদর করতে থাকে। তারপর আমাকে বলে, ছেলেকে তার কোলে দিতে। প্রথমে রাজি হইনি। পরে সে বলে, বাচ্চা খুব ভালোবাসি। তাই একবার দাও। সেই ভেবে তার কোলে ছেলেকে দিই। মহিলা আমার পাশেই ছিল। কিন্তু, কিছুক্ষণের মধ্যেই সে সেখান থেকে উধাও হয়ে যায়। এরপর চারদিকে খোঁজাখুঁজি শুরু করি এবং বিষয়টি মা ও স্বামীকে জানাই। তারপরই আমরা সবাই মিলে হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পে যাই।
এই ঘটনায় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। হাসপাতালে ভর্তি থাকা এক রোগীর আত্মীয় সুরজ সাহানা বলেন, এভাবে ভিড়ের মধ্যে থেকে শিশু চুরি হওয়া সত্যিই উদ্বেগজনক। নিরাপত্তা আরও জোরদার করা প্রয়োজন। হাসপাতালের সুপার ডাঃ তাপস ঘোষ বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি।
Burdwan Medical Hospital
ফের শিশু চুরির অভিযোগ বর্ধমান মেডিক্যাল হাসপাতালে

×
Comments :0