Vote Loot Salim

অভিযোগ সেলিমের:জয়ন্তদের ‘জায়েন্ট’ বানিয়ে লুটের রাজত্ব কায়েম করেছেন মুখ্যমন্ত্রী

রাজ্য

এলাকায় এলাকায় বহু জয়ন্তকে ‘জায়েন্ট’ বানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি লুটের রাজত্ব কায়েম করেছেন বলে অভিযোগ সিপিআই(এম)’র রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের। শনিবার রানিগঞ্জে এক সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেছেন, রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিবকে সরকারি খরচে উপদেষ্টা বানিয়ে দলের মুখরক্ষার বন্দোবস্ত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। দুষ্কৃতীদের মারধরের ভিডিও’কে তিনি পুরানো ভিডিও বলে সাফাই দিয়েছেন। দুষ্কৃতীরা আগে অত্যাচার করে থাকলে তখন পুলিশ প্রশাসন ব্যবস্থা নেয়নি কেন? তখন প্রশ্রয় না দিয়ে সঠিক ব্যবস্থা নিলে জয়ন্তদের এখন ‘জায়েন্ট’ হিসাবে দেখতে হতো না। মমতা ব্যানার্জি মুখ্যমন্ত্রী পদে বসেই ভবানীপুর থানা থেকে দুষ্কৃতী ছাড়িয়ে এনেছিলেন। এখনও ২৫:৭৫ ভাগের বিনিময়ে দুষ্কৃতীদের লুটের রাজত্ব চলছে, জয়ন্তর মতো তৃণমূলী সম্পদরা মানুষের নিরাপত্তার পক্ষে বিপদে পরিণত হয়েছে। 
রাজনীতিতে এই দুষ্কৃতীযোগের কারণেই একদিকে তারা প্রশ্রয় পাচ্ছে, অন্যদিকে নির্বাচনে মানুষ নির্ভয়ে ভোট দিতে পারছেন না বলে মন্তব্য করেছেন মহম্মদ সেলিম। তিনি বলেছেন, এরাজ্যে পঞ্চায়েত থেকে সাধারণ নির্বাচনে সাধারণ মানুষ অবাধে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন না। ভয়ের বাতাবরণ তৈরি করা হচ্ছে। এই উপনির্বাচনেও রায়গঞ্জ থেকে রানাঘাট সর্বত্র ভোটলুটের সময় নির্বাচন কমিশনকে অভিযোগ জানানো হলেও কমিশন নীরব থেকেছে। এখন হয়তো মিডিয়ায় সবুজ ঝড় বলে শাসকদের পক্ষে প্রচার চলবে, কিন্তু আদতে তৃণমূল গণতন্ত্রের টুঁটি টিপে ধরেছে। 
তিনি বলেন, লোকসভা নির্বাচনে মোদীর ক্ষমতা খর্ব করতে অনেকটা সফল হয়েছে ইন্ডিয়া ব্লক। দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি বিরোধী মনোভাব ফুটে উঠেছে। কিন্তু গোটা দেশে সরকার বিরোধী মনোভাব ফুটে উঠলেও, এরাজ্যের সরকার বিরোধী মনোভাব কেন ফুটে উঠছে না, সেটাই তো গবেষণার বিষয়!
তৃণমূলের লুট দুর্নীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বগটুইতে তৃণমূলের মাফিয়ারা তৃণমূলকেই পুড়িয়ে মারার পরে প্রকাশিত হয়েছিল যে বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূলের সিন্ডিকেটরাজ কীভাবে তোলাবাজি করে ভয় দেখিয়ে টাকা তুলছে। তৃণমূলের নেতারা বিশাল বিশাল অট্টালিকা করেছে। এখন জয়ন্তর অট্টালিকাও দেখা যাচ্ছে। এগুলো কোনোটাই আইনসম্মত নয়, সব বেআইনি। অথচ সরকার সেগুলো না ভেঙে এখন হকারদের উচ্ছেদ করতে বুলডোজার নামাচ্ছে। রাস্তার দখলদারি নেওয়া তৃণমূলের অফিস আর জয়ন্তদের বেআইনি প্রাসাদের মতো বাড়ি দিব্যি বহাল থেকে যাচ্ছে। 
তৃণমূলের লুটেরাবাহিনীই যে বিজেপি’র বাহিনী হিসাবে কাজ করছে তার উল্লেখ করে সেলিম বলেছেন, জয়ন্ত ও জিতেন্দ্রর মধ্যে কোন তফাৎ নেই। যারা টিএমসি’র ঝান্ডা নিয়ে লুটপাট করেছে, মুখ্যমন্ত্রী যাদের তৃণমূলের সম্পদ মনে করেন, তারাই বিজেপি’তে যোগ দিয়েছে। আজকে পশ্চিমবাংলায় যা হচ্ছে ত্রিপুরাতেও বিজেপি তাই করছে। মমতা ব্যানার্জি আরএসএস’র কারখানায় গুন্ডামির রাজনীতি শিখে পশ্চিমবাংলায় তা প্রয়োগ করছেন।
মুম্বাইতে আম্বানি-পুত্রের বিবাহ অনুষ্ঠানে মমতা ব্যানার্জির উপস্থিতি প্রসঙ্গে প্রশ্নের উত্তরে সেলিম বলেন, মমতা ব্যানার্জির দল আগেই আম্বানি-আদানিদের কাছে বিক্রি হয়ে গিয়েছে। ইলেক্টোরাল বন্ডের টাকা এল, তাজপুর বন্দর থেকে দেউচা-পাচামির খনি হস্তান্তরের তৎপরতা দেখা গেল। এসব থেকেই বোঝা যায়। কিন্তু একদিকে দেশের দারিদ্র, অপুষ্টি, কাজের অভাব, জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে, মোবাইলের ডেটা খরচ বাড়ছে আর অন্যদিকে হাজার হাজার কোটি টাকার মোচ্ছবে যোগ দিতে মুখ্যমন্ত্রী গিয়েছেন।

Comments :0

Login to leave a comment