তীব্র গতিতে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে দেহ বের করে নেওয়া হলো নার্সের। হুলস্থুল কান্ড শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে।
হুগলী থেকে সরিয়ে দেহ নিয়ে আসা হয়েছে কলকাতায়। পরিবারের অভিযোগের জেরে দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু মৃত্যুর তদন্ত চাপা দিতে পুলিশের বিপুল সক্রিয়তায় অপরাধ আড়ালের সন্দেহ জোরালো হয়েছে। পরিবার চাইছে কলকাতা মেডিক্যালের বদলে তদন্ত হোক কল্যাণী এইমস হাসপাতালে।
এক বছর আগে আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক হত্যার ঘটনাতেও পরিবারকে দূরে রেখে দেহের শেষকৃত্য করে দেওয়া হয়েছিল।
সকাল তখন ১১ টা বিশাল পুলিশ বাহিনী মর্গের কাছে। প্রেসক্রিপশন বা আইডি কার্ড ছাড়া ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না কাউকে। মর্গের কাছে প্রতিবাদীরা লাগাতার দাবি জানাচ্ছেন এখানেই ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ত্বাবধানে ময়নাতদন্ত হোক। স্থানীয় এক সূত্র থেকে খবর আসে দেহ ওয়ালশ হাসপাতাল থেকে সরানো হতে পারে। তখন বেলা এগারোটা বেজে ৫৫ মিনিট। একদল রাফ জওয়ান হাসপাতালে প্রবেশ করল। ততক্ষণে পরিষ্কার ময়নাতদন্ত আর হবে না। এরই মধ্যে পুলিশের এক উচ্চ পদস্থ আধিকারিক কে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান আমরা কিছু বলতে পারব না। ডাক্তাররা যা বলবে তাই করব। ঘন্টাখানেক প্রতিবাদীদের সঙ্গে বিক্ষোভ কারীদের কথা কাটাকাটি হয়। লাকি চার্জ করা হয় বিক্ষোভকারীদের ওপর। তার মধ্যে দিয়েই প্রিজন ভ্যান বের করে নিয়ে যায় দেহ।
কিন্তু প্রশ্ন অনেক বড়। সিঙ্গুরের একটি নার্সিংহোমে কাজ করছিলেন এই নার্স। পরিবার জানিয়েছে প্রশিক্ষণ পর্ব শেষ করে এখানে যুক্ত হয়েছেন সদ্য। গত বুধবার রাতে নন্দীগ্রামে এই নার্সের বাড়িতে ফোন যায় নার্সিংহোম থেকে। বলা হয় তিনি গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
যুবতীর বাবা সিঙ্গুর থানার ওসিকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন যে ছুটে এসেও দেহ দেখতে পাননি। নার্সিংহোমের মালিক এবং পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে দেহ সরানোর অভিযোগ করেছেন তিনি। দাবি জানিয়েছিলেন ময়না তদন্তের। কিন্তু একটি নার্সিংহোমে একজন নার্সের মৃত্যু ঘিরে অভিযোগের তদন্ত বন্ধ করার জন্য বিশাল পুলিশ বাহিনী নামাতে হলো কেন? আরজি করের ছায়া এখানেও কেন? প্রশ্ন উঠলো, তাহলে অপরাধ কী এবং অপরাধীরা কারা যাদের আড়াল করতে ফের লাঠি হাতে নেমে পড়ল উর্দিধারীরা। ফলে এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় বড় কোন চক্রের যোগসাজস থাকার সন্দেহ জোরালো হয়েছে।
মৃত নার্সের বাবা অভিযোগ করেছেন যে জবরদস্তি করে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়েছে দেহ। শ্রীরামপুরের ওয়ালশ হাসপাতালেই ময়নাতদন্ত চেয়েছিলেন তাঁরা। তা না হলে কল্যাণী এইমসে নিয়ে যাওয়া হোক এই দাবিও জানিয়েছিল পরিবার।
Nurse Death Singur
জোর করে নার্সের দেহ কলকাতায়, পরিবার ক্ষুব্ধ

×
Comments :0