রাজ্যে ফের ঋণের দায়ে ফের আত্মঘাতী হলেন এক কৃষক। আত্মঘাতী কৃষক তরুণ বৈরাগ্য (৫১) হুগলির বলাগর থানা এলাকার বাসিন্দা। সম্প্রতি কালের অতিবর্ষণে নদীর জল বেড়ে যায়। তাতেই প্লাবিত হয় পটল এবং বেগুনের জমি। এতেই পূর্বের ঋণ পরিশোধ করার সুযোগ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েন কৃষক তরুণ বৈরাগ্য।। হতাশায় বুধবার সাড়ে দশটা নাগাদ ফসলে দেওয়া কীটনাশক পান করেন তিনি। তাঁকে উদ্ধার করে কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। বৃহস্পতিবার মৃতদেহের ময়না তদন্ত হয়।
এই আত্মঘাতী কৃষক তরুণ বৈরাগ্যের বাড়ি হুগলি জেলার বলাগর থানার অন্তর্গত কৃষ্ণবাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের ফুলতলা চড়ে। মৃতের বড় ছেলে রবি বৈরাগ্য এদিন জানিয়েছেন, আমাদের কৃষিজমি সামান্যই। বাবা নিজের জমির সাথে অন্যের জমি ঠিকা নিয়ে চাষবাদ করতেন। এই চাষ আবাদ করতে গিয়ে বাবার বাজারে বেশ কিছু ঋণ হয়ে যায়। ভেবেছিলেন অর্থকরী ফসল পটল ও বেগুন চাষ করে সেই দেনা কিছুটা হলেও শোধ করবেন। কিন্তু সম্প্রতি কালের বর্ষার জলে বেগুন ও পটলের জমি প্লাবিত হয়ে সব নষ্ট হয়ে যায়। ফলে বাবার ঋণ শোধ করার শেষ সুযোগটাও নষ্ট হয়ে যায়। তাতেই বাবা হতাশ হয়ে নিজের জীবনটা শেষ করে দিলেন। মৃত কৃষকের স্ত্রী জানান, উনি চাষ ছাড়া আর কিছুই বুঝতেন না। সারাদিনই মাঠে ঘাটে থাকতেন। আমাদের সামনে তেমন কিছু বলতেন না। তবে চাষাবাদ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তিনি একটু ভেঙে পড়েছিলেন।
এদিন তরুণ বৈরাগ্যের মৃতদেহ ময়নাতদন্ত করতে আসা প্রতিবেশীদের বক্তব্য, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বলছেন কৃষকের আয় তিন গুণ হয়েছে। তাহলে কৃষকরা আত্মঘাতী হচ্ছেন কেন ? তাহলে কি আমাদের গ্রামে কৃষকদের কাছে সেই আয় এসে পৌঁছাচ্ছে না!
সারা ভারত কৃষক সভার পূর্ব বর্ধমান জেলা সভাপতি সূকুল সিকদার বলেন, কৃষকের আত্মঘাতী হওয়ার প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। আসলে যেভাবে বিভিন্ন ফসল চাষ করে কৃষকরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন, তাতে সরকার পাশে না দাঁড়ালে আত্মঘাতী কৃষকদের মিছিল বন্ধ হওয়া সম্ভব নয়। তাই আমরা দাবি করছি সরকার কৃষকের পাশে দাঁড়াক।
Farmer Commits Suicide
বৃষ্টিতে ফসল নষ্ট, ঋণের দায়ে ফের আত্মঘাতী কৃষক
×
Comments :0