Kajol bows to backlash

সোশ্যাল মিডিয়ায় এবার দক্ষিণপন্থীদের টার্গেট বলিউড অভিনেত্রী কাজল

জাতীয়

ভারতের বর্তমান ব্যবস্থার সমালোচনা করার জন্য দক্ষিণপন্থী গোষ্ঠীগুলির আক্রমণের তালিকায় নয়া সংযোজন বলিউড অভিনেত্রী কাজল। একটি সাম্প্রতিক সাক্ষাত্কারে, তার নতুন ওটিটি রিলিজ ‘দ্য ট্রায়াল’এর প্রচার করার সময় কাজল মন্তব্য করেন যে, এমন রাজনৈতিক নেতারা আছেন যাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই, যা নিয়ে দু’দিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে।

নারীর ক্ষমতায়ন এবং দেশের অভ্যন্তরে নারী সংক্রান্ত নীতির পরিবর্তনের বাস্তবায়ন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে, তিনি বলেন: ‘‘পরিবর্তন, বিশেষ করে ভারতের মতো একটি দেশে, অত্যন্ত ধীর গতির। কারণ আমরা আমাদের পুরোনো ঐতিহ্য আঁকড়ে ধরে থাকতে চাইছি। আমাদের চিন্তার প্রক্রিয়ায় দৈন্যতা রয়েছে যা শিক্ষার সাথে সম্পর্কিত।’’

‘‘আমাদের রাজনৈতিক নেতারা আছেন যাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই। আমি দুঃখিত কিন্তু আমি এটা বলছি। আমি নেতাদের দ্বারা শাসিত হচ্ছে - তাদের মধ্যে অনেকের সেই দৃষ্টিভঙ্গি নেই যা আমি মনে করি শিক্ষা এনে দেয়, অন্তত একটি অন্যধরণের দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলার সুযোগ দেয়,’’ তিনি ব্যাখ্যা করেন।

এই কথা শুনেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝাঁপিয়ে পড়ে দক্ষিণপন্থী ট্রোল বাহিনী।  কাজলের নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং তার ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করা শুরু করে তারা। ‘‘কাজল একজন স্কুল ড্রপ আউট, তার স্বামী গুটখা [অজয় দেবগন] বিক্রি করে। এতদসত্বেও কাজলকে আমাদের রাজনৈতিক নেতাদের সম্পর্কে মন্তব্য করা থেকে বিরত করেনি,’’ একজন টুইট করেছেন। অন্য একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন: ‘‘কাজল একজন স্কুল ড্রপআউট তার স্বামী একজন কলেজ ড্রপআউট। এবং বলিউড হল সবচেয়ে কম শিক্ষিতদের স্থান আগা মাথা ছাড়াই এমন নির্বোধ সিনেমা তৈরি করে।’’

এইভাবে, ক্রমাগত সাইবার-ট্রলিংয়ের পরে, কাজল অবশেষে ৮ জুলাই সন্ধ্যায় টুইটারে একটি পোস্ট করেন: ‘‘আমি শুধুমাত্র শিক্ষা এবং এর গুরুত্ব সম্পর্কে একটি কথা বলেছিলাম। আমার উদ্দেশ্য কোনো রাজনৈতিক নেতাকে অবজ্ঞা করা ছিল না। কিছু মহান নেতাও আছেন যারা দেশকে সঠিক পথে পরিচালিত করছেন।’’ 


এই ঘটনা এবং অতীতে অনুরূপ ঘটনা সম্পর্কে মন্তব্য করে, কংগ্রেস নেতা ম্যাথিউ অ্যান্টনি বলেছেন যে কাজলকে 'তার অবস্থান স্পষ্ট করতে' বাধ্য করার যে চেষ্টা হচ্ছে তা  ফ্যাসিবাদের উদাহরণ। 

 

‘‘এটাকেই আমরা ফ্যাসিবাদ বলি,’’ তিনি টুইট করেছেন। অ্যান্টনি দাবি করেছেন যে বলিউড অভিনেতাদের ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে কথা না বলে নিজেদের নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে রাখার সুবিধাবাদী ঝোঁকই তাদের কাল হয়েছে।

‘‘কাজল শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে একটি মন্তব্য করেছেন [এবং] আমরা অশিক্ষিত লোকদের দ্বারা শাসিত,’’ বলেছেন অ্যান্টনি। ‘‘তিনি তো কখনই প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। প্রধানমন্ত্রী মোদির শিক্ষাগত যোগ্যতা আমাদের কাছে প্রকাশ করা হয়নি। তিনি যদি দাবি না করতেন যে তিনি যোগ্য, আমরাও তার শংসাপত্র দেখার দাবি করতাম না... [যখন] কাজল সেই মন্তব্য করেছেন তখন তার মানসিক শান্তি, নিরাপত্তা, স্বাধীনতা দক্ষিণপন্থীরা ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছে।’’


"সাইবার বুলিং... একজন মহিলা হিসেবে শালীনতা রক্ষা করা, ব্যক্তিগত আক্রমণ করা সত্বেও স্মৃতি ইরানির থেকে কাজলকে সমর্থনের জন্য একটি শব্দও আসেনি, অথচ স্মৃতি ইরানির জন্ম বলিউডেই... কাজল তার প্রাক্তন সহকর্মী,’’ টুইট করেন অ্যান্টনি।

অল্ট নিউজের প্রতিষ্ঠাতা এবং কর্মী মহম্মদ জুবায়েরও কাজলের সমর্থনে টুইট করেছেন: ‘‘তিনি এতে কারও নাম নেননি তবে অনেক ভক্ত কাজলের এই বক্তব্যকে তাদের প্রিয় নেতার অপমান হিসাবে নিয়েছেন।’’

Comments :0

Login to leave a comment