অরিজিৎ মণ্ডল: বর্ধমান
দেশকে ভালবাসতে হলে দেশের মানুষকে ভালবাসতে হবে। তা’হলে দেশের মানুষকে এক করতে হবে। ভগৎ সিং এবং তাঁর সহযোগীদের দেশপ্রেম এভাবেই দেশকে ভালবেসেছিল। নকল দেশপ্রেম নয়। সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কড়া বলে প্রকৃত দেশপ্রেম।
রবিবার বর্ধমান স্টেশনে নওজোয়ান ভারত সভার শতবর্ষ পালন সমাবেশে একথা বলেছেন ডিওয়াইএফআই’র প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।
তিনি মনে করিয়েছেন যে ভগৎ সিংয়ের আদর্শের অনুসারী বলেই বামপন্থীরা প্যালেস্তাইনের জনতার মুক্তির পক্ষে, সাম্রাজ্যবাদের বিপক্ষে। বিপক্ষে বিভাজনের রাজনীতির। তাই বামপন্থীদেরই দেখা যায় জনতাকে এক করে বিপন্ন মানুষের ত্রাণের কাজে ঝাঁপাতে।
ডিওয়াইএফআই রাজ্য কমিটির ডাকে স্বাধীনতা সংগ্রামী বটুকেশ্বর দত্তের গ্রাম থেকে দু’দিনের পদযাত্রা শেষে রবিবার হয়েছে সমাবেশ।
এদিন বক্তব্য রেখেছেন সংগঠনের প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক আভাস রায়চৌধুরী, বর্তমান রাজ্য সম্পাদক ধ্রুবজ্যোতি সাহা, সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বিকাশ ঝা। সভাপতিত্ব করেন রাজ্য সভাপতি অয়নাংশু সরকার। মঞ্চে ছিলেন গণআন্দোলনের নেতা সৈয়দ হোসেন, অভিনেতা দেবদূত ঘোষও।
সেলিম বলেন, আজও প্রকৃত দেশপ্রেমিক বিশ্বের যে কোনও প্রান্তে সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে কথা বলে। আর বিভাজনের রাজনীতি যারা করে, যারা নকল দেশপ্রমের কথা বলে ঘৃণা ছড়ানোর জন্য, তারা সাম্রাজ্যবাদের পক্ষে থাকে। তাই বামপন্থীরা প্যালেস্তাইনে গাজার বিরুদ্ধে কথা বলে। আর আরএসএস-বিজেপি গণহত্যায় দায়ী, শিশুহত্যায় দায়ী ট্রাম্প-নেতানিয়াহুর পক্ষে থাকে। আমরা দেখেছি বিশ্বের একের পর এক দেশে মানুষ রাস্তায় নামলেন গণহত্যার বিপক্ষে। আর প্রধানমন্ত্রী মোদী নেতানিয়াহুর শক্ত নেতৃত্বের জন্য অভিনন্দন জানাচ্ছেন। গুজরাটে গণহত্যাকারী কী করে প্যালেস্তাইনে গণহত্যার বিরোধিতা করবে।
তিনি বলেন, ভগৎ সিংয়ের শিক্ষা এই যে সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই ধর্মের পরিচয়ে তৈরি হয় না, আরবের বহু দেশ আমেরিকারই অনুগত।
সেলিম বলেন, নওজোয়ান ভারত সভার শতবর্ষ পালিত হচ্ছে তাদেরই ভাবধারা অনুসরণ করে। উত্তরবঙ্গে বন্যার পর ঝাঁপিয়ে পড়েছেন উদ্ধারে, ত্রাণে।
সেলিম বলেন, বিজেপি আর তৃণমূল তরজা করছে। আগরতলায় নিয়ে গেল নাটককে। মুখ্যমন্ত্রী নাচলেন। মিডিয়া নকল লড়াই নিয়ে ছুটতে শুরু করল।
তিনি বলেন, দুর্গাপুর থেকে পড়তে আসা ছাত্রী ধর্ষিতা। মুখ্যমন্ত্রীর লজ্জা করে না। আমাদের লজ্জা হয়, বিদ্যাসাগরের বাংলা। বিজেপি এর মধ্যে ভাষা, ধর্ম খুঁজতে নামে। এরা অপরাধীকে আড়াল করতে চায়।
সেলিম ভারত-আফগানিস্তান আলোচনা প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে বলেন, এ যেন ‘সঙ্ঘী-তালিবান ভাই ভাই, হিন্দু মুসলিমের লড়াই চাই’ স্লোগান স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। দুই শক্তিই কমিউনিনিস্ট বিদ্বেষী, প্রগতিশীল, যুক্তিবাদীদের বিরুদ্ধে সক্রিয়। এরা কালবুর্গি, গৌরী লঙ্কেশদের হত্যা করে। তাই জনতাকে একজোট করার লড়াই চলবে।
Comments :0