PLASTIC GLOBAL WARMING

বিশ্বের বাড়তি তাপমাত্রা রোধের টাকা শুষে নিচ্ছে প্লাস্টিক

আন্তর্জাতিক

কেবল প্লাস্টিকের পণ্য তৈরি করতেই দরকার পড়ছে ১২ শতাংশ পেট্রোলিয়ামের। বিশ্বের প্রাকৃতিক গ্যাসের ৮.৫ শতাংশ ব্যবহার করতে হচ্ছে এই শিল্পেই। বিশ্বে প্রায় ৪ শতাংশ হারে বাড়ছে প্লাস্টিকের উৎপাদন। এমন চলতে থাকলে সময়ের আগেই উষ্ণায়ন রোধের সব টাকা খরচ হয়ে যাবে। 
২৩ থেকে ২৯ এপ্রিলে কানাডার অটোয়ায় প্লাস্টিকের পণ্য উৎপাদন বন্ধ করার লক্ষ্যে বসছে আন্তর্জাতিক সম্মেলন। রাষ্ট্রসঙ্ঘের ডাকে আন্তর্জাতিক স্তরে সমঝোতা সই করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। তার ঠিক আগেই প্লাস্টিক উৎপাদন সম্পর্কে উদ্বেগজনক এমন তথ্য দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লরেন্স বার্কলে ন্যাশনাল ল্যাবরেটরি। 
প্রাক্‌ শিল্পায়ন সময়ের তুলনায় উষ্ণতা বৃদ্ধিকে ১.৫ ডিগ্রিতে বেঁধে রাখতে সম্মতি গড়া হয়েছে আন্তর্জাতিক স্তরে। তবে সেই লক্ষ্যে চলার মতো পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যর্থতা সবচেয়ে বেশি ধনী বিশ্বে। 
বার্কলে ল্যাবরেটরি জানাচ্ছে, আন্তর্জাতিক স্তরে যে কার্বন বাজেট করা হয়েছে, ২০৬০ সালেই তার সবটা খরচ হয়ে যাবে যদি প্লাস্টিক উৎপাদন না কমে। ২০৮৩’র পর তো কোনোভাবেই অর্থ আর থাকবে না। কেননা এই ক্ষেত্রে পেট্রোলিয়াম জাত জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার হয় বিপুল পরিমানে। প্লাস্টিক উৎপন্ন হওয়ার আগেই এই জ্বালানির ৭৫ শতাংশ খরচ হয়ে যায়। বিশ্বের উষ্ণায়নের জন্য দায়ী গ্রিনহাউস গ্যাস এই জ্বালানি ব্যবহারের কারণে মিশছে বাতাসে। 
সমীক্ষকদের বক্তব্য, ২০২৪ থেকেই প্রতি বছর গড়ে ১২ থেকে ১৭ শতাংশ হারে প্লাস্টিক উৎপাদন কমানো প্রয়োজন। ২০১৯ সালেই প্লাস্টিক উৎপাদনের কারণে ২.২৪ গিগাটনের সমতুল কার্বন ডাই অক্সাইড বাতাসে মিশেছে। কৃষি এবং জমি ব্যবহারের পরিবর্তনকে বাদ দিলে বাকি মোট গ্রিনহাউস গ্যাসের ৫.৩ শতাংশ প্লাস্টিক শিল্প ক্ষেত্র থেকেই। 
অন্যান্য ক্ষেত্রের মধ্যে পরিবহণের জন্য গ্রিনহাউস গ্যাস বাতাসে মিশচে উল্লেখযোগ্য হারে। প্লাস্টিকের তুলনায় তিনগুনের বেশি গ্রিনহাউস গ্যাস বাতাসে মিশেছে পরিবহণ ক্ষেত্র থেকে। 
গত সপ্তাহে সুৎজারল্যান্ডের একটি অলাভজনক সংস্থা ‘আর্থ অ্যাকশন’ তাদের প্রতিবেদনে বলেছিল যে প্লাস্টিক বর্জ্য ২০২১’র তুলনায় কমেনি মোটেই, বরং ৭.১১ শতাংশ বেড়েছে। সমুদ্র থেকে মাটি, সর্বত্র তা জেরে বাড়ছে দূষণ।   
তবে উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়াই সমাধান কিনা তা নিয়ে বিতর্ক প্রবল। বিকাশমান অর্থনীতি এবং কম আয়ের অর্থনীতিতে বিপুল অংশের জীবিকার ভরসা প্লাস্টিক উৎপাদন ক্ষেত্র। প্লাস্টিক পণ্যের খরচ কম, সহজে ব্যবহার করা যায়। বিকল্প প্রযুক্তি হস্তান্তরের কথা থাকলেও ধনী বিশ্ব তা করেনি। আবার ভারতের মতো দেশে পাটজাত পণ্য উৎপাদনের বহু সম্ভাবনা থাকলেও সরকারি স্তরে গাফিলতি ধরা পড়েছে বারবারই। ‘প্লাস্টিক লবি’-র চাপে সরকারি স্তর থেকে চটের ব্যবহার কমানো হয়েছে।

Comments :0

Login to leave a comment