অনির্বাণ দে
লড়াই, গ্রামে শান্তি রক্ষার। দেশ থেকে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে হটানোর। নির্বাচনী প্রচারে জানান দিচ্ছে রানিনগর।
মানুষের স্পষ্ট বক্তব্য, দেশ থেকে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে সরাতে হবে। তার জন্য তৃণমূলকেও হারাতে হবে। তাই ভোট এবার কাস্তে হাতুড়ি তারায়।
রানিনগর যেন ছিল আরেকটা সন্দেশখালি। বলছেন কুমনগরের প্রবীণ বাসিন্দা গোলাম হোসেন।
কেন ?
বিরোধী দলের কর্মীদের উপর রাজনৈতিক সন্ত্রাস শুধু নয় এলাকার সব খাস জমির দখল নিয়েছিল তৃণমূল। জমি দখল থেকে শুরু করে নারী নির্যাতন। সব রকমের কাজেই সিদ্ধহস্ত এই এলাকার তৃণমূল নেতারা।
গোলাম হোসেনের কথায়, “কিছু তৃণমূল সরে গিয়েছে। বাকিরা এবার ভোটের পর আর হালে পানি পাবে না”।
তৃণমূল নেতাদের চোখরাঙানিতে সাধারণ মানুষও স্বচ্ছন্দে হাঁটাচলা করতে পারেননি রানিনগরের গোধনপাড়া, শেখপাড়া, রানিনগর বাজারে। বারবার রক্তাক্ত হয়েছেন সিপিআই(এম), কংগ্রেস কর্মীরা।
থানার সামনে হয়েছে হামলা। ছয় বছরে পাঁচবার ভাঙচুর করা হয়েছে সিপিআই(এম) অফিস।
রানিনগরের মানুষ পঞ্চায়েত নির্বাচনে বুথ রক্ষা করেই দিয়েছেন ভোট। দখলমুক্ত গোধনপাড়া, রানিনগর, শেখপাড়া বাজার।
এদিন এক সময়ের সন্ত্রাস কবলিত গোধনপাড়ায় সকাল থেকেই মহম্মদ সেলিমের জন্য অপেক্ষা করেছিলেন সিপিআই(এম), কংগ্রেস কর্মীরা।
এদিন শুরু থেকেই প্রচারে সিপিআই(এম) প্রার্থী মহম্মদ সেলিমের সঙ্গে ছিলেন সিপিআই(এম) জেলা সম্পাদক জামির মোল্লা। ছিলেন রানিনগর ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কংগ্রেস নেতা কুদ্দুস আলিও। ছিলেন অন্য নেতনেত্রীরা।
শান্তি চায় না তৃণমূল। তাই রাতে চলছে তৃণমূলের বোমাবাজি। থানা ডেকে পাঠাচ্ছে সিপিআই(এম), কংগ্রেস কর্মীদের। কিন্তু, অশান্তি নয়। ঠান্ডা মাথাতেই লড়তে হবে ভোট, বলছেন গ্রামের মানুষ।
এদিন গোধনপাড়া, রানীনগর বাজার হয়ে শেখপাড়া বাজার পরিক্রম করেন মহম্মদ সেলিম। ঘুরে ঘুরে কথা বলেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী থেকে পরিযায়ী শ্রমিক, নির্মাণ শ্রমিকদের সাথে।
কী চাইছেন মানুষ ? রানিনগর বাজারের কাছে কুঁড়ে ঘর থেকে বেড়িয়ে এসে মহম্মদ সেলিমের হাত ধরেছেন শিল্পী মনোরঞ্জন ব্যাধ। বলেছেন, “ কৃষকদের কথা বলবেন” ।
পাট বিক্রির মাঝেই হুড়শির সেকের আলি মিছিলে ঘুরেছেন সাইকেল নিয়ে। বলেছেন, নিজেদের দেশ বাঁচাতে এবার দিতে হবে সিপিআই(এম)’কে ভোট।
এদিন রানিনগরের ডিএন ক্লাবের মাঠে মহম্মদ সেলিম কথা বলেছেন, সীমান্ত এলাকার কৃষকদের সাথে। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছেন, “আমাদের রাজ্য ও দেশে লুটপাটের বিরুদ্ধে মানুষ এককাট্টা হচ্ছেন। একদিকে মোদীর লুট, আর রাজ্যে দিদির লুট দুটোকে আটকাতে হবে। কেন রাজ্যের যুবকরা পরিয়ায়ী শ্রমিক হবে ? দক্ষ শ্রমিকরা দেশ গড়ছে তারা রাজ্য, জেলা গড়তে পারে না ? সেই সুযোগ তৈরী করে দিতে হবে”।
এদিন বহরমপুর করিমপুর রেল যোগাযোগের দাবিতে সরব হন সেলিম। তিনি দাবি তুলেছেন, রাজ্যে ব্যবসা বাণিজ্যে মুর্শিদাবাদের গুরুত্ব ফেরাতে হবে। সীমান্তে আইনিভাবে ব্যবসার ক্ষেত্র তৈরি করতে হবে। মুর্শিদাবাদের যোগাযোগ ব্যবস্থার দাবিতে সরব হন মহম্মদ সেলিম। তিনি বলেছেন বাংলাদেশ ও ঝাড়খণ্ডের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করতে হবে।
এদিন বিকেলে বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেসের ডাকে বিশাল মিছল হয় মুর্শিদাবাদের ইসলামপুরে। মিছিলে ছিলেন মহম্মদ সেলিম সহ স্থানীয় সিপিআই(এম), বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস নেতারা।
Comments :0