শিলিগুড়িতে রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হলো মা তিথি দাস ও ছেল তেজাস দাস(৮)’র। স্ত্রী ও ছেলের মৃত্যু সংবাদ শুনে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে স্বামী বেসরকারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। শিলিগুড়ির অদূরে মাটিগাড়ার উত্তরায়ন টাউনশিপের ৯ নম্বর ব্লক এলাকার ঘটনা। ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়।
জানা গেছে, উত্তরায়ন টাউনশিপের ওই বাড়িতে ভাড়া থাকতো পরিবারটি। ইংরাজি বছরের প্রথম দিনে কেএফসি থেকে খাবার অর্ডার করে খেয়েছিলেন মা তিথি দাস (৩৮), মেয়ে তেজাল দাস (১৯), ছেলে তেজাস দাস (৮)ও তিথি দাসের ভাগ্না তন্ময় সরকার। প্রত্যেকেই রাতে খাওয়া দাওয়া করে ঘুমিয়ে পড়ে। এরপর বৃহস্পতিবার সকালে মেয়ে তেজাল ঘুম থেকে উঠে মা ও ভাইকে ডাকাডাকি করে। কিন্তু মেয়ের ডাকে মা ও ভাইয়ের ঘুম না ভাঙায় তেজাল ছুটে গিয়ে ভাগ্নে তন্ময়কে জানায় যে তার মা ও ভাই ঘুম থেকে উঠছে না। ঘটনা জানাজানি হতে দ্রুত অচৈতন্য অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে মাটিগাড়ার একটি বেসরকারী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তিথি দাস ও তেজাস দাসকে মৃত বলে ঘোষনা করেন। ঘটনার খবর পেয়ে ঘটাস্থলে পৌঁছায় উত্তরায়ন টাউনশিপ ফাঁড়ির পুলিশ। তিথি দাসের স্বামী সুজিত কুমার দাস পেশায় ব্যবসায়ী। কর্মসূত্রে বাইরে ছিলেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান তিনি। স্ত্রী ও ছেলের মৃত্যুর খবর পাওয়া মাত্রই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সুজিত কুমার দাস বর্তমানে বেসরকারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গোটা ঘটনা নিয়ে ধোয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। কিভাবে তিথি ও তেজাসের মৃত্যু হলো তা এখনও স্পষ্ট নয়।
যে ঘরে মা ও ছেলে ঘুমিয়েছিলো সেই ঘরের দরজা জানালা বন্ধ ছিলো। এছাড়াও ঘর গরম করতে ঘরের ভেতরেই একটি পাত্রে কয়লা জ্বালিয়ে রাখা হয়েছিলো। বাড়ির পরিচারিকা সুমন্তী মুন্ডা জানায়, মাঝেমধ্যেই তিথি দাস ঘর গরম করার জন্য ঘরের ভেতরে কয়লা জ্বালাতো। ঘর গরম হবার আধঘন্টা পরে আবার বাইরে বের করে দিতো। কিন্তু বুধবার রাতে হয়তো ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। তাই সারা রাত ধরেই কয়লা জ্বালানো অবস্থায় ঘরের ভেতরে ছিলো। সকাল সাতটা নাগাদ খবর পেয়ে সকলে এসে হাসপাতালে নিয়ে যায়।’’
কয়লার ধোঁয়া থেকে বিষাক্ত কার্বন—ডাই—অক্সাইড গ্যাসে ঘর ভরে শ্বাসকষ্ট জনিত কষ্ট অথবা বাইরের খাবার থেকে বিষক্রিয়ার কারণেই মা ও ছেলের মৃত্যু হয়েছে বলেই প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান। গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। অন্যদিকে মৃতদেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পরেই মা ও ছেলের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
Bodies Recovered
ঘরে দেহ উদ্ধার মা ও ছেলের, হৃদরোগে আক্রান্ত বাবা
×
Comments :0