আল বায়াত স্টেডিয়ামে আজ শুরু থেকেই অ্যাটাকিং ফুটবল খেলা শুরু করে নেদারল্যাণ্ডস। ডাচ কোচ লুইস ভ্যান গাল ৩-৪-৩ ছকে দল সাজিয়েছিলেন। অন্যদিকে কাতার দলের কোচ ফেলিক্স স্যাঞ্চেজ ৩-৫-২ ছকে দল নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন।
ম্যাচের ৪ মিনিটেই সুযোগ পায় নেদারল্যান্ডস। ক্লাসেনের বাড়ানো বলে ইনসাইড লেফট চ্যানেল ধরে আক্রমণে আসেন ডিপে কিন্তু শেষপর্যন্ত কাতার ডিফেন্ডারদের তৎপরতায় বিপদ কিছু ঘটেনি। ম্যাচের ১৯ মিনিটে ডিপের কর্নার থেকে আবার ক্লাসেনের চেষ্টা কিন্তু বল বাইরে চলে যায়। তবে পাল্টা আক্রমণে আসে কাতারও। ম্যাচের ২৫ মিনিটে হাসানের শট বারপোস্টের ওপর দিয়ে চলে যায়। তবে বারংবারই নেদারল্যান্ডসের তরফ থেকে আসছিল মুহুর্মুহু আক্রমণ। আর এরফলেই ভাঙল ডেডলক।
ম্যাচের ২৬ মিনিটে ক্লাসেনের পাস থেকে গ্যাকপোর জোরালো শট, একেবারে টপ রাইট কর্নার দিয়ে নিখুঁত গোল। ডাচ ব্রিগেড এগিয়ে যায় ১-০ গোলে। সেইসঙ্গে কোডি গ্যাকপোর নাম জুড়ে গেল ইতিহাসে পাতায়। তিনি হলেন নেদারল্যান্ডসের চতুর্থ কোনো ফুটবলার, যিনি পরপর তিনটি বিশ্বকাপে গোল করলেন।
এর আগে এই রেকর্ডের অধিকারী ছিলেন জোহান নেসকেন্স (১৯৭৪), ডেনিস বার্গক্যাম্প (১৯৯৪) এবং ওয়েসলি স্নেইডার (২০১০)। ম্যাচের ২৯ মিনিটে কাতার মিডফিল্ডার ইসমাইল মহম্মদের শট দুরন্ত সেভ করেন ডাচ গোলরক্ষক অ্যান্দ্রিস নোপার্ট। প্রথমার্ধ শেষ হয় ১-০ স্কোরলাইন অবস্থাতেই।
দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হতেই আবার অরেঞ্জ ঝড়। ম্যাচের ৪৯ মিনিটে ডি জং-এর গোল। যেটা আরও একটি উল্লেখযোগ্য বিষয়, গোটা নেদারল্যাণ্ডস দল টোটাল ফুটবলের উদাহরণ রাখল এই ম্যাচেও। মাঠ জুড়ে খেললেন সব ফুটবলাররা। আর এই জন্যই মাঝমাঠ থেকে একদিকে যেইরকম বলের সাপ্লাই লাইন বজায় রেখেছিলেন, ঠিক সেইরকমই খেলাও তৈরি করছিলেন এই ডি জং।
কিন্তু ক্লাসেন, আবারও সেই ক্লাসেন। প্রচুর ওয়ার্কলোড নিয়েছেন গোটা ম্যাচে, এক্ষেত্রেও তাঁর বিষাক্ত ক্রস থেকেই গোল করে গেলেন ডি জং। ফলাফল দাঁড়ায় ২-০। তবে এরপরই কাতার মিডফিল্ডার ইসমাইল মহম্মদকে অফ দ্যা বল চ্যালেঞ্জের দরুণ হলুদ কার্ড দেখেন ডাচ ডিফেন্ডার নাথান অ্যাকে। সেইসঙ্গে কাতার দলের মাঝমাঠের ফুটবলার আক্রম আফিফের কথা বলতেই হবে। তিনি অনেকটাই চেষ্টা করেছেন এবং কয়েকবার তাঁর তরফ থেকে কিছু পজিটিভ মুভও উঠে আসে।
এরপরই দলে কিছু পরিবর্তন করেন কাতার কোচ। যেইরকম করিম বৌদিয়াফের বদলে আসেন মাদিবো। হাসানের বদলে আসেন আলী আসাদ। শুধু কাতারই না, ডাচ হেডস্যারও কিছু পরিবর্তন করেন দলে। ক্লাসেনকে তুলে নামান বারঘুইসকে। ডিপের বদলে আসেন জানসেন। তবে এই বারঘুইস এবং গ্যাকপো জুটি বেশ জমে ওঠে। সর্বোপরি তাদের মধ্যে কম্বিনেশন মারাত্মক। দ্বিতীয়ার্ধের শেষ কোয়ার্টারে ডি জং-এর বদলে মাঠে আসেন টেইলর। অতিরিক্ত সময়ের ৯২ মিনিটে ওয়েগহরস্টের পাস থেকে বারঘুইসের শট পোষ্টে লেগে প্রতিহত হয়, নাহলে আরও একটি গোল আসতেই পারত। এরপর আর স্কোরলাইনের কোনো পরিবর্তন হয়নি। প্রায় ৬৩% বল পজিশন নিয়ে, কাতারকে ২-০ গোলে হারিয়ে পরের রাউণ্ডে পৌঁছে গেল ডাচ ব্রিগেড।
Comments :0