Md SALIM LALGOLA

অন্ধকার কাটাতে আরও রৌশন তৈরি করবে সিপিআই(এম), লালগোলায় সেলিম

রাজ্য

Md SALIM LALGOLA লালগোলায় শপথের সমাবেশে মহম্মদ সেলিম।

‘‘আজ যারা মনে করছে রৌশন আলিকে খুন করে দিলাম, আর লাল ঝান্ডা শেষ হয়ে গেল তারা ভুল ধারণা নিয়ে বেঁচে আছে। ওরা অন্ধকার আনার জন্য রৌশনকে খুন করেছে। আমরা অন্ধকার কাটানোর জন্য হাজার হাজার রৌশন তৈরি করব।’’

লালগোলার পরাণপুরে সমাবেশে এই শপথ শুনিয়েছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। শহীদ কমরেড রৌশন আলির খুনের বিচার চেয়ে লড়াই চলবে জান কবুল। রবিবার বৃষ্টি মাথায় জানান দিলেন লালগোলার মানুষ। 

শপথের জোরালো হয়েছে শহীদসন্তান ক্লাস ফাইভ পড়ুয়া সন্তান সাকিল আনসারির সরল বয়ানে। এদিন মহম্মদ সেলিমের পাশে দাঁড়িয়ে কিশোর শুধুই বলেছে, ‘‘আমার পিতার খুনীদের শাস্তি চাই। শাস্তি চাই, বিচার চাই।’’ এই দাবিতে একজোট গ্রামের মানুষ, জানান দিল পরাণপুরের সমাবেশ।

এদিন সমাবেশে যোগ দেন লালগোলার আত্মঘাতী চাকরী প্রার্থী যুবক আব্দুর রহমানের বাবা মফিজুদ্দিন শেখ। তিনি মহম্মদ সেলিমকে জানান, যুব আন্দোলনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়োগ দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনে আছেন তিনিও। 

ভোটের দিন বুথ রক্ষা করতে গিয়ে খুন হন লালগোলার ছাইতনির বাসিন্দা কমরেড রৌশন আলি। পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক রৌশন আলি ছিলেন পার্টি অন্ত প্রাণ। এদিন কমরেড রৌশন আলির স্ত্রী তসলিমা নাসরিনের সঙ্গে কথা বলেন মহম্মদ সেলিম। জানান, পরিবারের পাশে আছে পার্টি। সিপিআই(এম) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির পক্ষ থেকে এক লক্ষ টাকার চেক ও পার্টির জেলা কমিটির পক্ষ থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকার চেক তুলে দেওয়া হয় শহীদ পরিবারের হাতে। আগেই দুই শহীদ সন্তানের লেখাপড়ার দায়িত্ব নিয়েছে পার্টি। দু’জনকে ভর্তি করা হয়েছে স্থানীয় স্কুলে। 

পরিবারের পক্ষ এদিন পার্টি নেতৃত্বকে জানানো হয় যে মাত্র দু’জন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আশেপাশের গ্রামেই ঘুরে বেড়াচ্ছে অভিযুক্তরা। পরিবারকে চাপ দেওয়া হচ্ছে অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য। 

এদিন মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘যাদের পাড়ার লোকেরা ধরেছিল পুলিশ কেবল তাদেরই গ্রেপ্তারি দেখাচ্ছে। কেন আর কাউকে ধরা হল না? পুলিশ অপরাধীদের না ধরলে আদালতে যাবে সিপিআই(এম)।’’ 

তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যে তৃণমূলের ঝান্ডা লাগিয়ে আরএসএস’র রাজনীতি করছে মমতা ব্যানার্জির দল। নির্বাচনের অশান্তিকে ইস্যু করে সংখ্যালঘুদের দাগিয়ে দিচ্ছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপির যে নীতি দেশ ধংস করছে তা নিয়ে তৃণমূল কথা বলছে না। বিজেপি’র সাহায্য ছাড়া কীভাবে বিদেশ গেল অভিষেকের পরিবারের সদস্যরা?’’

মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘মণিপুর থেকে গুরগাঁও আক্রান্ত হচ্ছে দেশ। দেশ বাঁচাতে মজবুত করতে হবে লাল ঝান্ডাকে। মিডিয়া দেখাচ্ছে বিজেপি’র সঙ্গে তৃণমূলের যুদ্ধ হচ্ছে। এ নকল যুদ্ধ। কেন্দ্রের সবুজ সিগন্যাল ছাড়া রাজ্যের আইএএস, আইপিএস অফিসাররা কীভাবে তৃণমূলের দালালি করল পঞ্চায়েত ভোটে? দুই সরকারের বোঝাপড়া না হল এত দুর্নীতি হয়?’’ 

সেলিম বলেছেন, ‘‘পঞ্চায়েতে তৃণমূল, বিজেপি’র বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাহস দেখিয়েছেন মানুষ। ভাগাভাগির ঊর্ধ্বে উঠে সকলকে এককাট্টা হতে হবে। অন্যায়ের অবসান চাই । চোর জুলুমের রাজত্বর অবসান চাই।’’

সভায় উপস্থিত ছিলেন পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য রামচন্দ্র ডোম। বক্তব্য রাখেন সিপিআই(এম) জেলা সম্পাদক জামির মোল্লা, পার্টিনেতা বদরুদ্দোজা খান, সচ্চিদানন্দ কান্ডারী, জোহাক আলিও। 

এদিন লালগোলা আসার আগে নবগ্রামে পুলিশ হেফাজতে মৃত যুবক গোবিন্দ ঘোষের বাড়িতে  যান মহম্মদ সেলিম। কথা বলেন মৃতের বাবা, মায়ের সঙ্গে। তিনি বলেন, পুলিশ হেপাজতে মৃত্যুর পরিসংখ্যানে উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশের পরই এ রাজ্যের স্থান। এটা খুবই উদ্বেগের।’’   

এদিন বহরমপুর রবীন্দ্রসদনে ২৩ তম পার্টি কংগ্রেসে গৃহীত রাজনৈতিক রণকৌশলগত লাইন ও সমসাময়িক পরিস্থিতি নিয়ে সভায় আলোচনা করেন মহম্মদ সেলিম, রামচন্দ্র ডোম।

Comments :0

Login to leave a comment