ধূসরবেলা
এ লজ্জা তুমি রাখবে কোথায়
মনীষ দেব
এখন তোমাকে বিবস্ত্র করে — উলঙ্গ সময় চোখরাঙায় — তুমি মুক ও বধির হয়ে যাও — সময় খুব ক্রুদ্ধ হয়েছে — এ লজ্জা তুমি রাখবে কোথায়?
জন্মভূমি,
তোমাকে লিখছি। এক কবি লিখে ছিল —
'সকল দেশের রানী সে যে আমার জন্মভূমি।'
প্রত্যুত্তরে আরেক কবি লিখলেন—
'জানিনে তোর ধন-রতন,
আছে কিনা রানির মতন,
শুধু জানি আমার অঙ্গ জুড়ায়
তোমার ছায়ায় এসে।'
কালের যাত্রায় সেই জন্মভূমি, তুমি আজ নিরাভরণ। উলঙ্গ রাজার দেশে — রাজা নিদ্রা গিয়েছেন........ সেই সুযোগে রানী তার রাজত্বকে নগ্ন করেছেন।
বাঃ বাঃ বাঃ বাঃ না কেউ কথা বলো না, শব্দ করো না — গণতন্ত্র লুঠতে নেমেছি।
এই অবরুদ্ধ সময়ে যা অনিবার্য — তা অবিশ্বাস যা মৃত্যুদূতের মতো হানা দিয়েছে। জন্মভূমি তুমি — নিঃস্ব-রিক্ত-অসহায়। ক্লান্ত সময় ডানা ঝাপটায় না
আর শুধু আদালত চলছে —
আইন
আইন
আইন
শুধু আইন বলছে — তাই — রাষ্ট্র বলছে —
এই লজ্জা, দেশের লজ্জা, রাষ্ট্র খুব রুষ্ট-ক্রুদ্ধ!
জন্মভূমি তুমি — দেশ না রাষ্ট্রের? জন্মভূমি যদি তুমি দেশের হও তবে তুমি নিঃস্ব-রিক্ত-অসহায়। যদি তুমি রাষ্ট্রের হও তবে তুমি রক্তাক্ত
ক্ষত-বিক্ষত-কাটাতারে মোড়া এক লাশ, যার দায় রাষ্ট্র নেবে না, কারণ সে খুব রেগে গেছে!
হাটে হাঁড়ি ভেঙে গেছে — বিবস্ত্র নারী, শাসক বলছে — হাটের ভিড়ে খুলে গেছে শাড়ী — হাওয়ায় উড়ে গেছে — বিবস্ত্র নারীদের গণধোলাই,
তারপর বিবস্ত্র নারীরা লকআপে — বীভৎস গণতন্ত্র। লাশ বইছে গণতন্ত্র।
ক্ষত-বিক্ষত গণতন্ত্র। নির্লজ্জ সময়!
জন্মভূমি তুমি কাঁদো
চিৎকার করে কাঁদো
জননী গো তুমি কাঁদো —
এখন নীরবতায় ঢেকে যাচ্ছে কান্না।
Comments :0