MD SALIM NADIA

পঞ্চায়েতের তারিখ না দিলে ঘেরাও হবে কমিশন:
জনসভায় সেলিম

রাজ্য জেলা

MD SALIM NADIA শনিবার নাকাশিপাড়ায় সমাবেশে মহম্মদ সেলিম

সংবিধানে স্পষ্ট করা রয়েছে পাঁচ বছরের মধ্যে হতে হবে পঞ্চায়েত নির্বাচন। এ রাজ্যে জুনের প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহে পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণা করতে হবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে। ভোট আমাদের অধিকার। নির্বাচন ঘোষণা না করলে ঘেরাও হবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দপ্তরে। 

শনিবার নদীয়ার বেথুয়াডহরিতে জনসভায় এই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। সভা শুরু করতে দেরি হয়েছে পুলিশের বাধার কারণে। তারপরও হয়েছে সভা। নাকাশিপাড়ায় সিপিআই(এম)’র দু’টি ঋরিয়া কমিটির ডাকে হয়েছে এই সভা। ভিড় ভেঙে পড়ে জনসভায়। বক্তব্য রেখেছেন সিপিআই(এম)‘র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং জেলা সম্পাদক সুমিত দে, রাজ্য কমিটির সদস্য অলকেশ দাশও। 

পুলিশের উদ্দেশ্যে সেলিম বলেছেন, ‘‘পুলিশ যদি সরকারে আসীন দলের দালালের কাজ করে তার ফলাফল কী হয় কালিয়াগঞ্জ, কালিয়াচকে দেখেছেন রাজ্যের মানুষ। শুধু তৃণমূলকে ‘চোর, চোর’ বলে তাড়া করবেন না মানুষ। থানাও ঘিরে রেখে দেবেন।’’

এই প্রসঙ্গেই সাগরদিঘি উপনির্বাচনের উদাহরণ দেন সেলিম। কংগ্রেসের এক কর্মীকে আচমকা রাতে তুলে নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। সেলিম বলেছেন, ‘‘রাতেই থানা ঘেরাও করেন গ্রামের মানুষ। পুলিশ কথা দিতে বাধ্য হয় নির্বাচনের দিন সঠিক দায়িত্ব পালন করবে। তৃণমূলের হয়ে কাজ করবে না। তার ফল আমরা দেখেছি। তৃণমূল এবং বিজেপি দুই দলই মুখ থুবড়ে পড়েছে। জয়ী হয়েছেন বামফ্রন্ট সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী।’’ 

তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ সঙ্গে না থাকলে তৃণমূলের কোনও নেতাকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। পুলিশ অপরাধীদের ধরছে না। বরং চোর, লুটেরা, ধর্ষকদের পাহারা দিচ্ছে। তৃণমূলের সাংসদ সফরে বেরলে হাজারে হাজারে পাহারা দিচ্ছে। মানুষকে পাহারা দিচ্ছে না।’’ 

নাকাশিপাড়ায় সিপিআই(এম) কর্মীদের প্রস্তুতির আহ্বান জানিয়ে সেলিম বলেন, ‘‘বুথে বুথে প্রস্তুতি চলছে। প্রার্থীদের নাম ঠিক করা হচ্ছে। তৈরি থাকতে হবে। যেদিন ভোট ঘোষণা করবে সেদিন আমরাও প্রার্থীর নাম ঘোষণা করব।’’ 

তৃণমূলের যে অংশ চোখরাঙানি চালাচ্ছে তাঁদের উদ্দেশ্যে সেলিম বলেন, ‘‘যাঁরা কাজের জন্য, চাকরির জন্য বা হিজাব দেখে তৃণমূলে গিয়েছিলেন তাঁরা বুঝেছেন যে ঠকে গিয়েছেন। তাঁরা তৃণমূল ছাড়ছেন। কিন্তু মধুর লোভে কেউ কেউ রয়েছেন। মনে রাখবেন ঠেকে গেলে মমতা ব্যানার্জি নিজেকে আর ভাইপোকে ছাড়া কাউকে বাঁচাবেন না। মানুষের মেজাজ বুঝুন। খেপে গেলে পুলিশ কেন মিলিটারিও রক্ষা করতে পারে না। দিল্লির শাহিনবাগে বিজেপি নেতারা এমনই শাসানি দিয়েছিল। মানুষই হটিয়ে দিয়েছেন। শ্রীলঙ্কায় মিলিটারিও শাসকদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ঠেকিয়ে রাখতে পারেনি।’’ 

বিরোধীদের ওপর আক্রমণ প্রসঙ্গে সেলিম বলেন, ‘‘দেশে বিরোধীমুক্ত শাসনের লক্ষ্য জানিয়েছে আরএসএস-বিজেপি। রাজ্যে সেই দায়িত্ব এরা দিয়েছে তৃণমূলকে। ধর্মনিরপেক্ষতা, যুক্তরাষ্ট্রীয় নীতি, সংবিধান, গণতন্ত্রক ধ্বংসের কাজ সারা দেশে চালাচ্ছে বিজেপি। এ রাজ্যে তাদেরই সহযোগী তৃণমূল।’’ 

বামপন্থীদের লক্ষ্য জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি এবং তৃণমূলের বিরুদ্ধে সব অংশকে একজায়গায় করার চেষ্টা হচ্ছে। সাম্প্রদায়িকতা বিরুদ্ধে, লুট আর দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানুষকে এক হচ্ছেন। হিন্দু-মুসলিম, উত্তরবঙ্গ-দক্ষিণবঙ্গ দিয়ে মানুষকে আলাদা করে রাখা যাবে না।’’ তিনি বলেন, ‘‘বামফ্রন্ট এ রাজ্যে পঞ্চায়েত প্রতিষ্ঠা করেছিল। হয়েছিল প্রকৃত ‘দুয়ারে সরকার’। মানুষ অধিকার হাতে পেয়েছিলেন। মহিলাদের সংরক্ষণ, আঠারো বছরে ভোটাধিকার, গ্রাম সংসদ চালু করেছিল বামফ্রন্ট সরকার। দেশে বিজেপি আর রাজ্যে তৃণমূল সেই অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। অধিকার ফিরে পেতে হবে। এই ভোট অধিকার ফিরে পাওয়ার লড়াই।’’

Comments :0

Login to leave a comment