Sheikh Hasina

শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবার সহ একাধিক জনের বিরুদ্ধে মামলা

আন্তর্জাতিক

রফিকুল ইসলাম সবুজ- ঢাকা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি চলাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে নিহত তিন জনের পরিবার শেখ হাসিনা, বোন রেহানা ও পুত্র -কন্যার বিরুদ্ধে খুনের মামলা, মেনন, শাহরিয়ার কবির, মুনতাসির মামুনের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের। বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর দেশজুড়ে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর দলের প্রাক্তন মন্ত্রী, সাংসদ ও আওয়ামি লিগ নেতাদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়েরের উৎসব শুরু হয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও হচ্ছে একাধিক মামলা। কোন কোন মামলায় আসামীর সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে যাচ্ছে। মঙ্গলবার রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে হানিফ ফ্লাইওভারের টোলপ্লাজায় ফলের দোকানি ফরিদ শেখকে গুলি করে খুনের অভিযোগে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে মামলার করা হয়েছে। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাকিল আহম্মেদের আদালতে মামলাটি হয়। নিহত যুবক ফরিদ শেখের বাবা সুলতান মিয়ার জবানবন্দি গ্রহণ করে আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ৪ আগস্ট বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আন্দোলন চলাকালে ফরিদ শেখ যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভারের টোলপ্লাজার দক্ষিণ পাশের রাস্তা দিয়ে তার ফলের দোকানে যাচ্ছিলেন। এসময় শেখ হাসিনার নির্দেশে গণহত্যা চালানোর সময় পুলিশের গুলির আঘাতে মারাত্মক জখম হয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন। স্থানীয়মানুষজন তাঁকে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৬ আগস্ট মারা যান। 
এদিন অভিযোগে আরও বলা হয়, শেখ হাসিনার শাসনে ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশের নিরীহ জনগণের ওপর অন্য আসামিদের সহায়তায় হত্যা, গুম, অপহরণ, বিকলাঙ্গসহ নানান ধরনের অমানবিক অপরাধ সংঘটন করে আসছিলেন। সজীব ওয়াজেদ জয়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, শেখ রেহানা, শেখ হাসিনার যথাক্রমে পুত্র, কন্যা ও সহোদর বোন অসৎভাবে অর্থ লুট করা এবং রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ভোগ করার জন্য ২০০৯ সাল থেকেই শেখ হাসিনাকে যেকোনো উপায়ে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য উৎসাহ দিয়ে আসছেন। প্রয়োজনে গণহত্যার জন্যও শেখ হাসিনাকে তাঁর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়, কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ও বোন শেখ রেহানা মোবাইল ফোন ব্যবহার করে পরামর্শ দেন। মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, গত ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত শেখ হাসিনাসহ অন্যরা হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতা করেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- প্রাক্তন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল
কাদের, প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, প্রাক্তন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, প্রাক্তন মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, প্রাক্তন পুলিশ মহাপরিদর্শক আবদুল্লাহ আল মামুন, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলাম, প্রাক্তন ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ, অতিরিক্ত যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার, প্রাক্তন কমিশনার ডিএমপি হাবিবুর রহমান, জাসদের হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন, ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, প্রাক্তন তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ. আরাফাত, যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক আবুল হাসানসহ ২৫০ জন।
এছাড়া ছাত্র আন্দোলনে বগুড়ায় কমর উদ্দিন নামে এক রিকশাচালক নিহত হওয়ার ঘটনায় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ৮২ জনের নামে মঙ্গলবার আরও একটি খুনের মামলা হয়েছে। আরও ৩০০ জনকে এ মামলায় আসামি করা হয়েছে। মামলায় শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরকে হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এদিন দুপুরে নিহত কমর উদ্দিনের স্ত্রী তহমিনা বেগম বগুড়া সদর থানায় এ মামলা করেন।

Comments :0

Login to leave a comment