G-7 ITALY

জি-৭: চর্চায় অভিবাসী শ্রমিক, ইউক্রেনকে অস্ত্র জোগানোর বন্দোবস্ত

আন্তর্জাতিক

দক্ষিণ ইতালির পুইয়ায় জি-৭ বৈঠক।

বিপজ্জনক অভিবাসন এবং অভিবাসী শ্রমিকদের নিয়ে আলোচনা শুরু হলো সেই ইতালিতেই। শিল্পোন্নত দেশগুলির জি-৭ গোষ্ঠীর বৈঠকে অভিবাসনের উৎস দেশগুলিতে বিনিয়োগের প্রস্তাবও উঠছে। 
ইতালিতে উগ্র দক্ষিণপন্থী প্রধানমন্ত্রী জর্জ মেলোনির সরকার আসীন হওয়ার পর অভিবাসন ঠেকাতে বেপরোয়া পদক্ষেপ শুরু হয়। তার জেরে সমুদ্রেই একাধিক নৌকাডুবি হয়েছে। মারা গিয়েছেন বা জীবন বিপন্ন হচ্ছে অন্য দেশ থেকে পালিয়ে আসা বহু শ্রমিকের। আন্তর্জাতিক স্তরে ইতালির পদক্ষেপ নিন্দার মুখে পড়েছে।
এবার জি-৭ বৈঠক হচ্ছে ইতালির দক্ষিণে পুইয়ায়। আমন্ত্রিত দেশের রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে পৌঁছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। আলোচনার মাঝে আলাদা বৈঠক করেছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনক এবং ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভোলোদিমির জেলেনিস্কির সঙ্গে। ফ্রান্সের রাষ্ট্রপতি এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গেও বৈঠক হয়েছে মোদীর। 
এবারের জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ইউক্রেনকে সহায়তা। ইউক্রেনকে ৫০ বিলিয়ন (= ১০০ কোটি) ডলার ঋণ দেওয়ার প্রস্তাব পাশ হয়েছে আমেরিকার রাষ্ট্রপতি জো বাইডেনের প্রস্তাবে। রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন এদিনই বলেছেন যে যুদ্ধজোট ন্যাটো কলকাঠি না নাড়লে তিনি ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির আলোচনায় তৈরি। কিন্তু আমেরিকা এবং তার সঙ্গীরা যুদ্ধেই উসকানি দিচ্ছে বলে মত পর্যবেক্ষকদের। নিজেদের দেশে সামরিক সরঞ্জাম নির্মাতা কর্পোরেটরাই তার সুবিধা পাচ্ছে। 
দক্ষিণ ইতালিতে দারিদ্র্য বাড়ছে। তা নিয়ে বৈঠকের মুখে ইতালির পার্লামেন্টে শাসক এবং বিরোধের দ্বন্দ্ব হাতাহাতিতে পৌঁছায় দু’দিন আগে। এক সদস্যকে হাসপাতালে ভর্তি পর্যন্ত করতে হয়। 
ইতালিতে অভিবাসী শ্রমিকরা বেশিরভাগই রওনা দেন আরব দুনিয়ার দেশগুলি থেকে। উত্তর আফ্রিকা এবং এশিয়ার যে দেশগুলি বারবার সংঘাতে ধসে গিয়েছে। যুদ্ধ এবং দারিদ্র্য থেকে রেহাই পেতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশি নৌকায় সাগর পার করার ঝুঁকি নিতে হয় তাঁদের। ইতালি হয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্য দেশে ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায় এই বিপন্নদের। পারাপার করাতে দিতে হয় দালালচক্রকে মোটা টাকাও।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, আরবে সংঘাতের পিছনে বরাবর আমেরিকা এবং পশ্চিমের শিল্পোন্নত দেশগুলির মদত থেকেছে। তারাই এখন জি-৭ গোষ্ঠীতে বসে অভিবাসন এবং মানবপাচার ঠেকানোর আলোচনায় বসেছেন! 
মেলোনি বৈঠকে প্রস্তাব দিয়েছেন, আফ্রিকার এমন দেশগুলিতে বিনিয়োগ বাড়ানো হোক। জি-৭ গোষ্ঠী তার জন্য উদ্যোগ নিতে হবে। ইউরোপ এবং আমেরিকার এ ধরনের উদ্যোগ যদিও বরাবরই বিতর্কিত। বিভিন্ন দেশের প্রাকৃতিক সম্পদে দখলদারির লক্ষ্যও দেখা গিয়েছে বিভিন্ন সময়েই। 
২০২৪’র অর্ধেক শেষ হওয়ার আগেই বিভিন্ন দেশ থেকে ২২ হাজার মানুষ অভিবাসী হয়ে পৌঁছেছেন ইতালিতে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের মানবাধিকার বিভাগ জানিয়েছে ২০১৩ সালে এই সংখ্যা ছিল ১ লক্ষ ৫৭ হাজার। 
অভিবাসী অধিকার আন্দোলনের কর্মীরা জানাচ্ছেন, আমেরিকার রাষ্ট্রপতি জো বাইডেনও একটি বিল পেশ করেছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে। তা পাশ হয়নি। কিন্তু এই দেশগুলি অভিবাসীদের অধিকারকে ছেঁটে ফেলতেই তৎপর। 
জি-৭ গোষ্ঠীতে রয়েছে কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, ব্রিটেন এবং আমেরিকা। এর বাইরে ভারতের মতো বিভিন্ন দেশের নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

Comments :0

Login to leave a comment