Haryana communal violence

বাড়ল মৃত্যু, হরিয়ানায় হিংসা সরকারি মদতে, বলল সিপিআই(এম)

জাতীয়

নুহতে গোষ্ঠী সংঘর্ষে মৃত্যু আরও বাড়ল। মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মিছিল থেকে ছড়ানো প্ররোচনার জেরে সোমবার গোষ্ঠীসংঘর্ষ বাঁধে হরিয়ানার নুহতে।

মঙ্গলবার নুহের লাগোয়া জেলা গুরগাঁওয়ের বাদশাপুরে হিংসা ছড়িয়েছে আবার। একদল লোক ভাঙচুর চালায় রাস্তার পাশে অতি সাধারণ দোকানি এবং বিক্রেতাদের ওপর। ভাঙচুর করা হয় তাঁদের দোকান। 

হরিয়ানা সরকারের ভূমিকার কড়া নিন্দা করেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। ঘটনাকে সংগঠিত অপরাধ আখ্যা দিয়েছে সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো। হরিয়ানার  সিপিআই(এম) নেতৃবৃন্দ বলেছেন, ‘‘সাম্প্রদায়িক শক্তি পরিকল্পনা করে হিংসা ছড়িয়েছে। কোনও ধর্মীয় উদ্দেশ্য ছিল না, কোনও ধর্মীয় অনুষ্ঠানও ছিল না। একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল এলাকায় হিংসা ছড়ানো। বিজেপি সরকার, গোয়েন্দা সংস্থা তো বটেই, এই ঙিছিল থেকে হিংসা ছড়ানোর শঙ্কা জানিয়েছিলেন নাগরিকরা। তবু সরকারি সুরক্ষায় এই মিছিল করতে দেওয়া হয়েছে সঙ্ঘ পরিবারের শাখা বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, বজরঙ দলকে।’’

রাজস্থান সীমান্তবর্তী নুহ ছাড়াও মঙ্গলবার লাগোয়া জেলা গুরগাঁও বা গুরুগ্রামে সব স্কুল এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। মঙ্গলবারও কিছু জায়গায় নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। 

গোরক্ষার নামে একাধিক হত্যায় অভিযুক্ত মনু মানেসরের সাকরেদরা প্ররোচনামূলক ভিডিও ছড়ায়। বলা হয়, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ‘ব্রিজ মণ্ডল জলাভিষেক যাত্রা’-য় থাকছে মনু মানেসর এবং তার তৈরি গোরক্ষক বাহিনী। মাসখানেক আগে হরিয়ানার এই মেওয়াত এলাকাতেই পুড়িয়ে হত্যা করা হয় রাজস্থানের বাসিন্দা দুই মুসলিম যুবককে জুনেইদ ও নাসিরকে। অপরাধীদের ধরার বদলে ছেড়ে রেখেছে হরিয়ানার বিজেপি সরকার। উলটে রাজস্থান সরকারের পুলিশ তদন্তে নামলে বাধা দেওয়া হয়েছে। তার জেরে ক্ষোভ ছিলই। মিছিল এবং মনু মানেসরের পোস্টের জেরে উত্তেজনা তীব্র চেহারা নেয়। 

মিছিল গুরগাঁ থেকে শুরু করিয়েছিলেন গুরগাঁওয়ের বিজেপি সভাপতি গার্গী কক্কর। মিছিল পাশের জেলা নুহের খেড়লা মোড় এলাকায় পৌঁছালে উত্তেজনা তীব্র হয়। অভিযোগ, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং বজরঙ দলের কর্মীরা মুসলিম ব্যবসায়ীদের দোকান এবং রাস্তার ধারে থাকা গাড়িতে আগুন দেয়। মুসলিম প্রধান নুহ-তে প্রতিবাদ জানান বহু বাসিন্দা। আহত হয়েছেন পুলিশকর্মীরা, নাগরিকরা। সোমবারই দুই পুলিশকর্মীর মৃত্যুর খবর এসেছিল। 

এদিন সতর্কতা জারি রয়েছে ফরিদাবাদ, পলওয়াল এবং রেওয়ারি জেলাতেও। ইন্টারনেট বন্ধ রয়েছে সোহনা, পাতৌদি, মানেসরে। 

কংগ্রেস নেতা দীপেন্দর সিং হুদা বলেছেন, ‘‘হরিয়ানার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল ভিজ নিজে স্বীকার করেছেন যে গোটা ঘটনা পরিকল্পিত। প্রশ্ন হচ্ছে সরকার তা’হলে কী করছিল’’।

সিপিআই(এম) নেতা সুরেন্দ্র মালিক বলেছেন, ‘‘এই এলাকায় গোরক্ষার নামে একের পর এক খুন চলেছে। যে কাউকে গোপাচারের নামে স্বঘোষিত বাহিনী অপহরণ করেছে। তুলে নিয়ে খুন করেছে। হরিয়ানায় বিজেপি সরকার আসীন হওয়ার পর থেকে এই পরিস্থিতি চলছে।’’ নাগরিকদের কাক্ষে সম্প্রীতি এবং একতা দৃঢ় করার আহ্বান জানিয়েছে সিপিআই(এম)। 

হরিয়ানা রাজ্য সম্পাদক বলেছেন, রাজ্য সরকারের কাছেও দাবি জানাচ্ছি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার আগে ব্যবস্থা নিন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ব্যবস্থা নেওয়ার বদলে উসকানি দিচ্ছেন। মণিপুর মডেল সারা দেশে চালু করতে চাইছে বিজেপি। বিদ্বেষ এবং মেরুকরণ ছাড়া বিজেপি’র হাতে আর কিছু নেই।   

Comments :0

Login to leave a comment