Ration Scam

মমতা, অভিষেক সব জানেন, বললেন জ্যোতিপ্রিয়

রাজ্য


‘আমি চক্রান্তের শিকার। মমতাদি-অভিষেক সব জানে।’ শুক্রবার সকালে স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য সল্টলেক সিজিও কমপ্লেক্স থেকে বার করতেই সংবাদ প্রতিনিধিদের লক্ষ্য করে এমনটা জানালেন রেশন দুর্নীতিতে অভিযুক্ত জ্যোর্তিপ্রিয় মল্লিক ওরফে বালু। 
বালুর মন্তব্য এদিন মমতা ব্যানার্জি কিংবা অভিষেক ব্যানার্জি’কে জিজ্ঞাসাবাদের পথকে প্রশস্থ করে দিলো। ইডি’র গোয়েন্দারা এদিন বালু’কে একটু ছেড়েই রেখেছিলেন। আর তার জেরেই সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়ের সুযোগ পান তিনি। একটি প্রশ্নের উত্তরে এদিন বালু দাবি করেছেন, ‘আমি দলের সঙ্গে ছিলাম, আছি এবং থাকব।’ এমনকি তিনি এদিন খুব তাড়াতাড়ি ছাড়া পাবেন বলে দাবি করেছেন। 
নিজেকে ‘মুক্ত’ বলে দাবি করার পর জ্যোতিপ্রিয়কে বলতে শোনা গেল, ‘আর চার দিন পর...।’ বক্তব্যটি সম্পূর্ণ শেষ না করেই বালু’কে গাড়িতে উঠতে হয়। গাড়িতে ঢুকেও তাঁর একটি কথা সকলের কানে ঘটকা লাগায়। বালু এদিন দাবি করেছেন, ‘দু’দিনের মধ্যে সব প্রকাশ হবে।’ শুক্রবার লাগাতার দু’দিন এবং‌ চার দিনের কথা বনমন্ত্রী কেন বারংবার বললেন তা এদিন স্পষ্ট হয়নি। যদিও গত সোমবার একটি সংবাদমাধ্যমে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের মেয়ে প্রিয়দর্শিনী দাবি করেছেন যে, তিনি এবং তার বাবা তদন্তের মুখোমুখি হতে প্রস্তুত।
গত শুক্রবার ২৭ অক্টোবর এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) গ্রেপ্তারীর পর প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী দাবি করেছিলেন, বিজেপি এবং রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তাঁকে ফাঁসিয়েছেন। সেই অভিযোগই সপ্তাহ শেষেও বহাল রাখলো বালু। কিন্তু এদিন রেশন দুর্নীতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ও সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক ব্যানার্জি’র নাম টেনে আনাটা রাজনৈতিকভাবে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। শুক্রবার জ্যোতিপ্রিয়কে প্রশ্ন করা হয়, দল কি তাঁর সঙ্গে আছে ? জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘অবশ্যই আমার সঙ্গে আছে।’ কিন্তু বারাসতের তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার কিংবা বারাসতের বিধায়ক চিরঞ্জীত চক্রবর্তীর বক্তব্য অন্য কথা বলছে।
কাকলি ঘোষ দস্তিদার বৃহস্পতিবারেই জ্যোতিপ্রিয়’র সঙ্গে ‘দূরত্ব’বজায় রেখে বলেছিলেন –‘ব্যক্তি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক কী করেছেন, তার জন্য দলের ভাবমূর্তি কেন নষ্ট হবে ?’ মন্ত্রীর আসনে বসে দুর্নীতি চালালে যেন দলের কিছু নয়। কাকলি ঘোষ দস্তিদারের মতো তৃণমূল দলে থেকে রাজনীতি করতে ভালো লাগছে না পরিষ্কার মন্তব্য করেছেন চিরঞ্জীত চক্রবর্তী। 
তিনি বলেছিলেন, গোরু চোর, বালি চোর, রেশন চোরদের সঙ্গে রাজনীতি করা যায় না বলে। উত্তর ২৪পরগণার তৃণমূল নেতাদের দিয়ে যখন মমতা ব্যানার্জি ধীরে ধীরে কোনায় সরিয়ে দেওয়ার ছক করেছেন, তার পালটা এদিন দিয়ে দিলেন বালু। তৃণমূল নেত্রীর শুরুর সঙ্গী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের রাজনীতি বয়স যে দীর্ঘ তা এদিন ‘মমতা-অভিষেক’-এর নাম উল্লেখে স্পষ্ট হয়ে গেলো। তাঁরা ‘সব জানেন’ অর্থ কোথা থেকে কোন টাকা কোথায় গেছে সেটা তৃণমূল কমান্ডের অজানা নয়। ইডি হয়ত এই সুযোগটাই চাইছিল। অন্তত রেশন দুর্নীতিতে যাতে তৃণমূলের প্রথম সারির দুই নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা যায়। এরপরে তো প্রমাণ যোগাড়ের জন্য সময় পড়ে আছে।


 

Comments :0

Login to leave a comment