Bangladesh Army

১৫ সেনা আধিকারিককে কারাগারে পাঠাল বাংলাদেশের আদালত

আন্তর্জাতিক

মীর আফরোজ জামান: ঢাকা

আওয়ামী লীগের দেড় দশকের শাসনকালে গুম-খুনের মাধ্যমে সংঘটিত মানবতা বিরোধী অপরাধের মামলায় হেফাজতে থাকা ১৫ সেনা আধিকারিককে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে এই নির্দেশ দেন।
এই ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
এদিন সকাল থেকে আদালত চত্বরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), র‍্যাব ও পুলিশ মোতায়েন ছিল। বুধবার সকাল ৭টার পর এই সেনা আধিকারিকদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। অভিযুক্ত সেনা আধিকারিকরা একটি সবুজ রঙের প্রিজন ভ্যানে করে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে আনা হয়।
এদিন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) প্রধান প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, দিনের শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনাল মোট ১৫ জন সেনা আধিকারিককে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে। এই আধিকারিকদের কোন কারাগারে রাখা হবে, তা সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জেল কর্তৃপক্ষ ঠিক করবে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ আজ সে তিনটি মামলার অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়েছে, এসব মামলায় অভিযুক্ত রয়েছেন ২৫ বর্তমান ও প্রাক্তন সেনা আধিকারিক সহ মোট ৩২ জন।
যেসব সেনা আধিকারিকদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন র‍্যাবের প্রাক্তন অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার কে. এম. আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন এবং কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (বর্তমানে অবসরকালীন ছুটিতে)। এ ছাড়া র‍্যাবের গোয়েন্দা শাখার প্রাক্তন পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম এবং বিজিবির প্রাক্তন কর্মকর্তা মেজর মো. রাফাত-বিন-আলমকেও কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া ডিজিএফআইয়ের প্রাক্তন তিন পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকীকেও জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
এদিকে সেনা আধিকারিকদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা ঘিরে রাজধানীর কাকরাইল, মৎস্য ভবন, পল্টনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ভোর থেকেই ট্রাইব্যুনাল ও হাইকোর্টের মাজারগেট এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। সেখানে পুলিশ ও র‍্যাবের পাশাপাশি বিজিবি এবং সেনাবাহিনীর সদস্যদেরও মোতায়েন থাকতে দেখা গেছে। নিরাপত্তার বলয়ে মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা এলাকা।

Comments :0

Login to leave a comment