MODI KASHMIR

বিক্ষোভ লাদাখে, কাশ্মীরের ‘হৃদয় জয়ের’ ভাষণ মোদীর, মনোভাবে খেদ তারিগামির

জাতীয়

লাদাখে পূর্ণ রাজ্যের স্বীকৃতির দাবিতে এমনই মেজাজ বিক্ষোভের।

‘হৃদয় জয়ের চেষ্টা করছি’, শ্রীনগরের ভাষণে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দাবি করেছেন, সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের পর বদলে গিয়েছে জম্মু ও কাশ্মীর। কিন্তু পুরো চুপ থেকেছেন লাদাখে ঠিক আগের দিনই তাঁর সরকারের বিরুদ্ধেই ভেঙে পড়া বিক্ষোভের বিষয়টিতে। 
৩৭০ ধারায় পূর্বতন জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা ছিল। ২০১৯’র ৫ আগস্ট সেই মর্যাদা কেড়ে নিয়েছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। উলটে পূর্ণ রাজ্যকে দু’ভাগে ভেঙে দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গড়েছে। জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখ। সেই সিদ্ধান্ত পালটানোর দাবিতে জোরালো আন্দোলন চলছে লাদাখে। 
কেন্দ্রের শাসন তুলে নেওয়ার দাবিতে বুধবার, ৬ মার্চ, লেহ-তে হয়েছে বিপুল বিক্ষোভ। যার কেন্দ্রে ছিলেন পরিবেশ কর্মী এবং প্রযুক্তিবিদ সোনম ওয়াংচুক। বৃহস্পতিবার থেকে আমরণ অনশনে বসেছেন ওয়াংচুক।
৩৭০ ধারা বাতিলের পর এদিনই প্রথম কাশ্মীরে গেলেন মোদী। শ্রীনগরে বকশি স্টেডিয়ামে বিজেপি’র হয়ে আসন ভরানোর পুরো উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। খেদ উগরে দিয়েছেন প্রাক্তন বিধায়ক এবং সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মহম্মদ ইউসুফ তারিগামি। 
তারিগামির মন্তব্য, ‘‘পুরো সরকারি যন্ত্রই তো বিজেপি’র প্রচারকের কাজ করছে! সরকারি কর্মী, আধিকারিক তো বটেই, এমনকি বিভিন্ন প্রকল্পের উপভোক্তাদের আসতে বাধ্য করা হয়েছে সমাবেশে। দিল্লি আরও দূরে সরে যাচ্ছে মানুষের থেকে।’’
জম্মু এবং কাশ্মীরের প্রাক্তন দুই মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি এবং ওমর আবদুল্লা সোশ্যাল মিডিয়া এক্স(সাবেক টুইটার)-এ লিখেছেন, ‘‘ভোর সাড়ে চারটে পাঁচটার প্রবল ঠান্ডায় সরকারি কর্মচারীদের জমায়েত করিয়ে বাস ভরিয়েছে প্রশাসন। জোর করে তাঁদের সভায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অনুপস্থিত থাকলে শো’কজের হুমকি দেওয়া হয়েছে।’’
লাদাখে বিক্ষোভ চলছে দীর্ঘদিন ধরে। বারেরবারেই মানুষকে নামতে হচ্ছে রাস্তায়। একটি পর্বে ওয়াংচুককে গৃহবন্দি করে কেন্দ্রীয় প্রশাসন। তবে আন্দোলন দমেনি। কেন্দ্রীয় শাসনে খবরদারি এবং পরিকাঠামোর তৈরির নামে উন্নয়নের ধারায় পরিবেশ বিপন্ন হওয়ার অভিযোগ উঠছে বারবার। বিপন্ন হচ্ছে বহু মানুষের স্বাভাবিক জীবিকা। 
৪ মার্চ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সঙ্গে বৈঠকে আলোচনা ভেস্তে দেওয়ার পরই লাদাখে ক্ষোভের তীব্রতা বেড়েছে। পূর্ণ রাজ্যের দাবি জানাচ্ছে বিভিন্ন সংগঠনের মঞ্চ লেহ অ্যাপেক্স বডি (এলএবি) এবং কারগিল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স (কেডিএ)। সংবিধানের ষষ্ঠ তপসিলের আওতায় রেখে স্বশাসনের সাংবিধানিক স্বীকৃতি অথবা পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদার দাবি নিয়ে আলোচনা হলেও অমিত শাহের মন্ত্রক সিদ্ধান্ত জানায়নি। 
মোদী তা-ও বলেছেন, ‘‘কাশ্মীরীদের হৃদয় জয়ের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’’ তাঁর দাবি, ‘‘৩৭০ ধারা বাতিলের পর মানুষ মুক্ত হাওয়ায় শ্বাস নিতে পারছেন। সারা দেশের উন্নয়নের সঙ্গে তালি মিলিয়ে চলার মতো সমান জমি তৈরি হয়েছে। ৩৭০ ধারার নামে দশকের পর দশক ভুল বোঝানো হয়েছে। কংগ্রেস এবং তার সহযোগীরা ভুল বুঝিয়েছে।’’
তারিগামির প্রতিক্রিয়া, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর এমন মনোভাব মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার এবং সঙ্গত দাবির ওপর আরও গভীর আঘাত হানবে।’’

Comments :0

Login to leave a comment