MD Salim Press Meet

জবাব দিতে তৈরি জনতা, পঞ্চায়েত ভোট পিছাচ্ছে বিজেপি-তৃণমূল: সেলিম

রাজ্য

MD Salim Press Meet ছবির ক্যাপশন - সিপিআই(এম) কোচবিহার জেলা দপ্তরে সাংবাদিক বৈঠকে মহম্মদ সেলিম। ছবি -অমিত কুমার দেব


অমিত কুমার দেব 


পঞ্চায়েতে রাজনৈতিক লড়াই করবার জন্য প্রস্তুত এরাজ্যের সমস্ত মানুষ। পিছাতে চাইছে কেবল বিজেপি এবং তৃণমূল। বিজেপি আদালতে গিয়েছিল পঞ্চায়েত নির্বাচন পিছিয়ে দিতে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গিয়েও পিছাতে পারেনি। আরেকদিকে তৃণমূলও এখন নির্বাচন পিছোতে চাইছে। 
শনিবার কোচবিহারে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচন প্রসঙ্গে এ কথা বলেছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। সিপিআই(এম)’র স্লোগান তুলে সেলিম বলেন, ‘‘চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি, চ্যালেঞ্জ নাও, পঞ্চায়েতের তারিখ দাও।’’

সেলিম বলেন, অপরাধীদের বিরুদ্ধে লড়তে হলে তার রং, তার গোত্র, তার জাতি, তার ধর্ম দেখতে হয় না। আর এটা যদি দেখা হয়, তাহলে অপরাধীদের স্বর্গরাজ্য তৈরি হয়। আজ আমাদের পশ্চিমবঙ্গে তাই হচ্ছে।  পালটা ঐক্যবদ্ধ হচ্ছেন এই রাজ্যের সাধারণ মানুষ। প্রতিদিন কাকদ্বীপ থেকে কোচবিহার লাল ঝাণ্ডায় যোগ দিচ্ছেন তাঁরা। 
শনিবার সিপিআই(এম) কোচবিহার জেলা দপ্তরে হয়েছে এই সাংবাদিক সম্মেলন। পার্টির কোচবিহার জেলা সম্পাদকমন্ডলী এবং জেলা কমিটির মিটিংয়ে অংশ নিতে কোচবিহারে এসেছেন তিনি। সাংবাদিক বৈঠকে মহম্মদ সেলিম ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সিপিআই(এম) কোচবিহার জেলা সম্পাদক অনন্ত রায়, পার্টি নেতা অলকেশ দাস, জীবেশ সরকার প্রমুখ। 

অনন্ত রায় এদিন বলেন, গোটা কোচবিহার জেলা জুড়ে রেগার প্রাপ্য মজুরি পাননি রেগা শ্রমিকরা, আবাস যোজনার ঘর গরিব মানুষ পাচ্ছেন না, শৌচাগার নির্মাণের জন্য জেলা জুড়ে উপভোক্তাদের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা করে নিয়েছেন শাসক দলের পঞ্চায়েত সদস্যরা, কিন্তু একটি শৌচাগারও নির্মাণ হয়নি আজ পর্যন্ত। শুধু তাই-ই নয়, জেলার বিভিন্ন গ্রামে পুকুর খননের নামে টাকা লুট করেছেন শাসকদলের প্রতিনিধিরা। এ মাসের ৪ তারিখ জেলা পরিষদ অভিযানে শামিল হয়েছিল বামফ্রন্ট। ২৫ মে কোচবিহারের জেলাশাসকের দপ্তর অভিযানে শামিল হবেন জেলার ছাত্র-যুব-মহিলারা।
সেলিম বলেন, পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকার জনগণের হাতে ক্ষমতা তুলে দিতে বিকেন্দ্রীকরণের নীতির বাস্তবায়নও করেছে। কিন্তু এ রাজ্যে তৃণমূল সরকার আসার পর থেকেই এই গণতান্ত্রিক কাঠামোকে ভেঙে দেওয়া হয়েছে। পঞ্চায়েত অগণতান্ত্রিকভাবে দখল করে তাকে লুটের রাজত্বের হাতিয়ার করেছে। আর বিজেপি কখনই বিকেন্দ্রীকরণ চায়নি। কারণ তারা ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করতে চায়, মানুষকে তারা বিশ্বাস করে না।

এদিন মহম্মদ সেলিম কালিয়াগঞ্জ প্রসঙ্গে বলেন, হিন্দু-মুসলমান, মন্দির-মসজিদ, আদিবাসী-রাজবংশী, তপশিলি-নেপালি, পাহাড়ি-সমতল এভাবে ভাগ করার চেষ্টা হচ্ছে। এই বিভাজনের রাজনীতির ফলাফল কি হয়, তা মণিপুরে দেখা যাচ্ছে। উত্তরবঙ্গেও নানা ধর্মে, নানা বর্ণ, নানা ভাষা, নানা গোষ্ঠীর মানুষ রয়েছেন। আর ভোটের জন্য তাদেরকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই রাজ্যে কুর্মী এবং আদিবাসীদের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এই মুহূর্তে পঞ্চায়েত নির্বাচনকে ঠেকিয়ে দেওয়ার জন্য দাঙ্গা পরিস্থিতি তৈরি করা হচ্ছে। এই রাজনীতি বিপজ্জনক। 
তিনি বলেন, এ রাজ্যের গরিব মানুষের ঘরের টাকা, গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদ স্তরেও ব্যাপক দুর্নীতি, পৌরসভাগুলিতে চুরি হচ্ছে। বিশেষ করে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পের টাকা চুরি হবার পরেও কেন আগে এই এজেন্সিগুলি তদন্তে নামেনি? আসলে বামপন্থীরা যখন বলল গ্রাম জাগাও, চোর তারাও। এরপরই গ্রাম জাগলো, তখনই কেন্দ্রীয় সরকারের এই তদন্তকারী এজেন্সিগুলির ঘুম ভাঙলো। তিনি বলেন, আমরা ঘুম ভাঙিয়েছি।  বাংলার মানুষ ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে তাদের চোখ খুলতে বাধ্য করেছেন। 

Comments :0

Login to leave a comment