MD SALIM POILA BOISHAKH AGITATION

নিয়োগ দুর্নীতির বিচারপতিদের
বদলি হলে আন্দোলন: সেলিম
দেখুন ভিডিও

রাজ্য

MD SALIM POILA BOISHAKH AGITATION শনিবার নববর্ষে চাকরি প্রার্থীদের মঞ্চে মহম্মদ সেলিম।

‘‘যে বিচারপতিদের নির্দেশে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআই ইডি তদন্ত হচ্ছে তাঁদের অন্য আদালতে যদি সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় তবে তীব্র আন্দোলন হবে।’’ 

শনিবার নববর্ষের দিনে বিকেলে মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির পাদদেশে বঞ্চিত যোগ্য চাকরি প্রার্থীদের সাথে দেখা করে একথা বললেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। সেলিম বলেন, ‘‘যতদিন না পর্যন্ত রাজ্যে যোগ্য চাকরি প্রার্থীরা কাজ পাচ্ছে ততদিন রাজ্যে কোন উৎসবের পরিবেশ থাকতে পারে না। আশা রাখি অতীতে সব কালিমা মুছে এই বছর ন্যায় প্রতিষ্ঠা হবে।’’ 

এসএসসি টেট সহ একাধিক নিয়োগের দুর্নীতির বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন যোগ্য চাকরি প্রার্থীরা। কলকাতা হাই কোর্টের পক্ষ থেকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার আগে থেকেই, ৭৬২ দিন ধরে, রাস্তায় বসে তারা নিয়োগের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। এই সময়কালে আদালতের দারস্থ যেমন তারা হয়েছেন তেমন ভাবেই রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করেছেন।

শনিবার সেলিম বলেন, ‘‘তৃণমূল এবং বিজেপি নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া করে চলছে। তৃণমূল বিচারপতিকে সিপিআই(এম) বলে আক্রমণ করছে।’’ তিনি বলেন, ‘‘শুভেন্দু অধিকারি, অমিত শাহদের মুখে দুর্নীতির কথা মানায় না। নোট বন্দির সময় ৮০০ কোটি টাকার কেলেঙ্কারি করেছেন অমিত শাহ। শুভেন্দু যখন তৃণমূলে ছিল তখন শিক্ষকের চাকরি দেওয়ার নাম করে পরিবহন দপ্তরে চাকরির নাম করে টাকা তুলেছে। কাঁথি সমব্যায় ব্যাঙ্কের টাকা লুঠ করেছে।’’

শারদোৎসব, দীপাবলি, ভাই ফোঁটা, ঈদ। প্রায় সব উৎসবেই রাস্তার ধারে চাকরির দাবিতে বসে থাকা চাকরি প্রার্থীদের সাথে গিয়ে দেখা করেছেন সেলিম। উৎসবের আনন্দ তাঁদের সাথেই তিনি ভাগ করে নিয়েছেন। এদিনও তার ব্যাতিক্রম হয়নি। শনিবারের তীব্র গরমের পড়ন্ত দুপুরে নববর্ষের দিন আপার প্রাইমারি, টেট, গ্রুপ ডি’র বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীদের সাথে দেখা করেন এবং কথাও বলেন। 

সেলিমকে কাছে পেয়ে ফের এদিনও চাকরি প্রার্থীরা নিজেদের দাবি তুলে ধরেন। সেলিমও তাঁদের আশ্বাস দেন যে আদালতে যেমন লড়াই চলছে, তেমন দুর্নীতির বিরুদ্ধে রাস্তায় থেকে লড়াই চালিয়ে যাওয়া হবে। দুর্নীতির সাথে যুক্ত সবাই যাতে শাস্তি পায় সেই দাবিতে আন্দোলন আরও তীব্র হবে বলে জানিয়েছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক। 

গ্রুপ ডি চাকরি প্রার্থীদের ধর্না মঞ্চে সেলিম বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নিজের দপ্তরের অধীনে পড়ে গ্রুপ ডি’র নিয়োগ। সেই নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে। এর দায় তিনি এড়িয়ে যেতে পারেন না। মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন, স্কুল সার্ভিস কমিশন তাঁর অধীনে নয় বলে নিজের দায় এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা তিনি করেছেন। কিন্তু এই ক্ষেত্রে তিনি তা এড়িয়ে যেতে পারেন না।’’ 

এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সেলিম বলেন, ‘‘ব্যথিতী হৃদয় নিয়ে আজ চাকরি প্রার্থীদের নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাতে এসেছি। যারা টেট পাশ করেছে, স্কুল সার্ভিস কমিশন পাশ করেছে তারা রাস্তায় বসে আছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সরকার এখন প্রমান, সাক্ষী সব লোপাট করার চেষ্টা করছে। আমার মতে সরকারের এখন উচিত এই সব না করে যেই ফলাফল আটকে রয়েছে তা প্রকাশ করা। সিট আপডেট করার, প্যানেল প্রকাশ করার। আমাদের সবার একটাই দাবি আর তা হচ্ছে সুষ্ঠু নিয়োগ এবং দ্রুত নিয়োগ।’’ 

উল্লেখ্য মুর্শিদাবাদের বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার বাড়িতে সিবিআই তল্লাসি চলাকালিন মোবাইল ফোন পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়। সেই ফোন খুঁজতে গেলে ঝোপের মধ্যে থেকে বস্তা ভর্তি অ্যাডমিট কার্ড এবং মার্কশিট উদ্ধার হয়েছে। এই প্রসঙ্গে মহম্মদ সেলিমকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘একজন বিধায়ক নয়। এটা একটা প্রতীক মাত্র। তৃণমূল একটা দুর্নীতিতন্ত্র তৈরি করেছে। আমাদের একটাই দাবি চোর, দুর্নীতিগ্রস্তদের শাস্তি চাই।’’  

২৩৬ দিন ধরে মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির সামনে অবস্থান চালিয়ে যাচ্ছেন গ্রুপ ডি চাকরি প্রার্থীরা। তাঁদের দাবি, লেখা পরীক্ষায় এবং ইন্টারভিউতে যারা পাশ করেছেন তাদের নিয়োগ হয়নি। ২০১৬ সালে ৬০ হাজার গ্রুপ ডি নিয়োগের কথা হলেও ৫৪২২ জনের একটি নিয়োগ তালিকা প্রকাশ করা হয়। সেই নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে বলে আদালতে অভিযোগ জানিয়েছেন চাকরি প্রার্থীদের। 

Comments :0

Login to leave a comment