US CUBA

কিউবা সন্ত্রাসবাদে মদত দেয় না, চিঠি বাইডেনকে

আন্তর্জাতিক

‘সন্ত্রাসবাদে মদতদাতা রাষ্ট্রের তালিকা থেকে সরান কিউবাকে। কিউবা ঐতিহাসকিভাবে সন্ত্রাসবিরোধী আন্তর্জাতিক সমঝোতা পালন করছে দীর্ঘদিন।’ 

এই ভাষায় আবেদন জানিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি জো বাইডেনকে চিঠি দিলেন সে দেশেরই একাধিক ধর্মীয় সংগঠন এবং গোষ্ঠী। বাইডেনের সঙ্গে দেখাও করেছেন তাঁরা। 

অর্থনৈতিক অবরোধ আছেই। তার ওপর ‘সন্ত্রাসবাদে মদতদাতা রাষ্ট্র’ ঘোষণা করে বেড়েছে নিষেধাজ্ঞার মাত্রা। প্রায় কুড়িটি সংগঠনের যৌথ আবেদনপত্রে ‘গভীর উদ্বেগ’ জানানো হয়েছে এমন বিধিনিষেধে। 

চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘‘কিউবার জনগণকে অকারণে গভীরতর যন্ত্রণার মধ্যে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। জনস্বাস্থ্য, জনকল্যাণ এবং সামাজিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে মারাত্মক প্রভাব পড়ছে।’’ এই চিঠি প্রকাশ করেছে কিউবার সংবাদ প্রতিষ্ঠান ‘প্রেনসা লাতিনা’।

২০১৫’র জানুয়ারিতে বারাক ওবামার রাষ্ট্রপতি পদে আসীন থাকার সময় কিউবার সঙ্গে সমঝোতার উদ্যোগ নেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তার অন্যতম কারণ, লাতিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশে মার্কিন কিউবানীতি সমালোচনার মুখে পড়ছিল। সন্ত্রাসবাদে মদতদাতা রাষ্ট্রের তালিকা থেকে সরানো হয় কিউবাকে। 

কিন্তু ডোানাল্ড ট্রাম্প তাঁর মেয়াদের শেষদিকে, ২০২১-এ, ফের কিউবাকে ওই তালিকায় আনেন। পরাজিত হন ট্রাম্প, নির্বাচনে জয়ী হন বাইডেন। কিন্তু কিউবাকে তালিকায় রেখে দেওয়া হয়েছে।  

ব্যাপটিস্ট অ্যালায়েন্স, আর্মেনিয়ান অর্থোডক্স চার্চ, চার্চ ওয়ার্ল্ড সার্ভিস বা ফ্লোরিডা কাউন্সিল অব চার্চেসের মতো ধর্মীয় সংগঠনগুলি মার্কিন রাষ্ট্রপতিকে মনে করিয়েছেন তাঁর নিজেরই ঘোষিত বিদেশনীতির প্রসঙ্গ। রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমে ডেমোক্র্যাট বাইডেন আশ্বাস দিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক স্তরে সৌভ্রাতৃত্বের বিদেশনীতি অনুসরণ করা হবে। 

চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘‘আপনার ঘোষিত বিদেশনীতি অমান্য করা হচ্ছে কিউবাকে এমন তালিকায় রেখে।’’ বলা হয়েছে, ‘‘কিউবার দিকে তাকালে স্পষ্ট হয়ে যায় যে এই রাষ্ট্রকে সন্ত্রাসবাদে মদতদাতা বলা মানে আসলে কুৎসা ছড়ানো।’’ 

মার্কিন ধর্মীয় সংগঠনগুলি যদিও জানিয়েছে কোনও রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে এই উদ্যোগ নয়। মানবিকতার দিক থেকেই ভয়াবহ অবস্থার দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে কিউবাকে।

ষাট দশকের বেশি সময় ধরে কিউবার ওপর অবরোধ চাপিয়ে রেখেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বামপন্থী এবং কমিউনিস্ট আন্দোলনের কাছে এই লড়াই সরাসরি সমাজতান্ত্রিক কিউবার সঙ্গে সাম্রাজ্যবাদী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই। কিন্তু তার বাইরেও কিউবার গ্রহণযোগ্যতা ছড়িয়ে রয়েছে বিশ্বজুড়ে। 

বস্তুত রাষ্ট্রসঙ্ঘে কিউবাকে একঘরে করার একের পর এক প্রস্তাব মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার সহযোগীরা পেশ করলেও পরাজিত হয়েছে। জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনে কিউবার ভূমিকা স্বীকৃত ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলিতেও। 

অর্থনৈতিক অবরোধ নীতি নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একতরফা নিজের ইচ্ছায় কোনও দেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাধা তৈরি করে। কিউবার ক্ষেত্রে বাধা আরও বাড়ানো হয়েছে সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্রের তালিকায় না ফের তুলে।  

 

Comments :0

Login to leave a comment