AIADWA State Conference

মহিলাদের সামাজিক এবং অর্থনৈতিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে চাই লাগাতার সংগ্রাম, এমনই উঠে এলো প্রতিনিধি আলোচনায়

রাজ্য

পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুই লড়াকু কমরেড মন্দারমনি চোরে এবং শুকু চোরে কে সংবর্ধনা দেওয়া হলো AIDWA রাজ্য কমিটির পক্ষ থেকে ।

পূজা বোস, অরিজিৎ মণ্ডল : কলকাতা

লাগাতার সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে, সামাজিক ও অর্থনৈতিক নিপীড়ন রুখতে সংগ্রামকেই পথ করেছেন রাজ্যের মহিলারা। সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি ৩০ তম রাজ্য সম্মেলনে প্রতিনিধি আলোচনায় জানালেন মহিলা সংগঠনের কর্মীরা। অতীতের অভিজ্ঞতা ও বর্তমানের বাস্তবতাকে পাথেয় করেই সংগ্রামের রূপরেখা তৈরি হবে সম্মেলনের মঞ্চ থেকে। 
সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে বিভিন্ন জেলায় প্রতিনিধিরা খসড়া প্রতিবেদনের ওপর আলোচনা করেন। পুরুষতান্ত্রিক সমাজের শুধুমাত্র সামাজিক অর্থনৈতিক ভাবে শোষিত হচ্ছেন মহিলারা তা নয়। বর্তমানে গার্হস্থ হিংসাও বারছে সমানতালে। মহিলা সমিতি দৃঢ়ভাবে লাঞ্ছিত মহিলাদের পাশে থাকার অঙ্গীকার নিয়েছে এই সময় কালে। আইনি সহায়তা কেন্দ্র একাধিক জেলায় খোলা হয়েছে মহিলা সমিতির পক্ষ থেকে। 
মুর্শিদাবাদের এক প্রতিনিধির আলোচনায় উঠে এসেছে তাদের জেলার মহিলাদের করুন কাহিনী। তার কথায় জেলার একাধিক গ্রাম প্রায় পুরুষশূন্য। জমি দখলের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে রাজ্যের শাসক দল। মহিলাদের ১০০ দিনের কাজ নেই। অর্থনৈতিক ভাবেও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন তারা। যার ফলে জাঁকিয়ে বসছে মাইক্রোফিনান্সের দাপট। অতীতে স্বনির্ভর গোষ্ঠী গুলি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল গ্রামীণ মহিলাদের অর্থনীতির উন্নতি সাধনের জন্য। ২০১১ সালের পর থেকে এই গোষ্ঠীগুলিকে ধ্বংস করে তা দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করতে থাকে তৃণমূল। আলোচনায় উঠে এসেছে মহিলা সমিতিকে এই গোষ্ঠী ও সেলফ হেল্প গ্রুপ গুলিকে পুনর্জাগরিত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ লড়াইয়ের ভূমিকা নিতে হবে। 
পশ্চিম বর্ধমানের এক প্রতিনিধি তার আলোচনায় বললেন গোটা বিশ্ব জুড়েই দক্ষিণপন্থীদের আক্রমণ বর্তমানে শুধু দৈহিক বা মানসিক নয়। সাংস্কৃতিকভাবেও তারা আক্রমণ করার চেষ্টা করছে প্রতিনিয়ত। যার উদাহরণ সম্প্রতি বাংলাদেশে মুসলিম মৌলবাদীদের আক্রমণের শিকার হতে হয়েছে ছায়ানট ও উদীচীর মত সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী। ভাঙা হয়েছে একাধিক দৈনিক সংবাদপত্রের দপ্তর। 
যখন এই ঘোর সংকট ঠিক সেই সময়ই আলোর রেখাও রয়েছে। পুঁজিবাদ তার সংকট থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য প্রতিদিন তার চরিত্র বদল করছে আর এই চরিত্র বদলের ফলেই তাদের আগ্রাসন আরো প্রকট হয়ে উঠছে। খোদ আমেরিকাতেই শ্রমজীবী মানুষ বিকল্প খুঁজছেন যারই উদাহরণ মামদানীর জয়।
বিজেপি আরএসএস এর বিভাজনের রাজনীতি তা গ্রামের মানুষকে গ্রাস করছে এবং তৃণমূলের দুর্নীতির ফলে তা মানুষের মনে স্থান পাচ্ছে। এই দুই রাজনীতিকেই হারিয়ে মহিলা সমিতি নৈমিত্তিক আন্দোলনের মাধ্যমে নারী মুক্তি ও সম্ভবাধিকারের প্রশ্নে লড়াই সংঘটিত করুক এমন উঠে এসেছে প্রতিনিধিদের আলোচনায়। 
দার্জিলিং এর প্রতিনিধি আলোচনায় উল্লেখ করেন গার্হস্থ হিংসা ও মানসিক আক্রমণের পাশাপাশি মহিলা সমিতিরই উচিত মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজ করার। বর্তমান সময়ে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত মহিলাদের পাশে দাঁড়াতে না পারলে মহিলা সমিতির প্রাথমিক কাজের এটাই হওয়া উচিত। এছাড়াও শোষণ মুক্তির সংগ্রামে মেহেনদী মানুষের পাশাপাশি অতীতেও মহিলারা সামনের সারিতে ছিলেন আন্দোলনের রূপরেখা তৈরি করে মহিলাদের সেই লড়াইয়ে সমানভাবে অংশগ্রহণ করতে হবে।

Comments :0

Login to leave a comment