নিয়োগ ঘিরে অস্বচ্ছতা ধরা পড়েনি, চাকরিহারা এমন শিক্ষকদের, আপাতত স্কুলে যাওয়ার অনুমতি দিল সুপ্রিম কোর্ট। সেই সঙ্গে ৩১ মে’র মধ্যে নতুন করে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করে হলফনামা দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার এবং স্কুল সার্ভিস কমিশনকে।
ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার বিষয়টি বিবেচনা করে বৃহস্পতিবার এই নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
জানা গিয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট শিক্ষাকর্মীদের স্কুলে ফেরার অনুমতি সুপ্রিম কোর্ট দেয়নি। ‘টেন্টেড’ বা যাদের নিয়োগ নিয়ে অস্বচ্ছতা রয়েছে, তাদের স্কুলে না ফেরানোর নির্দেশও রাজ্যকে দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
রাজ্যে স্কুলে নিয়োগের বিপুল দুর্নীতি এবং জালিয়াতিতে প্রায় ২৫ হাজার ৭০০ নিয়োগ খারিজ করতে হয়েছে সুপ্রিম কোর্টকে। কলকাতা হাইকোর্টের রায়কেই মান্যতা দিয়েছে শীর্ষ আদালত। স্কুল সার্ভিস কমিশন, সরকার এবং পর্ষদের যৌথ কার্যক্রমে কোনও যোগ্য-অযোগ্য তালিকা আদালতে পেশ করা হয়নি। তার ফলে কাজ হারিয়েছেন যোগ্যতার বিচারে উত্তীর্ণরাও। কমিশন আদালতে জানায় যে ওএমআর শিট পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট রায় দিতে গিয়ে বলেছিল, পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া দুর্নীতিতে ভরা এবং অস্বচ্ছ। পুরো প্যানেলই বাতিল করতে হচ্ছে।
বৃহস্পতিবারই কমিশনের দপ্তরে অভিযানের ডাক দিয়েছে শিক্ষক সংগঠন এবিটিএ।
সুপ্রিম কোর্টের এদিনের রায়ের পর প্রশ্ন রয়েছে কার্যত যোগ্য-অযোগ্য কিভাবে বাছাই করবে রাজ্য। কোন শিক্ষকদের স্কুলে আপাতত যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে।
আইনজীবীরা বলেছেন, ছাত্রছাত্রীদের কথা মাথায় রেখে এই শিক্ষকদের আপাতত স্কুলে ফেরার অনুমতি দেওয়া হলেও চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি। কারণ, বাতিল পদে নতুন করে নিয়োগের জন্য ৩১ মে’র মধ্যে বিজ্ঞপ্তি জারি করে হলফনামা দাখিলের নির্দেশও দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
আদালত বলেছে, যাঁদের স্কুলে ফেরার অনুমতি দেওয়া হবে, নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় তাঁদেরও কোনও অতিরিক্ত সুবিধা দেওয়া যাবে না। উল্লেখ্য, একাংশের ক্ষেত্রে ধরা পড়ে গিয়েছিল যে টাকার বিনিময়ে দুর্নীতিচক্রে জড়িয়ে চাকরি হয়েছে। এদের নিয়োগ ‘অস্বচ্ছ’ আগের রায়েই বলেছিল সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু বাকিরা যোগ্য কিনা শীর্ষ আদালতে জানায়নি পরীক্ষা নিয়ামক প্রতিষ্ঠান স্কুল সার্ভিস কমিশন। এই যোগ্যদের চিহ্নিত না করায় পুরো প্যানেল বাতিল করতে হয়েছিল।
২০১৬’র এসএসসি নিয়োগ ঘিরে আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয় তালিকায় নাম না থাকা যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের আবেদনের ভিত্তিতে। দেখা যায় যে ক্রমতালিকায় রদবদল হয়েছে, ফাঁকা ওএমআর শিট দিয়েও তালিকায় নাম উঠেছে। সেই সঙ্গে বিপুল আর্থিক লেনদেনও ধরা পড়ে। স্কুল নিয়োগ দুর্নীতিতে শিক্ষা দপ্তর এবং শিক্ষা প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত একাধিক আধিকারককে জেলে যেতে হয়েছে। প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জি নিজেও জেলে। রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের আসীন হওয়ার পর স্কুল নিয়োগ একদিকে অনিয়মিত হয়েছে। আরেকদিকে সব সরকারি নিয়োগের পরীক্ষায় টাকার বিনিময়ে জালিয়াতির অভিযোগ বারবার ধরা পড়েছে।
School Job Scam
৩১ মে’র মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া, ‘স্বচ্ছ’ শিক্ষকদের আপাতত স্কুলে ফেরার অনুমতি সুপ্রিম কোর্টের

×
Comments :0