MD SALIM MEDINIPUR

তৃণমূল-বিজেপি বিরোধী
ধর্মনিরপেক্ষ সব শক্তিকে
একত্রিত করার আহ্বান সেলিমের

রাজ্য

রাম শংকর চক্রবর্তী ও লক্ষীকান্ত সামন্ত 
 

খাতায়-কলমে বিজেপি রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল। কিন্তু রাস্তায় লড়াইয়ে বামপন্থীরাই রয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে লুটেরা তৃণমূলকে হটাতে হবে। তৃণমূল এবং বিজেপি বিরোধী ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিগুলিকে একজোট করার কাজে জোর দিতে হবে। চলবে আপসহীন লড়াই।
রবিবার পূর্ব মেদিনীপুরে পার্টির দুই সাংগঠনিক সভায় এভাবেই লক্ষ্য বেঁধে দিয়েছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনি বলেছেন, ‘‘তৃণমূল আসলে বিজেপি’র স্থানীয় বরাতপ্রাপ্ত দলের কাজ করছে। সুদূরপ্রসারী লক্ষ্য নিয়ে তৃণমূলকে তৈরি করেছে আরএসএস। লালঝাণ্ডা যতদিন শক্তিশালী ছিল বিজেপি এ রাজ্যে ছড়াতে পারেনি। বিজেপি এবং তার আদর্শগত ভিত্তি সংগঠন আরএসএস’র প্রসার হয়েছে তৃণমূল সরকারের মেয়াদে।’’ 


সেলিম বলেছেন, ‘‘দুই দলের মধ্যে ফারাক নেই এই সত্যটা সাধারণ মানুষ এখন ক্রমশ বুঝতে পারছেন। তাই যেখানেই মানুষ নিজের ভোট নিজে দিতে পারছে সেখানেই তৃণমূল ও বিজেপি পরাজিত হচ্ছে।’’ 
সিপিআই(এম) পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কমিটির আহবানে রবিবার হলদিয়া ও তমলুক মহকুমার এরিয়া কমিটির সদস্য ও শাখা সম্পাদকদের নিয়ে দুটি সাধারণ সভা হয়। বিষয় ছিল "বর্তমান পরিস্থিতি এবং পঞ্চায়েত ও পৌর নির্বাচনে আমাদের কর্তব্য।" 


সিপিআই(এম)’র রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অনাদি সাহু, জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহিও ভাষণ দেন। উপস্থিত ছিলেন পার্টি নেতা হিমাংশু দাস, ইব্রাহিম আলি, সুব্রত পন্ডা, মহাদেব মাইতি, সত্যরঞ্জন দাস, রীতা দত্ত, অমল কুইলা, পরিতোষ পট্টনায়েক, অচিন্ত্য শাসমল, চন্দ্রশেখর পাঁজা, শান্তনু দাস। হলদিয়ার শ্রমিক ভবনে সভা পরিচালনা করেন পরিতোষ পট্টনায়ক এবং তমলুকের কুলবেড়িয়া সুকুমার সেনগুপ্ত ভবনের সভায় সভাপতিত্ব করেন ইব্রাহিম আলি।


মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের লক্ষ্যে ১৯৭৭ সালে বামফ্রন্ট সরকার পঞ্চায়েত ব্যবস্থা তৈরি করেছিল। ভূমিহীন কৃষকদের হাতে জমি দেওয়া হয়েছিল, অবৈতনিক শিক্ষা ও ব্যবস্থা, সরকারি স্বাস্থ্য পরিকাঠামো, নারী শিক্ষার মধ্য দিয়ে সাধারণ গরিব মানুষের প্রকৃত উন্নয়ন ঘটিয়েছিল। এখন তৃণমূলের এগারো বছরে পঞ্চায়েত থেকে রাজ্য স্তর পর্যন্ত লুট চলছে। গরিব বর্গাদারদের জমি কেড়ে নিচ্ছে, আট হাজারেরও বেশি বিদ্যালয় বন্ধ করে দিচ্ছে, বালি, কয়লা, গোরু থেকে চাকরি, গৃহনির্মাণের টাকা, সবকিছু চুরি করছে। পঞ্চায়েতকে লুটমুক্ত করতে মানুষকে সঙ্গে নিয়ে মানুষের পঞ্চায়েত গড়ে তুলতে হবে।’’


সেলিম বলেন, ‘‘লালঝাণ্ডা খতম করতে দক্ষিণপন্থীরা একজোট হয়ে আক্রমণ চালিয়েছিল, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দীগ্রাম তার একটি উদাহরণ। বিজেপি, তৃণমূল, মাওবাদী সহ সমস্ত বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তি একজোট হয়েছিল, ষড়যন্ত্রের ফসল ছিল নন্দীগ্রাম। ২০১১ সালের পর থেকে রাজ্যের সর্বত্র বামপন্থীদের ওপরে সন্ত্রাস চালানো হয়েছে, মুখ বন্ধ করানোর চেষ্টা চলেছে। ২০১৮ সালের পর থেকে বিজেপিকে এ রাজ্যে বিরোধী শক্তি হিসেবে তুলে ধরতে সক্রিয় ছিল মিডিয়ারও একাংশ। যে শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলের হয়ে চুরি আর নারকীয় অত্যাচারে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনিই এখন বিজেপি’তে গিয়ে বড় বড় কথা বলছেন। কিন্তু যত দিন যাচ্ছে অবস্থার পরিবর্তন ঘটছে। এখন তৃণমূল দেখলেই সাধারণ মানুষ চোর দুর্নীতিগ্রস্ত বলছে, আর বিজেপি’কে দোসর বলছে।’’ 

(ছবি: দিলীপ সেন)
 

Comments :0

Login to leave a comment