Netherlands vs USA

শেষ আটে কমলা বাহিনী

খেলা

World Cup 2022

নেদারল্যান্ডস - ৩ (ডিপে - ১০, ব্লিন্ড - ৪৫, ডামফ্রাইস - ৮১) 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র - ১ (রাইট - ৭৬)

বিশ্বকাপের ট্র্যাজিক নায়করা পরের পর্বে, অর্থাৎ কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করলেন। ‘চোকার্স’ তকমা ঘোচাতে বদ্ধপরিকর টোটাল ফুটবলের জনকরা এদিন বুঝিয়ে দিলেন, কেন তাঁদের এই বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম দাবিদার বলা হচ্ছে। তবে শুরুটা মোটেই ভালো করেনি স্নাইডার, নিস্তেলরয়দের দেশ। প্রথম ১০ মিনিটে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একের পর এক আক্রমণ ডাচ ডিফেন্সে কাঁপুনি ধরিয়েছে। ২ মিনিটের মাথাতেই প্রায় গোল করে ফেলেছিল লালাস, টিম হাওয়ার্ডের দেশ। 

 

 

ডানপ্রান্ত থেকে দেস্টের গোলমুখী থ্রো ডাচ ডিফেন্সে প্রতিহত হয়ে ফিরে আসে। ফিরতি বল ডিফলেক্ট হয়ে পুলিসিচের পায়ে পৌঁছায়। গোলরক্ষককে একা পেয়েও জালে বল ঢোকাতে ব্যর্থ হন তিনি। ডাচ দুর্গের শেষ প্রহরী নপার্ট পা দিয়ে তাঁর দুর্বল শট ব্লক করে দেন। ডাচ সমর্থকরা তখন প্রমাদ গুনছেন! প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে উঠে মেমফিস ডিপে, ডেইলি ব্লাইন্ডরা বেশ কয়েকটি সংঘবদ্ধ আক্রমণ গড়ে তোলেন। তারই ফসল, ১৫ মিনিটে ডিপের প্রথম গোল যা টিম ওয়ার্কের একটি অসাধারণ নিদর্শন। নিজেদের মধ্যে দেওয়া নেওয়া করে বল আসে ডামফ্রাইসের কাছে।  রাইট - উইং থেকে তাঁর ঠিকানা লেখা ক্রস ধরে নিখুঁত প্লেসিংয়ে জাল কাঁপান বার্সেলোনার ফরওয়ার্ডটি (১-০)। উল্লেখ্য, চোটের দরুন গ্রুপ পর্বের প্রথম দুটি ম্যাচে ডিপেকে খেলাতে পারেননি লুই ফন গল। বলা ভালো, সেপ্টেম্বরের পর আর কোনও ম্যাচই খেলেননি তিনি। গত ম্যাচে পরিবর্ত হিসাবে নামা তারকা ফরওয়ার্ডের এই ম্যাচে খেলা নিয়ে প্রবল সংশয় ছিল।

 

 ডাচ কোচ ফন গলও সাফ জানিয়ে দেন যে ১০০ শতাংশ ফিট থাকলে তবেই ডিপেকে নামাবেন তিনি। সূত্রের খবর, একরকম প্রায় জেদ করেই এই ম্যাচে নেমেছিলেন ডিপে। তাঁর নাছোড়বান্দা মনোভাবের কাছে নতিস্বীকার করে, শেষ ষোলোর ম্যাচেও ঝুঁকি নিয়ে তাঁকে নামান ফন গল। তার ফলও পেয়েছেন তিনি। ২১ মিনিটে প্রায় ২-০ করে ফেলেছিলেন সেই ডিপেই। ফন ডিকের থেকে বল পেয়ে মার্কিন বক্সের ডানদিক থেকে শট নেন তিনি। তবে এক্ষেত্রে তাঁর শট বাঁ পোস্টের কয়েক ইঞ্চি বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যায়। এরপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রবল ভাবে খেলায় ফিরে আসে। তাঁদের পাসিং ফুটবল ডাচ খেলোয়াড়দের বেদম করে দেয়। ৩৫ মিনিটে সমতা ফেরানোর সুযোগও পেয়েছিল তারা। বাঁ দিক থেকে রবিনসন মাইনাস করেন। কিন্তু ফেরেইরা বল নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হন। 

 

 

এদিন একাধিক পরিকল্পিত আক্রমণ গড়ে তুললেও ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতায় মার্কিনীরা নক-আউট পর্বে মুখ থুবড়ে পড়ল। পক্ষান্তরে, ডাচরা সীমিত সুযোগকেই কাজে লাগিয়েই বাজিমাত করেছে। প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার বাঁশি বাজার মুখে ব্যবধান বাড়ান রুড খুলিত, আর্জেন রবেনদের উত্তরসূরিরা। থ্রো থেকে বল পেয়ে নিজেদের মধ্যে বেশ কয়েকটি পাস খেলেন ডিপেরা। তারপর সেই ডামফ্রাইসের অ্যাসিস্ট্ থেকেই ২-০ করেন আক্রমণে উঠে আসা ব্লিন্ড। দ্বিতীয়ার্ধেও খেলার গতিপ্রকৃতির খুব একটা পরিবর্তন হয়নি। 

 

 

৭৬ মিনিটে পরিবর্ত হিসাবে নামা হাজি রাইট ম্যাচে সমতা ফিরিয়ে এনে ডাচ সমর্থকদের হৃদস্পন্দন বাড়িয়ে দেন। জেডলিনের থ্রু ধরে পুলিসিচ ডানদিক দিয়ে দৌড় শুরু করেন। তাঁর পাস থেকে নপার্টকে টপকে ২ - ১ করে যান রাইট। ৮১ মিনিটে মার্কিন কফিনে শেষ পেরেকটি পোঁতেন ডামফ্রাইস। এদিন গোল করে ও করিয়ে তিনিই ম্যাচের সেরা। ব্লিন্ডের ক্রস ধরে নিখুঁত ভলিতে জাল কাঁপান তিনি (৩ - ১)। অতিরিক্ত ছয় মিনিট পেলেও আর ম্যাচে ফিরে আসতে পারেনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কমলা ব্রিগেড কি পারবে চোকার্স তকমা ঘোচাতে? সেই দিকেই তাকিয়ে ফুটবল দুনিয়া।
 

Comments :0

Login to leave a comment