Minakhshi Raniganj

রাস্তায় থেকেই লড়তে হবে সমাজ বদলের লড়াই: মীনাক্ষী

রাজ্য জেলা

বল্লভপুরে শহিদ সুকুমার ব্যানার্জির স্মরণসভায় বলছেন মীনাক্ষী মুখার্জি। ছবি: মলয়কান্তি মণ্ডল।

সুকুমার ব্যানার্জির কাছে দেশপ্রেম মানে ছিল দেশকে সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ শাসকের হাত থেকে মুক্ত করা ও  দেশের শোষিত,  বঞ্চিত শ্রমজীবী মানুষের মুক্তির স্বপ্ন নিয়ে লড়াই । ১৯৩৮ সালে ব্রিটিশ পরিচালিত পেপার মিলে শ্রমিক আন্দোলনে অংশগ্রহণ করলে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ তাঁর বুকের উপর লরি চালিয়ে তাঁকে হত্যা করে। স্বাধীনতার আন্দোলন, শ্রমিক-কৃষক আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ হয়ে জীবনদানের মহৎ অবদানের সঙ্গে তরুণ সুকুমারের শাহাদাতের ৮৬  বছর পরও আপামর জনতা শহিদ সুকুমার ব্যানার্জিকে স্মরণ করছে। রানিগঞ্জের বেঙ্গল পেপার মিলের শ্রমিক আন্দোলনে শহিদ সুকুমার ব্যানার্জির স্মরণসভায় এ কথা বলেন ডিওয়াইএফআই রাজ্য সম্পাদক ও রাজ্যের গণআন্দোলনের নেত্রী মীনাক্ষী মুখার্জি। 
শুক্রবার সকালে সুকুমার কমরেড ব্যানার্জির আবক্ষ মূর্তিতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা জানান মীনাক্ষী মুখার্জি, গৌরাঙ্গ চ্যাটার্জি, বংশগোপাল চৌধুরী, প্রবীর মণ্ডল, মনোজ দত্ত, রুনু দত্ত, বিনয়েন্দ্রকিশোর চক্রবর্তী, সুপ্রিয় রায় সহ শ্রমিক-কৃষক ও গণ আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ। বিপিমিল মজদুর ইউনিয়ন (সিআইটিইউ) আয়োজিত এই স্মরণসভায় বন্ধ পেপারমিলের শ্রমিক ছাড়াও এলাকার বহু মানুষ হাজির হন।
এদিন মীনাক্ষী মুখার্জি বলেন, পুঁজিবাদ, সাম্রাজ্যবাদ মুনাফা লাভের জন্য খুন, লুট,  ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য কাজ করতে পিছপা হয় না। নয়া শ্রমকোড চালু করে শ্রমিকদের অধিকার লুট করতে চাইছে কেন্দ্রের সরকার। মানুষের আন্দোলন ভাঙার দালালেরা এখন কেন্দ্র ও রাজ্য চালাচ্ছে। শিল্প-কারখানা বন্ধ করে দিচ্ছে। কাজ নেই, রুটিরুজি বিপন্ন। কাজের দাবি নিয়ে রাস্তায় নামলে পুলিশ লেলিয়ে মইদুলদের হত্যা করে। আর জি করের ঘটনার পর স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় দুর্নীতি প্রকাশ্যে এসেছে। শিক্ষার ট্যাব নিয়ে দুর্নীতি হচ্ছে। ২৫ হাজার টাকার সিসি ক্যামেরা ৩ লক্ষ ৫২ হাজার টাকায় কেনা হয়েছে। 
তিনি বলেন, এতদিন জানতাম  সিসি ক্যামেরা চোর ধরতো। এখন ক্যামেরার চোরকে কে ধরবে? রাজ্য ও দেশজুড়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই চলছে। আরজি করের ঘটনার বিচার চেয়ে মহিলারাও পথে নেমেছেন। এই লড়াইয়ে সাধারণ মানুষকে শামিল করতে হবে। তিনি বলেন, সুকুমার ব্যানার্জির মতো শহিদরা আমাদের লড়াইকে প্রাণিত করে। রাস্তায় লড়াই করেই সমাজ বদল করতে হবে। 
এই সভায় সিপিআই(এম) পশ্চিম বর্ধমান জেলা সম্পাদক গৌরাঙ্গ চ্যাটার্জি বলেন, সাম্প্রদায়িক শক্তি আন্দোলনের ইতিহাসকে ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। শাসক শ্রেণির মদতেই বিভাজন, শোষণ জারি রয়েছে। এই ব্যবস্থার বদলের জন্য লড়াই-ই একমাত্র রাস্তা। সিআইটিইউ পশ্চিম বর্ধমান জেলা সম্পাদক বংশগোপাল চৌধুরী বলেন,  পেপার মিল কর্তৃপক্ষ তৃণমূল কংগ্রেসের সাথে আঁতাত করে শ্রমিকদের পিএফের প্রাপ্য দিচ্ছে না। থ্রেট কালচার চলছে। তোলাবাজি করে কারখানাকে বন্ধ করেছে। এ যেন, "অন্ধেরী নগরী, চৌপাট রাজা।" তিনি বলেন, মঙ্গলপুরের জুটমিল খোলার লড়াই  চলছে। মজদুরদের ঐক্য মজবুত করার আহ্বান জানান তিনি। সভায় সভাপতিত্ব করেন রুনু দত্ত।

Comments :0

Login to leave a comment