সরকারের টাকায় প্রথমে কয়লা খনি কিনল আদানি গোষ্ঠী। তারপর সেই খনির কয়লা সরকারি তাপ বিদ্যুৎ প্রকল্পকে বিক্রি করছে তারা। একেই বলে মাছের তেলে মাছ ভাজা। এই নীতি চললে বেকার যুবদের কর্মসংস্থান সম্ভব নয়। দেশে বেকারত্ব বাড়ছে। কেন্দ্রীয় সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল প্রতি বছর ২কোটি বেকারের চাকরি হবে, আর মমতা ব্যানার্জির প্রতিশ্রুতি ছিল, প্রতি বছর ২ লক্ষ চাকরি দেওয়া হবে। দুই সরকার নিজেদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি রাখলে দেশে এবং রাজ্যে বেকারত্ব নির্মূল হয়ে যেত এতদিনে। যুব সমাজের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে।
রবিবার উলুবেড়িয়া পৌরসভা অঞ্চলে সিপিআই(এম) দপ্তর অঞ্জলী ঘোষ ভবনের উদ্বোধনের জন্য সভা হয়। সেই সভায় এমনটাই বললেন রাজ্য বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু।
প্রসঙ্গত, এলাকার মানুষের অর্থ সাহায্যে এই ভবনের সংস্কার হয়। সংস্কারের পরে ভবনটির নতুন করে উদ্বোধন হয় এদিন।
বসু বলেন, যুবদের দুর্দশার জন্য দায়ী দেশের সরকারের নেওয়া একের পর এক জনস্বার্থ বিরোধী নীতি। এখন বিজেপি ধর্মকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। কোনও কারখানার মালিক হিন্দু হলে,হিন্দু শ্রমিকরা কি বেশি মজুরি পায়? কিংবা মুসলমান মালিক কি মুসলমান শ্রমিককে বেশি পারিশ্রমিক দেন? হিন্দুত্বের রাজনীতি হিন্দুদের উপকার করেনা। কেবলমাত্র ফ্যাসিবাদী কায়দায় হিন্দু মুসলিমের মধ্যে বিভেদ বাধায়।
বিমান বসু বলেন, ১৯৯৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে অনেক পরিকল্পনা করেও বামফ্রন্ট সরকারকে উৎখাত করা যায়নি। তারপর আরএসএস’র নাগপুরের হেডকোয়ার্টারে চিন্তন বৈঠক হল। তাতে উঠে এল, বামফ্রন্টকে হারাতে নতুন কৌশল প্রয়োজন। নতুন দল গঠন করতে হবে। সেই পরিকল্পনার ফসল হিসেবে তৃণমূলের জন্ম হয়।
তিনি বলেন, কয়েক দফায় লোকসভা নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উলুবেড়িয়া লোকসভার সমস্ত বুথে মানুষের সঙ্গে নিবিড় জনসংযোগ গড়ে তুলতে হবে। মানুষের কাছে যেতে হবে, কথা বলতে হবে, তাঁদের কথা শুনতে হবে, পরামর্শ নিতে হবে, অর্থ সংগ্রহ করতে হবে। মানুষই আমাদের রসদ জোগান। মানুষের কাছে যেতে হবে। তাঁরা আমাদের জন্য অপেক্ষা করছেন। আমাদের কাজ তাঁদের কাছে পৌঁছনো।
বসু বলেন, কখনও কোনও মানুষের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা যাবে না। কমিউনিস্টরা মানুষকে তাচ্ছিল্য করতে পারেন না। মানুষকে আপন করে নিয়ে দেশে বিজেপি, এবং রাজ্যে তৃণমূলের বিপদ সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। তৃণমূল এবং বিজেপিকে নির্বাচনে পরাস্ত করার লক্ষ্যে আমাদের নির্বাচনী প্রচার অভিযান সংগঠিত করতে হবে। সেই প্রস্তুতি এখন থেকে শুরু করে দিতে হবে।
এদিনের সভায় বিমান বসু ছাড়াও সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শ্রীদীপ বন্দোপাধ্যায় বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, বর্তমান ভারতবর্ষ যে জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে, সেখানে ২০২৪’র লোকসভা নির্বাচন আলাদা। কোনও নির্বাচন এত বৈচিত্র এবং সঙ্কট নিয়ে আসেনি। এটা নজিরবিহীন। এই নির্বাচনে ঠিক হবে আগামী দিনে ভারত কোন পথে চলবে। আদানি, আম্বানিদের স্বার্থে দেশ চলবে, না কৃষক, শ্রমিক, মধ্যবিত্ত সহ সাধারণ মানুষের স্বার্থে দেশ চলবে, সেটা ঠিক হবে এবারের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের উপর ভিত্তি করে।
Comments :0