প্রিতম ঘোষ
অনলাইন গেমের পিছনে ছুটছে টাকা। আয় হয়ত কারও কিছু হচ্ছে। কিন্তু অনেকের পকেট থেকে খরচ হয়েই চলেছে। উদ্বেগের বড় কারণ, এই খেলোয়াড়রা বেশিরভাগই কমবয়সী। গেম নিয়ে, কখনও টাকার জন্য অসামাজিক কাজে পর্যন্ত জড়িয়ে পড়তে দেখা যাচ্ছে কমবয়সীদের। জনপ্রিয় অনলাইন গেমের মধ্যে রয়েছে ফ্রিফায়ার, বিজেএমআই (যা পাবজির ভারতীয় সংস্করণ), কলঅফডিউটি (মোবাইল)। ভারতে ইন্টারনেট সস্তা হওয়ার পর জনপ্রিয় একটি গেম হল ফ্রিফায়ার। এই গেমটি হল ‘পে টু উইন’ গেম। এই ধরনের গেমগুলিতে আপনাকে জেতার জন্য আর্থিক বিনিয়োগ করতে হবে। অর্থাৎ এই গেমে কিছু গান স্কিন এবং প্লেয়েবল ক্যারেকটার কিনতেহবে। এগুলি কিনতে প্রয়োজন ইন গেম কারেন্সি ডায়মন্ড’র। এই ইন গেম কারেন্সি কিনতে গেলে কমপক্ষে ৮০ টাকা খরচা করতে হবে। তবে পাওয়া যাবে ১০০টি ‘ডায়মন্ড’। আপনি যত খরচা করবেন তত বেশি সুবিধা পাবেন। এখানে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন গান স্কিন এবং নতুন নতুন ক্যারেকটার আসতে থাকে। এই সমস্ত আপডেট নিজের আয়ত্বে না আনতে পারলে পিছিয়ে পড়তে হবে। দেখা যায় গেমের জন্য অল্পবয়সীরা হঠকারী সিদ্ধান্ত নেয়। প্রচুর টাকা খরচ করতে থাকে। আরো একটি কারণ হলো যেসব ইউটিউবার এই ধরনের গেম লাইভ স্ট্রিমিং বা ভিডিও কনটেন্ট হিসেবে আপলোড করে, তাদের কেউ কেউ ফ্রি ফায়ারের পার্টনারশিগ প্রোগ্রামের অংশ। ফ্রি ফায়ার এদের মাসিক বেশ কিছু টাকা দেয়। বিনিময়ে ফ্রি ফায়ার খেলার ডিজিটাল সরঞ্জাম কেনার জন্য প্রভাবিত করে দর্শককে। এছাড়াও ডিসকাউন্ট বা ছাড়ের লোভ দেখায়। যেমন, বলা হয় যে ৮০ টাকায় ১০০টির বদলে ডিসকাউন্টে ২০০ বা তারও বেশি ডায়মন্ড পাওয়া যাবে। এই লোভে পড়ে অনেকে টপ আপ করতে শুরু করে। এই ধরনের গেমের অধিকাংশ ভক্ত নাবালক। বাড়ির টাকা খরচ করে থাকে। কেউ কেউ টাকার জন্য অপরাধেও জড়িয়ে পড়ে। প্রায় খবরে শোনা যায় যে এই ধরনের গেমের জন্য এক কিশোর অন্য এক কিশোরকে হত্যা করেছে। বা একজন কিশোরকে ফ্রি টপ আপ করিয়ে দেওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে দূরে ডেকে নিয়ে গিয়ে অপহরণ করা হয়েছে বা তাকে হত্যা করা হয়েছে। কিশোর-কিশোরী তো বটেই, এমনকি বড়দেরও অনলাইন গেমের এই বিপদ সম্পর্কে সচেতন করতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
Comments :0