কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের তরফে সমস্ত কেবল টিভি অপারেটরদের জন্য লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। অভিযোগ, রাজ্যের পোস্ট অফিসগুলি থেকে নতুন লাইসেন্স করা, কিংবা রিনিউ করার কথা থাকলেও সরকারি অব্যাবস্থার শিকার হচ্ছেন কেবল অপারেটররা।
১৯ জানুয়ারির কেন্দ্রীয় নির্দেশে বলা হয়েছে, যাঁদের পোস্ট অ্যান্ড টেলিগ্রাফ লাইসেন্স নেই, তাঁদের সেই লাইসেন্স করিয়ে নিতে হবে। একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নাম নথিভুক্ত করার কথা বলা হয়। গোটা প্রক্রিয়া হওয়ার কথা পোস্ট অফিসের মাধ্যমে। কেন্দ্রীয় ডাক বিভাগের তরফেও পোস্ট অফিসগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়, কেবল অপারেটরদের লাইসেন্স পুনঃনবিকরণ এবং নতুন লাইসেন্স করার ক্ষেত্রে দ্রুত পদক্ষেপ করতে হবে।
কেবল অপারেটরদের অভিযোগ, রাজ্যের একাধিক পোস্ট অফিসে এই লাইসেন্স করার ক্ষেত্রে অসহযোগিতার মুখে পড়ছেন তাঁরা। একাধিক ক্ষেত্রে ঘুষও চাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। সরকারি আদেশ অনুযায়ী, নতুন করে লাইসেন্স পাওয়া কিংবা রিনিউয়ালের জন্য জিএসটি সহ ৫৯০ টাকা লাগার কথা কেবল অপারেটরদের। কোনও বছর লাইসেন্স ফেল হলে হাজার টাকা করে জরিমানা। অভিযোগ উঠছে, একাধিক জায়গায় এর থেকে বেশি টাকা চাওয়া হচ্ছে।
বরানগর অঞ্চলের এক কেবল অপারেটরের অভিযোগ, কাশীনগর পোস্ট অফিসে বলা হয়েছে মার্চ-এপ্রিল মাসে লাইসেন্স রিনিউ করা হবে না। পরে ডাকা হবে। পরবর্তীকালে কেবল অপারেটররা অভিযোগ জানালে পোস্ট অফিসের তরফে বলা হয় তাঁদের কাছে সরকারি নির্দেশ এসে পৌঁছয়নি।
ডায়মন্ড হারবারেও সমস্যার মুখে পড়ছেন কেবল অপারেটররা। এখানে অপারেটরদের থেকে জিএসটি এবং ইনকাম ট্যাক্স ফাইল চাওয়া হয়েছে, যদিও সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী, এইগুলি বাধ্যতামূলক নয়। বারুইপুর পোস্ট অফিস থেকে পাঁচশোর বেশি লাইসেন্স ইস্যু হলেও কেবল অপারেটর নয়, এমন বহু ব্যক্তিও লাইসেন্স পেয়েছেন বলে অভিযোগ।
বিশ্ববাংলা কেবল টিভি অপারেটর্স ইউনিয়নের সভাপতি শঙ্কর মন্ডল বলেছেন, ‘‘কেবল অপারেটরদের আন্দোলনের চাপে পোস্ট মাস্টার বলেছেন, যাঁরা অপারেটর নন, ভুল করে লাইসেন্স দেওয়া হয়ে গিয়েছে, তাঁদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে। গোটা অব্যবস্থায় কেন্দ্র এবং রাজ্যের তরফে কোনও সাহায্য আমরা পাচ্ছি না। কেবল টিভি অপারেটর শিল্পের ভবিষ্যত নিয়ে আমরা আতঙ্কিত।’’
রাজ্যে ৮০ হাজারের কাছে কেবল অপারেটর রয়েছে। সব মিলিয়ে এই পেশার উপর নির্ভরশীল ১০ লক্ষের কাছে মানুষ। শঙ্কর মন্ডলের ক্ষোভ, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ সরকার কেবল ক্ষেত্রে রিলায়েন্স জিও’কে প্রাধান্য দিচ্ছে। জিও ওভারহেডে মোটা তার লাগাচ্ছে। তাতে সাধারণ কেবল অপারেটরদের লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমরা প্রতিবাদ করলে পুলিশ দিয়ে আমাদের উপর অত্যাচার চালানো হচ্ছে। ন্যূনতম সরকারি সাহায্য আমরা পাচ্ছিনা।’’
কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের নির্দেশ ছিল ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে গোটা দেশে নতুন লাইসেন্স দেওয়া ও পুনঃনবিকরণের কাজ শেষ করতে হবে। ২৭ ফেব্রুয়ারি নতুন নির্দেশে বলা হয়, ১৫ মার্চের মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে। কিন্তু বহু পোস্ট অফিসে যথাযত পরিকাঠামো না থাকায় লাইসেন্স যাঁচাই করতে দীর্ঘ সময় লাগছে। তারফলে ১৫ মার্চের সময়সীমা পেরিয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় কেবল অপারেটরদের আবেদন, আরও ৩ মাস সময় দেওয়া হোক, তারমধ্যে গোটা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ফেলা হবে।
কেন্দ্রের তরফে সেই আবেদনে কোনও সাড়া মেলেনি।
Comments :0